এমন তো না যে ত্বকের নাক আছে, আর সেটা নিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস চালাচ্ছে!
Published : 10 Oct 2023, 01:00 PM
বিজ্ঞাপনের ভাষা কিংবা রূপ-বিশেষজ্ঞের পরামর্শে প্রায় সময় ‘ত্বকের নিঃশ্বাস নেওয়া প্রয়োজন’ কথাটা শোনা যায়। এই ত্বকের নিঃশ্বাস নেওয়ার বিষয়টা আসলে কী?
এমন তো না যে, ত্বকের নাক আছে আর সেটা দিয়ে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তাই বিষয়টা বুঝতে হলে আগে ত্বকের গঠন সম্পর্কে জানা থাকা দরকার।
ত্বক তিন স্তরে তৈরি। প্রথম স্তর ‘এপিডার্মিস’ বা উপরের স্তর যা কিনা আমরা চোখে দেখতে পাই। মধ্যম স্তর ‘ডার্মিস’ এবং ভেতরের স্তর ‘হাইপোডার্মিস’।
এই স্তর সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মার্কিন ত্বক বিশেষজ্ঞ কেইট ভিওলা বলন, “এপিডার্মিস’ হল ত্বকের উপরের সুরক্ষার স্তর, যা পরিবেশের দূষণ, জীবাণু, রোগ ইত্যাদি থেকে রক্ষা করে। চামড়ার রং প্রকাশ পায়। পাশাপাশি প্রতি ৩০ দিন পরপর নতুন চামড়ার সৃষ্টি হয়।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ডার্মিস’ হল কোলাজেন এবং ইলাস্টিন- যা আমাদের চামড়া বা ত্বককে স্থীতিস্থাপক রাখতে সাহায্য করে, তেল ও ঘাম নিঃস্বরণ ঘটায়, রয়েছে লোমকূপ ও রক্তনালী।”
আর ‘হাইপোডার্মিস’ পুরোটাই হল চর্বি ও পেশির সমন্বয়ে তৈরি যা আমাদের রক্ষা করে ভেতর থেকে, মুখের আকৃতি দেয় পাশাপাশি দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
তাহলে ত্বক নিঃশ্বাস নেওয় কীভাবে
কৌশলগতভাবে ত্বক পুষ্টি পায় রক্তের মধ্যে থাকা অক্সিজেন থেকে; বাতাস থেকে নয়। তবে ত্বক অক্সিজেন শুষে নিতে পারে।
এই বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়ার সৌন্দর্যবিশারদ ও ‘ই্এম স্কিন’য়ের প্রতিষ্ঠাতা এরিকা মারি গ্যাট বলন, “দুটি অঙ্গ বাতাস থেকে সরাসরি অক্সিজেন গ্রহণ করে- একটি হল ফুসফুস, অন্যটি হল ত্বক।”
তাই ত্বকের নিঃশ্বাস নেওয়া প্রয়োজন বলতে বোঝানো হয়- বাতাস থেকে অক্সিজেন শোষণ করা। একারণে মেইকআপ বা ত্বক পরিচর্যার প্রসাধনী কম ব্যবহার করতে পরামর্শ দেওয়া হয় যাতে ত্বকের ওপর আলাদা স্তর তৈরি না করে।
ত্বকের শ্বাস নেওয়া মানে এই নয় যে, দম ছাড়ছে নিচ্ছে। বরং এর মানে হল বায়ুপরিমণ্ডলের সংস্পর্শে থেকে ত্বক উপকৃত হয়। যে কারণে এমন কোনো প্রসাধনী ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে যাতে লোমকূপ আটকে না যায়।
“কারণ ত্বক পুর্নগঠিত হয় নিজস্ব প্রক্রিয়াতে। তবে আস্তরণ থাকলে এই কাজে বাধা পায় ত্বক”- বলেন নিউ জার্সির নিবন্ধিত ত্বক বিশেষজ্ঞ নানা বোয়াকচে।
যেভাবে বোঝা যায় ত্বক সঠিকভাবে ‘নিঃশ্বাস’ নিচ্ছে না
এর জন্য বিশেষ কিছু করতে হয় না। শুধু আয়নার সামনে দাঁড়ালেই হবে।
ডা. ভিয়োলা বলেন, “সময় হলে ত্বকই জানান দেয়, তার নিঃশ্বাস নেওয়া প্রয়োজন। ব্রণ বা ফুসকুড়ি দেখা দেবে, চেহারা দেখতে মলিন লাগবে, ত্বকে দেখা দিতে পারে শুষ্কভাব ও অস্বস্তি কিংবা হতে পারে অ্যালার্জি।”
তাই ত্বক উপযোগী প্রসাধনী পণ্য ব্যবহার করতে হবে। মাঝে মাঝে পুরো মেইকআপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
গ্যাট পরামর্শ দেন “মাঝে মাঝে মুখের সম্পূর্ণ মেইকআপ করা বাদ দিতে হবে। খেয়াল করে দেখবেন দীর্ঘক্ষণ মেইকআপ অবস্থায় থাকলে ত্বক তৈলাক্ত হয়। যার ফলে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যায়, ‘ব্রেকআউট’য়ের সমস্যা দেখা দেয় বা ত্বকে অসামঞ্জস্যতা ফুটে ওঠে।”
এছাড়া অ্যাসিডস ও রেটিনল- এই ধরনের শক্তিশালী উপাদান সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রেও সাবধান থাকতে হবে। নজর দিতে হবে ত্বক কী চায়, সেটার ওপর।
যদি ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দেয়, আর সে সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে ত্বক-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
আরও পড়ুন