পোড়ানো খাবারের স্বাদে মন যে নাচে।
Published : 03 Jun 2015, 03:32 PM
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা বিভিন্ন খাবারের জন্য জনপ্রিয়। মোহাম্মাদপুরের পাশাপাশি মিরপুর এলাকার এসব পোড়ানো খাবার ঢাকাবাসীর রসনা তৃপ্ত করছে বহুদিন ধরেই।
এরমধ্যে জনপ্রিয় কিছু কাবাবঘর নিয়ে এই আয়োজন।
শওকত কাবাব ঘর
মিরপুর ১০ নম্বরের বেনারসি পল্লীতে বহুবছর ধরে কাবাব বিক্রি করছে শওকত কাবাব ঘর। রেস্তোরাঁর মালিক শওকত আলী জানালেন, স্বাধীনের পর থেকেই দোকানটি চালু হয়েছে। ৩০ থেকে ৩৫ জন একসঙ্গে বসতে পারে। দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়ে চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। তবে ভিড়টা সন্ধ্যার পরেই বেশি হয়।
রেস্তোরাঁর খাবারের তালিকা এবং দাম জানালেন ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন। গরুর চাপ, খাসির চাপ, শিক-কাবাব, বটি-কাবাব, খিরি-কাবাব ও গুরদা কাবাবের দাম হাফ ১শ’ টাকা, ফুল ২শ’ টাকা। মুরগির চাপ প্রতি কোয়ার্টার ৯০ টাকা। গিলা-কলিজা হাফ ৯০ টাকা, ফুল ১৮০ টাকা। মগজ প্রতি প্লেট ৩০ টাকা।
টিকিয়া, স্বানী, কাটলেট, কোপতা, কিমা-চপ, ডিম-চপ ১০ টাকা। জালি-কাবাব ২০ টাকা। রোল ২৫ টাকা। এছাড়াও গুলি-কাবাব, পিঁয়াজু আর আলু-চপের দাম ৩ টাকা। লুচি, পরোটার দাম ৬ টাকা। আস্ত দেশি-মুরগির রোস্ট ৬শ’ টাকা। তবে আগেই অর্ডার দিয়ে রাখতে হবে।
আরও আছে ২০ টাকার শাহী-কাবাব, তবে পাওয়া যাবে শুধু রমজান মাসে।
আশরাফ কাবাব ঘর
এরমধ্যে চার ধরনের কাবাব বানাতেই ব্যবহার হয় শিক।
কাবাবের ধরন ও দরদাম সম্পর্কে আশরাফ জানান, গরুর বট প্রতি শিকের দাম ১০ টাকা। গরুর তিল্লি-কাবাব ও খাসির খিরি-কাবাব শিক প্রতি ২০ টাকা। গরুর মাংসের কাবাব শিক প্রতি ৩০ টাকা। গরুর চাপের দাম ৪০ টাকা। পরোটা মিলবে ৫ টাকায়।
মায়ের দোয়া কাবাব ঘর
ঢালের বাজার এলাকার ২০ বছরের পুরানো এই দোকানে পাওয়া যাবে কয়েক ধরনের কাবাব। আরও আছে চাপ, কোয়েল পাখির ডিম ও আলু ভাজা— জানালেন ম্যানেজার মোহাম্মদ খলিল শেখ।
একটি ঠেলাগাড়িতে সাজানো আছে কাঁচা এবং ভাজা অবস্থায় শিকে গাঁধা বিভিন্ন ধরনের কাবাব। বাইরে থেকে দেখে বোঝা না গেলেও দোতলায় বসার জায়গা আছে।
স্থানীয় বাজার থেকেই মাংস কিনে কাবাবগুলো বানানো হয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও খাবার সরবরাহ করা হয়। এর জন্য চার থেকে পাঁচদিন আগেই অর্ডার দিতে হবে।
এখানে গরুর চাপ হাফ ৭০ টাকা, ফুল ১৪০ টাকা। শিক-কাবাব হাফ ৮০ টাকা, ফুল ১৬০ টাকা। কোয়েল পাখি ও মুরগির চাপ হাফ ৮০ টাকা, ফুল ১৬০ টাকা। গরুর মগজ-ভাজি হাফ ৮০ টাকা, ফুল ১৬০ টাকা। বট হাফ ৫০ টাকা, ফুল ১শ’ টাকা। খিরি ও তিল্লি-কাবাব হাফ ৬০ টাকা, ফুল ১শ’ টাকা। কোয়েল পাখির ডিম হাফ প্লেট (১০ পিস) ৫০ টাকা, ফুল (২০ পিস) ১শ’ টাকা। পাও-ভাজি হাফ ৬০, ফুল ১শ’ টাকা। ডিমচপ ২৫ টাকা। আর পরোটা ও টিকিয়া ৫ টাকা।
রাব্বানী হোটেল অ্যান্ড রেষ্টুরেন্ট
মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায় মোট তিনটি শাখা আছে তাদের। এর মধ্যে একটি শাখায় শুধুই মিষ্টি বিক্রি হয়। আর বাকি দুটিতে কাবাবের পাশাপাশি বিক্রি হয় বিরিয়ানি ও তেহারি। সবচেয়ে বড় শাখাটি মিরপুর ১১ নম্বর বাসস্ট্যান্ড থেকে একটু ভেতরের দিকে।
জানা গেল এটিই ছিল প্রথম এবং মূল রাব্বানী হোটেল। এর সামনেই আছে রাব্বানী টি স্টল। আর বাকি দুটি মিরপুর বিহারি ক্যাম্প এলাকার ঢালের বাজারে। কাবাবের মধ্যে এখানে পাওয়া যাবে গরু ও মুরগির চাপ। শিক কাবাব, টিকিয়া, গ্রিল, মাংসের ভুনা ইত্যাদি।
গরুর চাপের দাম ১শ’ টাকা আর মুরগির চাপ ১১০ টাকা। রেস্তোরাঁর আরেকটি আকর্ষণ হল— মোবাইল চা, দাম প্রতি কাপ ৪০ টাকা। সম্পূর্ণ দুধের সর দিয়ে তৈরি করা হয় এই চা।
ঢালের বাজারের বটতলায় ২০ বছর ধরে কাবাব বিক্রি করছেন দোকানের মালিক আবুল হোসেন। এলাকায় নাকি আবুল বট নামেও পরিচিত তিনি, নিজেই এমনটা জানালেন। কাবাব মিলবে তিন ধরনের। মাংস, খিরি এবং বট— সবগুলোই গরুর মাংসের।
দরদাম সম্পর্কে তিনি বলেন, “মাংসের কাবাবের দাম প্রতি শিক ২৫ টাকা। খিরি-কাবাব প্রতি শিক ১০ টাকা আর বট-শিক পাঁচ টাকা।”
এই দোকানের আরেকটি আকর্ষণীয় খাবার হল, টক-ঝাল মসলা দিয়ে ভাজা আলু, দাম ১০ টাকা।
ছবি: সাকিব হোসেন ইবন।