বর্তমানে অর্ন্তভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের কথা বলা হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বারবার বলা হচ্ছে নাগরিকতার কথাও। নাগরিকতা বা সিভিক ন্যাশনালিজম বেশ আধুনিক ধারণা– যার ছায়ায় সবার আশ্রয় লাভের সুযোগ রয়েছে।
Published : 11 Sep 2024, 04:37 PM
বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার, ধরন ও প্রকৃতি নিয়ে দেশে-বিদেশে প্রচুর কাজ হয়েছে। এসব কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়াস ছিল বাংলাদেশে ইসলামের স্বরূপ অনুসন্ধান।
যারা অর্থোডক্স মুসলিম, পশ্চিমা দুনিয়ায় একাডেমিক চর্চায় তাদের ক্যাপিটাল লেটার মুসলিম হিসেবে দেখা হয়। এ ঘরনায় বিশ্বাসীরা ইসলামের সর্বজনীন বা ইউনিভার্সেল রূপকে অনিবার্য হিসেবে দেখে থাকেন। দুনিয়াজুড়ে এক অবয়বের ইসলাম দেখতে চান। ইসলাম প্রচারে সাংস্কৃতিক ও লোকজ অভ্যাসগত ও মিথস্ক্রিয়া আলোচ্যসূচিতে রাখতে নারাজ তারা।
কানাডার টমসন রিভার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, যিনি দুদশক ধরে দক্ষিণ এশিয়ায় ইসলাম ধর্ম ও গণতন্ত্র, মুসলিম সমাজ, তাদের সংস্কৃতি ও রাজনীতি এবং মাদ্রাসাশিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করছেন; তার বক্তব্য হলো– “ওয়াহাবি, সালাফি, আহলে হাদিস এ ঘরানার মুসলিমরা মতবাদভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির ধারক। অন্যদিকে দেওবন্দ ঘরানার উৎসজাত হেফাজতে ইসলাম অর্থোডক্স ইসলামের ধারক হলেও এর ভেতর সুফিবাদের কিছুটা মিশ্রণ ঘটেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আশরাফ আলী থানভীর উত্তরসূরি মওলানা মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জী হুজুরের মধ্যেও সুফিবাদের ছাপ পাওয়া যায়।”
আরেকটি ধারা হলো সমন্বয়বাদী ধারা। ‘দ্য ইসলামিক সেক্রেটিসটিক ট্র্যাডিশন ইন বেঙ্গল’ বইয়ে অসীম রায় যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “বাংলার ইসলাম মধ্যপ্রাচ্যের ‘প্রকৃত’ ইসলামের রূপ নয়– যা ঊনিশ শতকের সংস্কারবাদীরা দাবি করেন। বাংলায় বিকশিত ইসলাম মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।”
তিনি বাংলার ইসলামের ট্র্যাডিশনকে “এ গ্রেট ‘ট্র্যাডিশন’ (ইন্টেলেকচুয়াল) অ্যান্ড এ ‘লিটিল’(ফোক) ট্র্যাডিশন (‘a great (intellectual) ‘tradition’ and a ‘little (folk’) tradition’’) হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি এটিকে সমন্বয়বাদী বা সিনক্রেটিস্টিক মডেল বলতে চান। সুফি ধারার সংমিশ্রণে এখানে ইসলামের বিকাশ ঘটেছে অসীম রায় যাকে ফোক ট্র্যাডিশন বলেছেন।
মর্ত্তুজা খালেদ ‘বাঙালি মুসলমান মধ্যবিত্তের রাজনৈতিক চেতনার বিকাশ’ গ্রন্থে বলেন, “এদেশে ইসলাম ধর্মের আগমন ও বিস্তার ঘটে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুফিপন্থি ধর্ম প্রচারকদের মাধ্যমে।” তার ভাষায়, সুফি দরবেশদের খানকাহগুলো ছিল একাধারে শিক্ষাকেন্দ্র, চিকিৎসালয়, সেই সঙ্গে গরিব ও অসহায় মানুষদের আশ্রয়স্থল। সেখানে অভুক্ত মানুষদের খাবার সরবরাহ করা হতো।
এই সুফি ও সাধকরা অধ্যাত্মবাদ ও উদারতাকে আদর্শস্বরূপে তুলে ধরেন…ধর্মের উদার ব্যাখ্যা প্রদান করেন। মর্ত্তুজা খালেদ বলেন, “হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকল মতের মিলনকেন্দ্র ছিল এ খানকাহগুলো।’’
উলামা, মাশায়েক, পীর দরবেশগণ মূলত এদেশে ইসলাম প্রচারের অগ্রনায়ক। ড. আকবর আলী খান ‘বাংলায় ইসলাম প্রচার’ শীর্ষক গ্রন্থে এ মতের সপক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “তলোয়ারের জোরে বা মুসলমান শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় এদেশে ইসলাম প্রচারিত হয়েছে যুক্তি বা তথ্য তার যথার্থতা প্রমাণ করে না।
“পুনশ্চ উলেমা, মাশায়েক, সুফি-সাধক ও পীরদের সহযোগিতায় খুব সহনশীল উপায়ে এখানে ইসলাম প্রচারিত হয়েছে রক্তপাত ছাড়াই। এঁদের সামাজিক অভিযোজন ছিল ভিন্ন উচ্চমাত্রার। তাঁরা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কোনো অভ্যাস বা চর্চাকে প্রত্যাখান করেননি। বরং অনেক বেশি সম্মান করেছেন। রিচার্ড এম ইটোন তাঁর ‘দ্য রাইজ অব ইসলাম অ্যান্ড দ্য বেঙ্গল ফ্রেনটিয়াস’ তা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন।”
আকবর আলী খান তার বইয়ে বলেছেন, “সিলেটে ইসলাম প্রচারে হযরত শাহজালালের (রা.) আদর্শিক ও সহজ-সরল জীবন, বিদ্যমান ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা ও নমনীয়তা ইসলাম প্রচারের কাজ সহজ করেছিল।’’
ঝোপঝাড় পরিষ্কার, রাস্তাঘাট ও স্থাপনা নির্মাণের মধ্যদিয়ে সুফিসাধকরা কমিউনিটি পর্যায়ে একধরনের আলোকায়নের কার্যক্রম শুরু করেন । মোহাম্মদ শেহাবুল হুদার পিএইচডি কর্ম ‘চট্টগ্রামে সুফি সাধক দরগাহ: সুফি সাধনার হাজার বছর’ গ্রন্থে থেকে জানা যায়, সুফি সাধকরা কেবল অধ্যাত্মিক নয়, অনেক বৈষয়িক ছিলেন। তারা তৎকালীন রাজনৈতিক এলিটদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করে খানকাহগুলোর সড়ক যোগাযোগ স্থাপন ও পানির ব্যবস্থা করেন।
ধর্মপ্রচারকদের কী পরিমাণ অভিযোজনমূলক মনোভঙ্গি ছিল তা উঠে এসেছে বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতি (১৯৮৩) কর্তৃক ‘ইসলাম ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামের প্রকাশিত সংকলনে রফিউদ্দিন আহমদের সূচনা বক্তব্যে। তিনি লিখছেন, “অনেক ক্ষেত্রে ধর্মপ্রচারকগণ ইসলাম ধর্মগ্রহণকারীদের পূর্ববর্তী ধর্মের ঐতিহ্যগুলো পরিত্যাগের ব্যাপারে জোরাজুরি করেননি। বরং তা অনুসরণ অনুমোদন করেছে, এমনকি অমুসলিম স্ত্রী রাখার ব্যাপারেও অসম্মতি জানাননি।”
বাঙালি কোনো কিছু অবিকল গ্রহণ করেনি। সবকিছুই গ্রহণ করেছে নিজের মতো করে। বাঙালি গ্রহণোন্মুখ। গ্রহণে দারুণ পারঙ্গম। এ গ্রহণ প্রবণতা তাকে ঋদ্ধ করেছে।
কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় ইসলাম সম্প্রসারণে সংকোচনবাদী ব্যাখ্যার দাপট বাড়ছে। রাষ্ট্র, রাজনীতি ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট মিলিয়ে সমন্বয়বাদী ইসলামের ধারাটি দুর্বল হচ্ছে। এক অবয়বের ইসলামের ধারণাটি প্রধান্য বিস্তার করছে।
কেবল তা চিন্তা-চর্চার জায়গা থেকে করা হচ্ছে তা নয় বরং সমন্বয়বাদী ধারার যে উপলক্ষগুলো রয়েছে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিয়ে অর্থোডক্স ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে চাচ্ছে।
মাজার বাংলাদেশের ইসলামী ধারার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। মিস্টিক বা ভক্তিমূলক ধারার ভিন্ন উচ্চতার স্মারক। মাজার ভাঙার মধ্য দিয়ে বহুবৈচিত্র্যের একটি ধারাকে খারিজ করা হচ্ছে। মাজার ভাঙার ঘটনা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে।
একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজে সব ধর্মের, সব বিশ্বাসের সব মতাদর্শের মানুষের বসবাসের অধিকার রয়েছে। এ অধিকার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদগুলো দ্বারা স্বীকৃত। কোনো বিশ্বাস বা চর্চার কারণে কাউকে হুমকি-ধমকি বা নির্মূল করা যাবে না। এটাই সর্বজনীন মানবাধিকারের শিক্ষা। মানবাধিকার সবার জন্য, সবসময় ও সমানভাবে।
কারো জন্য মানবাধিকার কম বা কারো জন্য বেশি বিষয়টি এমন নয়। বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে মানবাধিকার সঙ্কুচিত করা যাবে না। ব্যক্তির মসজিদের যাওয়ার যেমন অধিকার রয়েছে তেমনি রয়েছে মন্দির, গির্জা, মাজার, দরবার শরিফ বা খানকায় যাওয়ার। এটা ব্যক্তির একান্ত নিজস্ব পছন্দ ও স্বাধীনতা। এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
মানবাধিকারের ধারণায় হিউম্যান এজেন্সি বা কর্তাসত্তার বিষয়টিকে অগ্রগণ্য। এটিই হলো ব্যক্তির স্বয়ংভূ অস্তিত্ব যার সুরক্ষা, উন্নয়ন ও পরিপূর্ণতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। মানবাধিকার প্রশ্নে ব্যক্তির সঙ্গে রাষ্ট্রের সেতুবন্ধনের মূল জায়গা এই হিউম্যান এজেন্সি। একজন ব্যক্তিও যদি একটি বিশ্বাস ও চর্চা নিয়ে বেঁচে থাকতে চান, রাষ্ট্রকে সে অধিকারের নিশ্চিয়তা দিতে হবে।
সংখ্যাগুরু বিশ্বাসের যেমন দাম রয়েছে, সংখ্যালঘিষ্ঠেরও কম নয়। যে কোনো বিশ্বাসের মূল সমস্যা হলো তা সেন্স অব সুপ্রিমেন্সি বা শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব শেখায়। বিশ্বাস অন্য বিশ্বাসকে দুমড়ে-মুচড়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে চায়।
আমেরিকান তাত্ত্বিক আর্জুনা আপদুরায় ‘দ্য ফিয়ার অব স্মল নাম্বার’ গ্রন্থে তা চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, “মানুষ কেবল বড় সংখ্যা নয় ছোট সংখ্যা দেখেও ভয় পায় । কারণ এ ছোট সংখ্যা বড় সংখ্যাকে পূর্ণতা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। তাই ছোট সংখ্যা অনেক সময় বড় সংখ্যাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।”
ছোট মানেই খারাপ নয়, উপক্ষিত নয়। মনে রাখতে হবে, ছোট-বড় বিশ্বাস নিয়ে একটি সমাজ। অন্যের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে কোন সমাজ বেশি দূর এগোতে পারে না। সমাজ মানে কেবল খটমটে কিছু মানুষ, একক দৃষ্টিভঙ্গি বা বিশ্বাস নয়। সমাজ হলো নানামাত্রার মানবীয় সম্পর্ক, শ্রদ্ধা, সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতার দৃঢ় বুনন।
মানুষ সমাজে বাস করে সামাজিক প্রাণী হিসেবে আর প্রাণিকূল অনুসরণ করে সিমবায়োসিস মিথোজীবিতা রিলেশনস। আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট ই পার্ক তার প্রবন্ধ ‘রিফলেকশন অব কমিউনিকেশন অ্যান্ড কালচার’-এ বলেছেন, মানুষ মূলত একই সঙ্গে দুটো পৃথিবীতে বাস করে; একটি হলো বড় পৃথিবী যাকে তিনি বলেছেন কমিউনিয়াল ওয়ার্ল্ড; আরেকটি ছোট পৃথিবী যা হলো ফ্যামিলিয়াল ওয়ার্ল্ড। ছোট পৃথিবী হলো অস্তিত্ব আর ভালোবাসার পরিক্ষেত্র, আর বড় পৃথিবী হলো প্রতিযোগিতা ও জীবন ও জীবিকার পরিক্ষেত্র। এখানে অনেক প্রতিযোগিতা করতে হয়। এ প্রতিযোগিতা চলে মতাদর্শ, বিশ্বাস, অধিপত্য, ক্ষমতা, অর্থ ও নিয়ন্ত্রণকে ঘিরে।
মানুষ যে অন্যের অস্তিত্ব, বিশ্বাস ও চর্চাগুলো গুঁড়িয়ে দিতে চায়, তা চায় মূলত নিজের অস্তিত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য। যা একরৈখিক সমাজ বিনির্মাণের গতি ত্বরান্বিত করে। এ ধরনের সমাজ হয় স্থবির, কাঠামোবদ্ধ ও শ্বাসরুদ্ধ। এ ধরনের বদ্ধ সমাজে কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
স্কেট ই পেইজ ‘দ্য ডিফারেন্স’ গ্রন্থে লিখেছেন, “পার্থক্যের ভেতর থাকে সম্ভাবনা।” তিনি বলছেন, “বৈচিত্র্য মানে চিন্তার পার্থক্য।” বাঙালি মনন বৈচিত্র্যসূচক। এ চিন্তার পার্থক্য নিয়ে বাঙালি রক্তে সংকর, চেতনায় যৌগিক। শতধারা চিন্তা তার রক্তে মিশে আছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যেমনটি বলেছিলেন, “হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড় চীন/শক-হুন-দল পাঠান-মোগল এক দেহে হল লীন।”
বৃহৎবঙ্গ এক ভাবের দেহ। ইসলামের গ্রেট ট্র্যাডিশন ও ফোক ট্র্যাডিশন এখানে এক নয়। মাটিলগ্ন মানুষের সঙ্গে মিশেছে ইসলামের ধারা– যা পরিপুষ্ট হয়েছে সাধারণ মানুষের ইসলামে। এটা এক ঐতিহাসিক বাস্তবতা। সেই বাস্তবতা অস্বীকার করার উপায় নেই। এ নিয়ে সাধারণের মধ্যে বিভক্তিও নেই।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুলী তার ‘বাঙালীর জাতীয়তাবাদ’ গ্রন্থে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি লিখেছেন, “আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িকতা ধর্মীয় কারণে উদ্ভূত বলে মনে হবে, কিন্তু তার উদ্ভবের পেছনে আসল কারণ ধর্ম নয়, কারণ হচ্ছে বস্তুগত স্বার্থ। স্বার্থবাদীরা নিজেদের উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য ধর্মকে ব্যবহার করেছে। সাম্প্রদায়িকতা কৃষকের মধ্যে দেখা দেয়নি, দেখা দিয়েছে শহুরে মধ্যবিত্তের মধ্যে। তারাই একে গ্রাম ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছে।”
আজ রাজনীতি ও ক্ষমতা উপলক্ষ্য হচ্ছে। রাজনীতিতে অর্থোডক্স বা স্ক্রিপ্টেড ইসলামের যে আধিক্য, তাই জটিল পরিস্থিতি তৈরি করছে। তারা বাংলাদেশে ইসলামের সমন্বয়বাদী ধারাটি মানতে চান না। নানা ধরনের প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে এ বিষয়ে স্ক্রিপ্টেড ব্যাখ্যাকে জোরালো করতে চান। এ কারণে পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠছে। কড়া একচেটিয়াত্ব প্রতিষ্ঠার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। সহনশীল অবস্থানের জন্য বাংলাদেশে ইসলামের স্বরূপ অনুসন্ধানে উদার ব্যাখ্যা জরুরি।
যারা কড়া বিশ্বাসের মানুষ, তাদেরও স্মরণে রাখতে হবে, সৃষ্টিকর্তা এক বৈচিত্র্যময় সত্তা। তিনিই সকল বৈচিত্র্যের সৃষ্টিকর্তা এবং রক্ষক।
বর্তমানে অর্ন্তভুক্তিমূলক রাষ্ট্রের কথা বলা হচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর থেকে বারবার বলা হচ্ছে নাগরিকতার কথাও। নাগরিকতা বা সিভিক ন্যাশনালিজম বেশ আধুনিক ধারণা– যার ছায়ায় সবার আশ্রয় লাভের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ হোক এক জনআশ্রয়ী রাষ্ট্র। সব মত, পথ ও ভিন্নতা নিয়ে গড়ে বিনির্মিত হোক বাংলাদেশ।