Published : 18 Sep 2011, 08:45 PM
যখন ছাত্রী ছিলাম, তখন রুদ্ধশ্বাসে যাদের লেখা পড়তাম, অভিভূত হতাম তাদের একজন হুমায়ুন আহমেদ। অনেক কঠিন ভাষার কঠিন লেখার পাশাপাশি কঠিন কথাটি সহজভাবে তুলে ধরার কঠিন কাজটি বড় সহজে করেছেন তিনি।
এটি এক ভিন্ন ধারা যা পাঠককে সহজেই আকর্ষণ করেছে, করছে। কারণ তাদের মনে হয়েছে তাদের কথাই কেউ বলছেন, যা বুঝতে তাদের কষ্ট হচ্ছে না। সাহিত্যকে তিনি সাধারণ মানুষের ভাবনার, বোঝার কাছাকাছি নিয়ে গেছেন।
সমাজের নানা কষ্টের ও নানা অসংগতি দেখে ক্লান্ত হলে হঠাৎই যেন তিনি কলাম লেখক হয়ে উঠতেন। সেখানেও অনেক লেখার ভিড়ে সহজ ভাষার সত্যকথনের ছোট্ট লেখাটি মনে বড় মাপের দাগ কেটে যেত। অনেক বড় সমস্যাকে বোঝাবার জন্য তিনি আশেপাশের ছোট ছোট ঘটনা এবং অভিজ্ঞতার একটা সুন্দর বিশ্লেষণ তুলে ধরতেন যা সে বিষয়ের বিশেষজ্ঞের কঠিন লেখার পাশে খুব সহজেই আমাদের মন ছুঁয়ে যেতো। এই কোমল মনের সংবেদনশীল লেখা পড়ে সমাজের অসংগতিগুলো নিয়ে আমরা বহুবার নতুন করে ভাবতে শিখেছি।
সেই হিসেবে লেখকের পাশাপাশি শিক্ষক হিসেবেও তিনি যেন বারবার হাজির হয়েছেন। তাই এই লেখক এবং শিক্ষকের অসুস্থতার খবর আমাদের উদ্বিগ্ন করে। সমাজকে ভাবায়– এমন অনেক মানুষ পাওয়া যায়। কিন্তু সমাজ নিয়ে ভাবেন এমন মানুষ কদাচিৎ মেলে! তিনি আমাদের সেই বিরলদের একজন।
তাই তার অসুস্থতার খবরে মনে হয় কোন নিকটাত্মীয়ের অসুস্থতার খবর শুনলাম। আমার বিশ্বাস, তিনি চিকিৎসা শেষে আমাদের মাঝে সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন। কলম ধরবেন। অবিরাম লিখবেন। লিখবেন আমাদের জন্য, আমাদের সন্তানদের জন্য। লিখবেন দেশের জন্য স্বাধীনতার কথা। তার নতুন 'হিমু'–র অপেক্ষায় আছি আমরা । তার জন্য আমাদের শুভ কামনা।