সারাদিনের পানি একবারে পান করলে কী হবে?

বয়স বাড়ার সঙ্গে পানি পান করা ও দেহের আর্দ্রতার আদর্শ মাত্রা ধরে রাখার গুরুত্ব বাড়ে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Nov 2022, 05:10 AM
Updated : 28 Nov 2022, 05:10 AM

সারাদিনের কাজ শেষ করে সন্ধ্যায় মনে পড়লো আজ ঠিক মতো পানি গলায় দেওয়া হয়নি।

যেই ভাবনা সেই কাজ, বোতল ভরা পানি নিয়ে বসে গেলেন। সাত, আট গ্লাস পানি এখনই পেটে চালান করবেন এই হলো আপনার পন।

তবে ব্যাপারটা ঠিক কতটা স্বাস্থ্যকর? শরীরের ওপর এর প্রভাব কী হবে?

ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের চার্লসটন’য়ের পুষ্টিবিদ লরেন মানাকার এই বিষয়ে বলেন, “২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঠিক কোন সময় পানি পান করা উচিত সেটার উত্তরটা সোজাসাপ্টা নয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে পানি পান করা ও শরীরের আর্দ্রতা আদর্শ মাত্রায় ধরে রাখার গুরুত্ব বাড়ে।”

তবে পানি পানের আদর্শ সময় অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। যেমন- একবারে কতটুকু পানি পান করা যাবে, দিনের কোন সময় সেটা পান করা যাবে, পানির পাশাপাশি অন্যান্য কী ধরনের তরল গ্রহণ করা হচ্ছে ইত্যাদি।

আর্দ্র থাকতে পানি পান করার সেরা রুটিন কী হবে?

লরেন মানাকার বলেন, “অসংখ্য মানুষ ‘ক্রনিক ডিহাইড্রেশন’য়ে ভুগছেন বিশ্বব্যাপি। এই পরিস্থিতিতে আপনি সামান্য পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়বেন। ‘ইউরিনারি ট্যাক্ট ইনফেশন’, বৃক্কের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়বে মারাত্মক হারে। কখন পানি পান করবেন তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার থেকেও জরুরি বিষয় হলো পানি পান করতে হবে, তা দিনের যে সময়েই হোক না কেনো।”

তিনি আরও বলেন, “সবচাইতে ভালো রুটিন হবে সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে পানি পান করা। কারণ শরীর পুরোদিন ধরেই পানি হারায়। তাই ক্রমাগত সেই হারানো পানির ঘাটতি পুষিয়ে নিতে হবে। তবে বাস্তবে তা প্রতিদিন সবসময় মেনে চলা কঠিন।” 

একবারে অনেক পানি পান করা কি ক্ষতিকর?

মানাকার বলেন, “মনের ভুলে, ব্যস্ততার কারণে দিনের অর্ধেকটা সময় পানি পান না করেই পার হয়ে যেতেই পারে। এখন এই সময় একসঙ্গে অনেকটা পানি পান করা ক্ষতিকর কি-না তার উত্তর হ্যাঁ, না দুটোই।”

প্রথমত, শরীরে পানিশুন্যতা হওয়ার থেকে বেশি করে পানি পান করা ভালো। তাই একসঙ্গে অনেকটা পানি গ্রহণ করলে শরীরে পানির চাহিদা মিটবে ঠিক।

তবে বাড়াবাড়ি মাত্রায় পানি পান করার কারণে শরীরে সোডিয়ামের মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা দেখা দেবে। তবে হ্যাঁ, এই পরিস্থিতিটা খুবই দুর্লভ।

পানি পানের অভ্যাসটা মূলত মানুষের জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করবে। একসঙ্গে অনেকটা পানি যদি পান করতেই হয় তবে সকালে একবার, রাতে একবার এমনটা করা যেতে পারে।

তবে একবারে বেশি করে পানি পান না করাই হবে ভালো বুদ্ধি।

পানি ছাড়াও অন্যান্য তরল

শুধু পানি নয়, শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, তরলের প্রাতুল্য ধরে রাখতে আরও অনেক পানীয় আছে। যেমন- চা কফি।

যে পানীয়তে ‘ক্যাফেইন’ আছে তাতে ‘ডাইউরেটিক’ প্রভাবও থাকবে, অর্থাৎ প্রস্রাব বেশি হবে।

মানাকার বলেন, “তবে যতটা তরল গ্রহণ করবেন তার তুলনায় কমই হারাবেন। তাই বলে কোনো পানীয়ই পানির বিকল্প নয়।”

গরমের দিনে শসা, তরমুজও পানির ঘাটতি মেটাতে দারুণ কার্যকর। আবার শীতকালে সুপ গ্রহণ করলেও শরীরের পানির চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে।

তবে মদ্যপান আবার ঠিক উল্টো কাণ্ড ঘটায়; শরীরে আরও পানির ঘাটতি তৈরি করে।

আরও পড়ুন

Also Read: যেভাবে পানি পান করলে উপকার মিলবে বেশি

Also Read: যে সময়ে পানি পান  জরুরি

Also Read: পর্যাপ্ত পানি পান হচ্ছে কি?

Also Read: পানি পানের কথা মনে রাখতে করণীয়