পালংশাকের ছয়টি মনকাড়া স্বাস্থ্যগুণ

দৃষ্টি শক্তির ক্ষয় কমানোর পাশাপাশি মস্তিষ্ক তরুণ রাখতে সহায়তা করে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2024, 09:58 AM
Updated : 17 Jan 2024, 09:58 AM

পাতাবহুল সবজি হিসেবে পালংশাক বেশ সমাদৃত। তাজা বা হিমায়িত, এমনকি স্বাস্থ্যকর স্মুদি তৈরিতেও এই শাক ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সালাদ, পাস্তা, সুপ এবং স্মুদি তৈরিতে পালংশাক ব্যবহার করা যায়। আর সেখান থেকে মিলবে নানান পুষ্টি উপাদান।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ

নিউ ইয়র্ক’য়ের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ মারিসা মেশুলাম রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “পালংশাক বিভিন্ন রকম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যেমন- লুটেইন, বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন সি।”

এগুলো সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য ভালো রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেল থেকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।

ফ্রি রেডিকেলের ফলে দেহের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অক্সিডেটিভ চাপের সৃষ্টি হয়। ফলে দীর্ঘমেয়াদি অসুখ যেমন- ক্যান্সার, হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস হয়ে থাকে।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত কোষের ক্ষয় পূরণে সহায়তা করে।

পটাসিয়াম থাকায় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

মেশুলাম বলেন, “পটাসিয়ামের খুবই ভালো উৎস এই শাক। যা রক্তনালীকে প্রশমিত করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।”

পটাসিয়াম দেহে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। উচ্চমাত্রার সোডিয়াম রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। পালংশাক ফোলেইট ও ম্যাগনেসিয়ামেরও ভালো উৎস। এই দুই পুষ্টি উপাদান দেহে নাইট্রিক অক্সাইড’য়ের উৎপাদন বাড়ায় যা রক্তচাপ কমানোর অণু তৈরিতে সহায়তা করে, জানান এই পুষ্টিবিদ।  

পালংশাক হল মস্তিষ্কের খাবার

মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্যের জন্য পালংশাক সেরা খাবার।

নিউরোলজি জার্নাল’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পালংশাকের মতো সবুজ শাক প্রতিদিন খাওয়ার ফলে বয়সের কারণে হওয়া জ্ঞানীয় দক্ষতার হ্রাস অনেকটাই কমে যায়।

এতে উচ্চমাত্রায় লুটেইন, বিটা ক্যারোটিন, ফোলেইট ও ফিলোকুইনয়ন (ভিটামিন কে’ একটি ধরন) থাকার ফলে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।

রক্তের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে লৌহ যোগায়

পালংশাক লৌহের ভালো উৎস। লৌহ এমন একটি খনিজ যা রক্তের লোহিত কণিকার মূল উপাদান হিমোগ্লোবিন তৈরিতে ভূমিকা রাখে। এই কোষগুলো সারা দেহ ও কোষে অক্সিজেন পরিবহন করে। তাই এগুলো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

দুই ধরনের লৌহ রয়েছে- একটি হল ‘হিম’ যা প্রাণিজ খাবারে পাওয়া যায় এবং অন্যটি হল ‘নন-হিম’ যা উদ্ভিজ্জ খাবার যেমন পালংশাকে পাওয়া যায়।

শরীর হিম এবং নন-হিম কোনো ধরনের লৌহ সরাসরি শোষণ করতে পারে না। তবে ভিটামিন সি যোগ করার মাধ্যমে এই শোষণ বাড়ানো যায়, একই প্রতিবেদনে জানান নিবন্ধিত মার্কিন পুষ্টিবিদ রায়ান গেইগার।

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- লেবুর রস, ব্রকলি, ক্যাপ্সিকাম, সাদা আলু ও টমেটো ইত্যাদির সাথে পালংশাক যুক্ত করে লৌহের শোষণ বাড়ানো যেতে পারে।

অন্ত্র সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে পারে

পালংশাকের আরেকটি উপকারিতা হল এটা আঁশের খুব ভালো উৎস যা অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম সুস্থ রাখে। আর হজম প্রক্রিয়াকে নিয়মিত করতে সহায়তা করে।

“দুই ধরনের আঁশ রয়েছে, যেমন- দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয়” বলেন গেইগার।

পালংশাকে রয়েছে অদ্রবণীয় আঁশ যা সহজে ভাঙে না। এটি মল বৃদ্ধি করে আর অপসারণ সহজ করে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি কমে। 

আর অদ্রবণীয় আঁশ দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

চোখের স্বাস্থের জন্য ভালো

মেশুলাম বলেন, “পালংশাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন যা ভিটামিন এ’য়ের সাথে সম্পর্কিত। দুই পুষ্টি উপাদানই চোখকে সূর্যের হাত থেকে রক্ষা করে এবং অক্সিডেটিভ চাপ কমায়।”

ফলে বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে চোখের রোগ যেমন- ‘ম্যাককুলার ডিজেনারেইশন’ এবং ছানিসহ নানান সমস্যা কমাতে সহায়তা করে।

ছবি: পেক্সেলস ডটকম/ জাকুলিন হয়েল।

আরও পড়ুন

Also Read: গেঁটে-বাত প্রতিকারে মাছের তেল ও পালংশাক

Also Read: পালং পনির

Also Read: প্রদাহ কমাতে চাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর খাবার