ছাদে বসে মুক্ত হাওয়া পেটপূজা, সঙ্গে বাড়তি পাওনা প্রকৃতিক শোভা।
Published : 18 Dec 2014, 06:17 PM
উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের লেইক ড্রাইভ রোডের ২৫/ই বাড়ির ছয়তলার ছাদে এই রুফ টপ রেস্তোরাঁ।
একশজন একসঙ্গে বসে খাওয়ার ধারণক্ষমতার এই পেটপূজার স্থানের এক পাশে খোলা অংশ আর একপাশে বসা যাবে মাথায় ছাদ নিয়ে। তবে ৭০ জনের বসার ব্যবস্থা বাইরে।
বাইরে আছে ৩টি তাঁবু। আর তাই শীতে বা রোদ বৃষ্টিতেও খুব বেশি ঝক্কি পোহাতে হবে না বলা যায়।
ম্যানেজার মো. মাহাতাব উদ্দিন জানান, লেইকের পাশে বলেই হয়তো বহু মানুষকে টেনে আনে এই রেস্তোরাঁয়।
খাবার সরবরাহকারীরা সম্ভাষণ জানাবে লিফট থেকে বেরোলেই, যদিও লিফট এর ছোটো আকার বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে কারণ এতে তিনজনের বেশি ওঠা প্রায় অসম্ভব!
বেশ সবুজাভ আবহ আছে রেস্তোরাঁ জুড়ে আর সেটা দিন এবং রাতে উপভোগ করা যাবে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে।
তো ভিন্ন লাগলেই বা কী আর এমন এসে গেল! সবুজ তো চোখের খাবার, মনের খাবারের কি অবস্থা!
বাইরের চেয়ার টেবিল বেশ কাসুয়্যাল আর ভেতরের অংশ বেশ খানিকটাই ফিটফাট। গ্লাস, কাঁটা-চামচ আর উচ্চ আলো বাইরের থেকে একেবারেই আলাদা। ‘ঘরে বাইরে’র ঠিক মাঝখানে আছে একটি স্বচ্ছ কাচ, তাও আবার উপর থেকে ঝুলছে সবুজ লতা। রাতেও ভেতরের আলোতে এই সবুজ চোখে শান্তি দেয়।
রিচার্ড পলাশ গোমেজ এখানে আছেন শেফ হিসেবে। গোমেজ জানান চারবছর বাহরাইনে কন্টিনেন্টাল রান্নায় হাত পাকিয়েছেন তিনি।
কাজু বাদামের সালাদ জিভে বেশ লাগবে। পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো, শসা আর সসের রকমারি স্বাদ মুখের কয়েকটি অংশে ধীরে সুড়সুড়ি দিয়ে ভালো এক ধরনের আবেশ এনে দেবে বলা যায়। খেতে চাইলে দিতে হবে ২৯৫ টাকা। পরিমাণও একেবারে মন্দ না।
ওভেন বেইকড পাস্তায় চিজ আর হোয়াইট সসের মিশ্রণ খারাপ লাগান কঠিন। শেফ গোমেজের দাবি ৩৪৫ টাকা দামের এই ডিশ নাকি নারী অতিথিদের কাছে বিশেষ প্রিয়।
গোমেজ বলেন এখানে অনেকেই স্টিমড স্ন্যাপার খেতে পছন্দ করেন। শুধু মাত্র লবণ, মরিচ আর লেবুর রস দিয়ে মাত্র ১৫ মিনিট স্টিম করা হয় এই মাছের পদ। বলে রাখা ভালো এই মরিচ কিন্তু বিলাতি পেপার! বেশি ঝাল আশা না করাই ভালো। বরঞ্চ মাছের খাঁটি স্বাদ গন্ধই পাওয়া যাবে এতে!
গলদা চিংড়ি আর রূপচাঁদা মাছের ডিশও মিলবে এখানে। ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস’ও মিলবে, জানা গেল তৈরি হয় ডরি মাছ দিয়ে।
তবে ল্যাম চপের দাম ৯১৫ টাকা যে কারও কাছেই একটু ‘শক্ত’ ঠেকবে বলা যায়! দামের সঙ্গে ট্যাক্স, ভ্যাট যোগ হবে কিন্তু!
নাগরিক কোলাহলে ক্লান্ত যখন মন তখন এক বা দুই বিন্দু শান্তির পরশের খোঁজ নিতে চাইলে এই জায়গা মন্দ নয়। খুব বেশি খিদে না থাকলেও ক্ষতি নেই, এই শহরে সবুজ আর জলের দৃশ্যও তো একসঙ্গে পাওয়া এত সহজ নয়।
ছবিঃ তানজিল আহমেদ জনি।