Published : 27 Mar 2022, 08:40 PM
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার (IQAir) প্রতি বছরের মতো এবারও ২০২১ সালের বৈশ্বিক বায়ুমান চিত্র প্রকাশ করেছে যেখানে বাংলাদেশকে বায়ুদূষণে বিশ্বে এক নম্বর দেশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। একইসাথে, ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী ঢাকা বিশ্বের রাজধানী শহরগুলোর মধ্যে বায়ুদূষণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে বায়ুদূষণ একটি স্পর্শকাতর বিষয় বিধায় কোন দেশের বৈদেশিক বিনিয়োগসহ নানাবিধ দেশিয়/আন্তর্জাতিক বিষয়ের ওপর এ ধরনের আন্তর্জাতিক প্রকাশনার ভালো একটা প্রভাব রয়েছে । সুতরাং আমরা যারা বায়ুদূষণ নিয়ে কাজ কিংবা গবেষণা করি তাদেরকে দেশের সবার্থে এ ধরনের প্রতিবেদনের কাজ ও তথ্য সঠিকভাবে বিশ্লেষণপূর্বক তার গ্রহণযোগ্যতা অনুযায়ী মতামত প্রকাশ করা উচিত ।
দ্বিমত নেই যে বাংলাদেশ বায়ুদূষণে জর্জরিত এবং রাজধানী ঢাকাসহ এর আশেপাশের শহরগুলো তীব্র বায়ুদূষণে আক্রান্ত। তবে দূষণের এমন তীব্রতা দেশের সর্বত্র একই রকম নয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের পাঁচ বছরের বায়ুমান ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, ঢাকায় পিএম২.৫ এর বাৎসরিক গড় যেখানে ~৮২ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার) সেখানে সিলেট শহরে এই মান ~৫৪ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার)। শহরাঞ্চল অপেক্ষা গ্রামাঞ্চলে এই মান আরো কম হতে পারে। আইকিউএয়ারের ২০২১ সালের রিপোর্টে বাংলাদেশের জনসংখ্যা-ভার পিএম২.৫ এর গড় মানমাত্রা ৭৬.৯ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার) দেখানো হয়েছে। এই মানটি সারা বাংলাদেশের কতগুলো স্থানে বায়ুমান মনিটর করে নির্ধারণ করা হয়েছে তা অবশ্য রিপোর্টে বলা হয় নি। এই প্রতিষ্ঠানের পূর্বের বছরগুলোতে প্রকাশিত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুধু ঢাকায় বায়ুমান মনিটর করে সেটাকেই সারা বাংলাদেশের বায়ুমান হিসেবে দেখানো হয়- যার ফলে বাংলাদেশের জনসংখ্যা-ভার পিএম২.৫ এর গড় মানমাত্রা অনেক বেশি হয়ে থাকে। যেমন, আইকিউএয়ারের ২০২০ সালের রিপোর্টে ঢাকা শহর ও বাংলাদেশ উভয়েরই পিএম২.৫ এর গড় মানমাত্রা ছিল একই, ৭৭.১ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার)। ২০১৯ সালের রিপোর্টেও ঢাকা ও বাংলাদেশের পিএম২.৫ এর গড় মানমাত্রা একই দেখানো হয়েছিল, ৮৩.৩ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার) । কিন্তু, ঢাকার বায়ুমান কোনভাবেই সারা বাংলাদেশের বায়ুমানকে প্রতিফলিত করে না, উপরে প্রদত্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য থেকে যা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান। ২০২১ সালের রিপোর্টে ঢাকার ও বাংলাদেশের পিএম২.৫ এর গড় মানমাত্রা দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ৭৮.১ ও ৭৬.৯ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার); খুব সামান্য মানের ভিন্নতা থেকে বোঝা যায় যে, এ বছর বায়ু মনিটরিং স্থানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে যদিও সেটি খুব-ই কম, যদিও রিপোর্টে মনিটরিং স্থানের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, যা প্রতিবেদনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যদি বাংলাদেশের সকল অঞ্চল এবং গ্রাম-শহরের মিশ্রণে বায়ুমান মনিটরিং করে জনসংখ্যা-ভার গড় মান নির্ণয় করা হতো তবে সেই মান অবশ্যই রিপোর্টে প্রদর্শিত মান থেকে ভিন্ন হতো এবং তেমনটা করা হলে প্রতিবেদনটি গ্রহণযোগ্যতা পেত।
উপরন্তু, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেন্সরভিত্তিক হালকা যন্ত্র দিয়ে বায়ুমান মনিটর করে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ধরনের যন্ত্র দ্বারা থেকে প্রাপ্ত ডেটায় যথেষ্ট অনিশ্চয়তা থাকে; বায়ুমান মনিটরিং এর জন্য ইউএসইপিএ কর্তৃক অনুমোদিত মেথোড অনুসরণ করে না; এবং গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক ভাবে অনুমোদিত নয়। ফলে, এ ধরনের প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিশেষভাবে, রিপোর্টে দেখানো বাংলাদেশের অবস্থান অবশ্যই সঠিক নয় । তবে, যেহেতু তাদের বায়ুমান মনিটরিং ঢাকা কেন্দ্রিক ছিল সেহেতু রিপোর্টে প্রদর্শিত ঢাকার অবস্থান গ্রহণ করা যেতে পারে।
আইকিউএয়ার (IQAir) ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হেলথ ইফেক্ট ইন্সটিটিউট প্রতি দুবছর পর পর 'স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার' রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই রিপোর্টে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্থাপিত বায়ুমান মনিটরিং কেন্দ্র হতে প্রাপ্ত ডেটা ছাড়াও স্যাটেলাইট ডেটা ও কিছু ক্ষেত্রে কেমিক্যাল ট্র্যান্সপোর্ট মডেল ব্যবহার করা ডেটা বিশ্লেষণ করে একটি দেশের বিভিন্ন স্থানের বায়ুমান ডেটা থেকে একটি জনসংখ্যা-ভার গড় মান নির্ণয় করা হয়। এই মেথড প্রয়োগ করে হেলথ ইফেক্ট ইন্সটিটিউট ২০২০ সালে যে রিপোর্ট প্রকাশ করে সেখানে বাংলাদেশ পিএম২.৫ এর জনসংখ্যা-ভার বাৎসরিক গড় মান ৬৩.৪ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার) নিয়ে বিশ্বের দেশ সমূহের মধ্যে দূষণ র্যাংকিংয়ে ৯ম স্থানে অবস্থান করে। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বায়ুমান ডেটা উৎপাদনেও যথেষ্ট অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়; গ্লোবাল কেমিক্যাল ট্রান্সপোর্ট মডেল থেকে যে ডেটা পাওয়া যায় সেটার বিচ্যুতির পরিমাণও যথেষ্ট। এখানে মনে রাখা প্রয়োজন, ভূমিতে স্থাপিত বায়ুমান মনিটরিং যন্ত্রের মাধ্যমে উৎপাদিত বায়ুমান ডেটার কোয়ালিটিও স্থান অনুযায়ী আলাদা হয়– যেমন, ইউরোপের কোন দেশে যন্ত্র যেভাবে চালানো হয়, ডেটা যেভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, দক্ষিণ এশিয়া বা আফ্রিকার কোন দেশে সেরকম কোয়ালিটি মেনে যন্ত্র চালানো বা ডেটা রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না। ভিন্ন ভিন্ন কোয়ালিটির ডেটা ব্যবহার করে দেশ বা শহরগুলোর মধ্যে তুলনামূলক অবস্থান নির্ণয় করা কতটা যৌক্তিক তা বিবেচ্য বিষয় বটে।
তবে, রিপোর্টগুলোর গ্রহণযোগ্যতা আলোচনায় এনে দেশের বায়ুমান চিত্রকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। সমগ্র দেশের বায়ুমান অবস্থা অবশ্যই খারাপ এবং বিশেষ করে, ঢাকা ও এর আশেপাশের শহরগুলোর অবস্থা মারাত্মক রকমের খারাপ। দীর্ঘদিন থেকে এ বিষয়ে বিষদ আলোচনা এবং হৈ-চৈ হলেও বায়ুমান উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ে শক্তিশালী কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তবে আশার কথা, মহামান্য হাইকোর্ট থেকে ৯ দফা নির্দেশনা দেওয়ার পর স্বল্পমেয়াদী কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে – বিশেষ করে অবৈধ ইট-ভাটা চিহ্নিত করে সেগুলো অপসারণের কাজ চলছে এবং সিটি কর্পোরেশন থেকে পানি ছিটানোর গাড়ি সংগ্রহ করে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে, ঢাকার বায়ুদূষণের ব্যাপকতার তুলনায় এই ব্যবস্থা খুব-ই সামান্য । স্বল্পমেয়াদী এসব ব্যবস্থা থেকে আশান্বিত হওয়ার মত সামান্য উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে– চলমান শুষ্ক মৌসুমে (নভেম্বর ২০২১ – মার্চ ২০২২) ঢাকার পিএম২.৫ এর মানমাত্রা (১৪৯.৪ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার)) বিগত শুষ্ক মৌসুম (নভেম্বর ২০২০–মার্চ ২০২১) এর পিএম২.৫ এর তুলনায় ~১০.০% কমেছে। ডিসেম্বর–জানুয়ারি সময়কালে বায়ুদূষণ থাকে সবচেয়ে বেশি। চলতি শুষ্ক মৌসুমের ডিসেম্বর–জানুয়ারি সময়কালে ঢাকায় পিএম২.৫ এর মানমাত্রা (১৫৯.৩ মাইক্রোগ্রাম/(কিউবিক মিটার) পূর্ববর্তী শুষ্ক মৌসুমের ডিসেম্বর–জানুয়ারি সময়ে ঢাকায় পিএম২.৫ এর মানমাত্রার চেয়ে ১৮.৭ শতাংশ কম পাওয়া গেছে। চিত্রে চলমান ও পূর্ববর্তী শুষ্ক মৌসুমে ঢাকার বারিধারায় আমেরিকান দূতাবাস চত্বরে স্থাপিত বায়ু মনিটরিং যন্ত্রের মাধ্যমে উৎপাদিত পিএম২.৫-এর মানমাত্রার তুলনামূলক রেখাচিত্র দেখানো হয়েছে। চিত্রে লাল আনুভুমিক রেখাটি বাংলাদেশ স্ট্যান্টার্ড মান নির্দেশ করছে। চিত্র থেকে দেখা যায়, চলমান শুষ্ক মৌসুমের নভেম্বর মাসে পিএম২.৫ এর মানমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকলেও ডিসেম্বর মাস থেকে এই মানমাত্রা তুলনামূলক কমতে থাকে। মার্চ মাসে আবার কিছুটা উর্দ্ধমুখী হতে দেখা যায়। তবে, চলমান বছরে বায়ুমানের এই উন্নতি উপরোক্ত স্বল্প পরিসরের ব্যবস্থাপনার জন্য নাকি আবহাওয়াজনিত কারণে তা পরবর্তী বছরগুলোর ডেটা বিশ্লেষণ করে বোঝা সম্ভব হবে। আশা করা যায় যে, পরবর্তী বছরগুলোতেও অবৈধ ইট-ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে এবং ঢাকার রাস্তায় নিয়মিত পানি ছিটানো হবে। তবে, পানি ছিটানো থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল পাওয়ার জন্য সঠিক সময় ও স্থানে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে হবে, কারণ ঢাকার বায়ুমান সময় দ্বারা খুব বেশি প্রভাবিত। এক্ষেত্রে, সিটি কর্পোরেশন বায়ুমান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পানি ছিটানোর ব্যবস্থা করতে পারে।
তবে, পানি ছিটানো দীর্ঘমেয়াদে বায়ুদূষণ কমানোর পন্থা হতে পারে না। ঢাকার বায়ুদূষণ অনুমোদিত পর্যায়ে আনতে প্রতিদিন যে পরিমাণ পানি ছিটানোর প্রয়োজন হবে প্রত্যহ সে পরিমাণ পানির ব্যবস্থা করা রীতিমত অসম্ভব। আর শুধু ঢাকা-ই নয়, অন্যান্য শহরের বায়ুমানও উন্নতি করার প্রয়োজন রয়েছে। এ প্রেক্ষিতে, বায়ুমানের উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধনের জন্য নিঃসরণ কমানোতে গুরুত্ব দিতে হবে। এক্ষেত্রে নগর ব্যবস্থাপনা ও উৎস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নিঃসরণ কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ঢাকার রাস্তায় পুরাতন ডিজেল গাড়ির চলাচল বন্ধ করা এবং রাস্তায় গাড়ির বাধাহীন চলাচল নিশ্চিত করতে পারলে বায়ুমানের যুগান্তকারী উন্নতি হতে পারে। রাস্তায় গাড়িগুলো নিয়ম অনুযায়ী চলাচল করছে কি-না তা মনিটর করার জন্য ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রতিটি রাস্তায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা যেতে পারে। রিক্সার সংখ্যা রাস্তার পরিমাণের সাথে আনুপাতিক হওয়া দরকার; সকল ডিজেল গাড়ির পরিবর্তে ইলেক্ট্রিক গাড়ি নামানো যেতে পারে এবং ব্যক্তিগত পরিবহন নিরুৎসাহিত করে পাবলিক ট্রান্সপোর্টকে উৎসাহিত করা যেতে পারে। কিন্তু, এত বেশি মানুষের চাপ এবং সে তুলনায় যানবাহনের অপ্রতুলতা, এবং সর্বোপরি অব্যবস্থাপনার কারণে শিগগিরই এই সেক্টরে বড় পরিবর্তন আশা করা যাচ্ছে না। মানুষের চাপ কমানোর লক্ষ্যে সরকারি সকল হাসপাতাল এবং সকল বিশ্ববিদ্যালয়কে ঢাকার বাইরে, যেমন- সাভারের হেমায়েতপুর ও বাইপাইল, কেরানীগঞ্জের আর্টিবাজার ইত্যাদি স্থানে স্থানান্তর করা যেতে পারে। সংযোগ সড়ক উন্নয়নের মাধ্যমে স্থানগুলোর সাথে ঢাকার সংযোগ উন্নত করা যেতে পারে। দুর্ভাগ্যজনক, ঢাকার ভিতরের সরকারী হাসপাতালগুলোর কলেবর দিন দিন বৃদ্ধি করা হচ্ছে– চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে বাইরে থেকে আসা মানুষের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঢাকার বাইরে বড় শহরগুলোতে উন্নত সকল চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করা প্রয়োজন।
রাস্তার ধারে আবর্জনা পোড়ানোর ঘটনা শুন্যতে নামিয়ে আনতে হবে। এজন্য, ঢাকা ও এর আশেপাশের সিটি কর্পোরেশন/পৌরসভাগুলোর বড় দায়িত্ব রয়েছে; আবর্জনা সংগ্রহ থেকে শুরু করে ডিসপোজাল পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব, আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে। শহরকে ধুলামুক্ত করা কর্পোরেশন/পৌরসভাগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সরকারি-বেসরকারি সকল প্রকার নির্মাণ কাজে নির্দেশিত কোড অনুসরণ করা হচ্ছে কি-না তা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করতে হবে। কর্পোরেশন/পৌরসভাগুলোর ভিতরে ধুলার উৎস (মাঠ, রাস্তা, রাস্তার ধার, ইত্যাদি) চিহ্নিত করে সবুজায়ন ও কংক্রিট ঢালাইয়ের মাধ্যমে ধুলার উৎস বন্ধ করতে হবে। সর্বোপরি, পানি ছিটানো গাড়ির মতো করে ধুলা-চোষণ গাড়ি সংগ্রহ করে প্রতিদিন ঢাকার রাস্তা থেকে ধুলা সরানোর ব্যবস্থা করতে হবে ।
বায়ুদূষণের জন্য ঢাকা তথা বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে কুখ্যাত হয়ে উঠেছে, যার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এক দিনে যেমন এ অবস্থা সৃষ্টি হয়নি, রাতারাতি এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়াও সম্ভব নয়। শিগগিরই একটি বায়ুমান ব্যবস্থাপনাপত্র তৈরি করে তা বাস্তবায়ন শুরু করলে ধীরে ধীরে এ থেকে উন্নতি করা সম্ভব হবে; এ লক্ষ্যে, ৫-৭ বছরের টার্গেট নিয়ে এখনই কাজ শুরু করা দরকার নতুবা দূষণ মাত্রা আরো বৃদ্ধি পেয়ে ঢাকা বসবাসের অযোগ্য শহরে পরিণত হতে পারে। উল্লেখ্য, বায়ুদূষণ সকল শ্রেণি, পেশার মানুষের জন্য সমান ক্ষতিকর এবং এ থেকে নির্দিষ্টভাবে কোন পেশার মানুষের মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এয়ার কন্ডিশন চালানো ঘরেও বাইরে থেকে দূষণ প্রবেশ করে একই মাত্রায় বায়ু দূষিত হতে পারে । সুতরাং, এ থেকে উন্নতির পন্থা নির্ণয় করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।