রেসিপি: গাজরের শরবত আর বিস্কুট

গাজরের শরবত বানানোর পর, ছেঁকে নেওয়া ছোবড়া থেকে তৈরি করা যায় মজার বিস্কুট।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 March 2023, 09:34 AM
Updated : 21 March 2023, 09:34 AM

অবাক হওয়ার কিছু নেই, শৌখিন রন্ধন শিল্পী সায়মা সিদ্দিকার রেসিপিতে তৈরি করতে পারেন এই সবজির বিস্কুট।

গরমের দিনে কিংবা ইফতারের সময় দেহের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পানি পান করা জরুরি। এক্ষেত্রে নানান ধরনের শরবত বানিয়ে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করা হয়। আর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে একদিনের জন্য গাজরকে বেছে নেওয়াই যায়।

তবে বিষয় হচ্ছে গাজরের শরবত স্বচ্ছ তরল করার জন্য ছেঁকে নেওয়া হয়। তারপর অবশিষ্ট ছোবড়া-জাতীয় গাজরটুকু ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো কাজ থাকে না।

এই কারণে গাজরের সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে একটি স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক বিস্কুটের রেসিপি দেওয়া হল।

গাজরের শরবত

উপকরণ: ৪টি মাঝারি আকারের গাজর। খোসা ছাড়ানো এবং টুকরা করে কাটা। আধা ইঞ্চি লম্বা আদার টুকরা, খোসা ছাড়ানো এবং কুচি করে কাটা। অর্ধেক বড় লেবু ৩ টুকরো করা। ৪ কাপ পানি। ২ টেবিল-চামচ মধু।

পদ্ধতি: ব্লেন্ডারে জারে বা মিক্সার গ্রাইন্ডার জারের মধ্যে পানি, গাজরের টুকরা ও আদা কুচি দিয়ে ব্লেন্ড করুন। যখন পানির সাথে সমস্ত উপাদান মিহিভাবে মিশে যাবে তখন সেটাকে ছেঁকে রস এবং ছোবড়া অংশ আলাদা করে নিন।

গাজরের এই অবশিষ্ট অংশটুকু দিয়েই তৈরি করা যাবে বিস্কুট।

এবার রসটাতে লেবু এবং মধু দিয়ে মিশিয়ে ভালো মতো নেড়ে নিন। এরপর গ্লাসে পরিবেশন করুন একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর পানীয়। ইচ্ছা করলে বরফের টুকরা দিয়ে পরিবেশন করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে: বেশ সময় রেখে দিলে অক্সিডেশনের কারণে গাজরের রস ও পুষ্টির মান হারাতে শুরু করবে। তাই এর সমস্ত পুষ্টি উপাদান পেতে বানানোর পরপরই পান করা উচিত।

গাজরের বিস্কুট

উপকরণ: ১২৫ গ্রাম ময়দা। ১২৫ গ্রাম লাল গমের আটা। ২৫ গ্রাম ওটস। ১০ গ্রাম বেইকিং পাউডার। ৩০ গ্রাম বাদামি চিনি। ৫ গ্রাম লবণ। রস চিপে নেওয়া ৪টি গাজরের ছোবড়া। ৮০ গ্রাম লবণ ছাড়া মাখন। ২৪০ গ্রাম ঠাণ্ডা বাটারমিল্ক। ৫০ গ্রাম চেডার পনির।

টপিংয়ের জন্য লাগবে: ২টি ছোট ডিম, ফেটিয়ে নেওয়া। ১০ গ্রাম সূর্যমুখী বা কুমড়ার বীজ।

পদ্ধতি: ওভেন ৩৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১৮০ সেলসিয়াসে প্রিহিট করে নিন।

পার্চমেন্ট কাগজ দিয়ে একটি বড় বেইকিং শিট বিছিয়ে নিন ওভেনের ট্রেতে।

বড় পাত্রে ময়দা, আটা, ওটস, বেইকিং পাউডার, লবণ এবং চিনি ফেটিয়ে নিন।

কাঁটাচামচ বা আঙ্গুল দিয়ে ময়দার মিশ্রণে মাখন মিশিয়ে নিন।

এর সাথে গাজরের ছোবড়া, চেডার পনির দিয়ে ময়দার মিশ্রণে মিশিয়ে নিন। তারপর বাটার মিল্ক দিয়ে খেয়াল করুন ময়দা যেন পুরো মিশ্রণের সাথে ভালোভাবে মিশে যায়।

এই ডোটা বেশ আঠালো ও ঘন হবে।

হালকা ময়দা ছিটিয়ে পিঁড়ির ওপর খানিকটা মিশ্রণ ঢেলে দিন। আলতো করে মেখে হাত দিয়ে এটিকে প্রায় আধা ইঞ্চি পুরু আকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে মিশ্রণের ওপর কিছু ময়দা ছিটিয়ে দিন।

হাত দিয়ে ৬ সে.মি. গোলাকৃতি করে নিতে পারেন। অথবা গোলাকার কুকি কাটার ব্যবহার করতে পারেন।

এক্ষেত্রে কাটারটি মোচড় দেবেন না, সোজা উপরে এবং সোজা নিচের দিকে টানতে হবে। অবশিষ্ট মিশ্রণ পুনরায় আকার দিন এবং কেটে নিন।

বেইকিংশিটে বিস্কুটগুলো এক ইঞ্চি দূরুত্বে সাজিয়ে উপরে ফেটানো ডিম ব্রাশ করে কিছু সূর্যমুখী বা কুমড়ার বীজ ছিটিয়ে দিন।

খাস্তা এবং সোনালি হওয়া পর্যন্ত বেইক করুন। সাধারণত ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগতে পারে। একটু গরম থাকতেই বিস্কুট পরিবেশন করতে পারেন।

মনে রাখতে হবে: যদি মনে হয় একবারে বানালে বেশি হয়ে যাবে তবে ইচ্ছানুযায়ী গাজরের বাড়তি অংশ ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।

উপকারিতা

গাজর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। ত্বক, চুল, যকৃত এবং হৃদ স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এতে ক্যান্সার বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়া গাজর রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে।