ঘুমের মধ্যে পানি পান হয় না। ফলে সকালে দেখা দিতে পারে পানিশূন্যতা।
Published : 18 Jan 2023, 02:35 PM
ঘুম থেকে উঠেই সকালে পানি পানের রয়েছে নানান উপকারিতা।
পানি দেহের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। তবে দেহ জানান না দিলে পানি পানের কথা অনেক সময় মনেও থাকে না।
শিকাগো’র ‘কেইস ইন্টিগ্রেটিভ হেল্থ’য়ের চিকিৎসক ক্যাসি কেলি বলেন, “মানব শরীরের ৬০ শতাংশ পানি। হাড়ের জোড় পিচ্ছিল রাখতে, দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখা, পুষ্টি উপাদান সারা দেহে বহন করতে, বর্জ্য নিঃসরণ-সহ নানান কাজে পানি দেহে কাজে লাগে।”
রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “এছাড়াও ঘাম, প্রস্রাব এমনকি শ্বাস ত্যাগ করার মাধ্যমে দেহ পানি হারায়।”
একই প্রতিবেদনে ‘ইট টু বিট ডিজিজ: দি নিউ সায়েন্স অফ হাও ইয়োর বডি ক্যান হিল ইটসসেলফ’ বইয়ের মার্কিন লেখক ও চিকিৎসক উইলিয়াম ডব্লিউ. লি বলেন, “ঘুমের মাঝেও এই পানি হারানোর প্রক্রিয়া চলতে থাকে। জেগে থাকলে পানি পান করা যায়। তবে রাতে যেহেতু লম্বা একটা সময় ঘুমের মধ্যে পানি পান করা সম্ভব হচ্ছে না, সে কারণে সকালে ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করলে উপকারিতাই বেশি।”
রাতের পানিশূন্যতা কাটায়: রাতে ঘুমের মধ্যে যেহেতু পানি পান করা হচ্ছে না সেহেতু সকালে তৃষ্ণা লাগা স্বাভাবিক। তাই ঘুম থেকে উঠেই পানি পানে দেহের আর্দ্রতা ফিরে আসে, জানান ডা. কেলি।
তিনি আরও বলেন, “রাতে ঘুমের মধ্যেও পানির চাহিদা তৈরি হয়। বিশেষ করে গরমের সময় ‘হা’ করে ঘুমানোর অর্থ হল দেহে পানির চাহিদা তৈরি হয়েছে।”
শক্তি বাড়ায়: সকালের জড়তা কাটাতে পানি ভালো কাজ করে।
ডা. কেলি বলেন, “অনেকেরই সকালে উঠেও ক্লান্তি, ঝিমঝিমভাব কাজ করে। এর একটা কারণ দেহে পানিশূন্যতা। তাই ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি পান করলে শরীরে শক্তি ফিরতে থাকে দ্রুত।”
মানসিক অবস্থার উন্নতি: একইভাবে দেহের পাশাপাশি মস্তিষ্কও ক্লান্ত হয় পানি অভাবে। এরফলে দেখা দেয় ‘ব্রেইন ফগ’ বা মাথা শূন্য লাগা ও মাথাব্যথা।
ডা. কেলি বলেন, “সকালে এক গ্লাস পানি পান করে দিন শুরু করলে এই ধরনের সমস্যা এড়ানো যায়। এমনকি অল্প পানি শূন্যতাও সাময়িক স্মরণশক্তি লোপ পাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।”
বিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি: দিনের যে কোনো সময়ে পানি পানে দেহের বিপাক প্রকিয়ার উন্নতি হয়।
ডা. লি বলেন, “ঠাণ্ডা পানি শরীরের কার্যক্রমের গতি বাড়ায়। যাকে বলে ‘কোল্ড-অ্যাক্টিভ থার্মোজেনেসিস’। এর মানে হল ঠাণ্ডা পানিকে গরম করার জন্য শরীর বিপাক প্রক্রিয়া শুরু করে।”
হজমে সহায়ক: ডা. কেলি জানান, পানি পানে হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়্। আর্দ্র থাকা মানে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা না থাকা।
তিনি বলেন, “ঠাণ্ডা পানির চাইতে কুসুম গরম পানি খাবার হজমে দ্রুত সহায়তা করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সকালে পানি পান করে দিন শুরু করলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।”
ক্ষুধার্ত ভাব কমায়: সকালে বেশি কিছু খাওয়ার সময় না পেলে বা নাস্তার পরেও খিদা খিদা ভাব থাকলে পানি পান করা উচিত। আর সেটা ঘুম থেকে উঠেই।
এই ব্যাপারি ডা. কেলি বলেন, “আমরা অনেক সময় ক্ষুধা ও তৃষ্ণার পার্থক্য করতে পারি না। খাবার খাওয়ার পরও খিদাভাব দূর করতে পানি পান উপকারী। তাই সকালে পানি পান করে নাস্তা করলে সারাদিন খাই খাইভাব যেমন কমে, তেমনি মুখরোচক খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়।”
আরও পড়ুন:
মানসিক চাপে পানি পান না করার পরিণতি