পড়ালেখার ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা আর বেড়ানোর এই তো সময়। বয়স বিশের কোঠায় মানে অফুরন্ত প্রাণশক্তি। তবে বেশি বয়সেও যদি ভালো থাকতে চান, তাহলে এখনই কিছু অভ্যেস তৈরি করে ফেলুন।
Published : 27 May 2014, 05:47 PM
বর্তমান সময়ে নানান কারণে শারীরিক কর্মকাণ্ড খুব কম হয়। খেলার মাঠ কমে যাওয়া, হাতের মধ্যে মোবাইল ফোনে বিশ্ব দেখতে দেখতে শরীর হয়ে যায় আলস। তরুণ বয়সের এই আলস্যে কাটান সময় বুড়ো বয়সে কাল হয়ে দাঁড়ায়। তাই এখনই কিছু অভ্যেস গড়ার চেষ্টা করুন।
জার্মানির এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ বছর বয়স থেকে যারা স্বাস্থ্যবান থাকেন তারা জীবনের বড় একটি সময় ভালো স্বাস্থ্য ধরে রাখতে পারেন।
এই বিষয়ে তিনজন বিশেষজ্ঞ— ‘মাইন্ড ইয়োর ওন ফিননেস’ এর লেখক ও ফিজিওলজিস্ট গ্রেগ জাস্টিস, ক্যানসাসের এওয়াইসি’র ব্যয়ামের ফিজিওলজিস্ট এলেন ব্রিডিং এবং ‘এ ওমেন গাইড’ এর লেখক-স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং বিশেষজ্ঞ আইরিন লুইস ম্যাককর্মিকের সঙ্গে কথা বলে ওমেনজহেলথম্যাগ ডটকম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এই প্রতিবেদনে বিশ বছর বয়সে কি ধরনের অভ্যেস গড়লে বেশি বয়সে সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বাড়ে সে বিষয়ে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১. বেশি করে পানি পান করুন
এটি জানার পরও আমরা অনেকেই পরিমাণ মতো পানি পান করি না। ক্লাস, বাড়ি কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, যেখানেই থাকুন না কেনো মাথায় রাখুন পানি পান করার ব্যাপারটি!
২. বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করুন
শুধুমাত্র এক ধরনের ব্যায়াম না করে একটু মিলিয়ে ঝিলিয়ে করুন। প্রতিদিন সকালে শুধু না দৌড়িয়ে এক দুই দিন ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা ইয়োগা অথবা লম্বা সময় ধরে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন। এতে শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যয়ামের প্রভাব ভালোভাবে পড়বে।
৩. ওর্য়ামআপ
ব্যায়াম শুরুর আগে ও শেষে ৫ মিনিট ধরে ওর্য়াম আপ করুন। এতে শরীরের পেশি ‘হালকা’ হয়ে আসবে। ব্যায়াম করার সময় শরীর ‘টাইট’ মনে হবে না।
৪. ব্যায়াম সঠিকভাবে করতে শিখুন
দরকার হলে একজন ব্যায়াম বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিন। এতে উপকার পাবেন। কারণ ছোট একটি ভুলের কারণে যদি কোথাও ক্ষতি হয় তাহলে বহুদিন ধরে মাশুল গুনতে হতে পারে।
৫. এক জোড়ার বেশি ‘রানিং সুজ’ রাখার চেষ্টা করুন
দৌড়বার জন্য ভালো জুতা সবসময়ই দামি। সুইডেনের এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা এক জোড়া রানিং সুজ নিয়মিত ব্যবহার করেন তাদের ছোটখাট ইনজুরি হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। দুই থেকে তিন জোড়া জুতা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করলে ইনজুরির সম্ভবনা কম থাকে।
৬. ব্যায়াম শেষে শরীরকে ‘রিফুয়েল’ করুন
৩০ মিনিটের ব্যয়াম শেষে শরীরকে রিফুয়েল করাটাও জরুরি। কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের সমন্বয়ে খাবারই এই সময়ের জন্য ভালো। এতে শরীরের শক্তি আবার ফিরে পাবেন, ক্লান্ত মনে হবে না।
৭. বিশ্রাম অতি জরুরি
শরীরের জন্য ব্যায়াম যেমন ভালো তেমন বিশ্রামও জরুরী। সপ্তাহের সাত দিনই শারীরিক কসরত করবার প্রয়োজন নেই। এর থেকে একদিন পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন। প্রতিদিন ব্যয়াম হিতে বিপরীত হতে পারে।
৮. শরীরের ভাষা বুঝুন
আপনার শরীরের অবস্থা বুঝে ব্যায়াম করুন। সবসময় শরীরের অবস্থা একরকম থাকেনা। এটা বুঝে আপনাকে খাওয়া-দাওয়া ও ব্যায়ামের বিষয় সমন্বয় করতে হবে।
৯. ইয়োগা করতে পারেন
এ সময়ে শুধু শারীরিক ব্যায়ামই যথেষ্ট নয়। কারণ মানসিক চাপ শহুরে জীবনের অংশই হয়ে গেছে বলা যায়। এছাড়া সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে কম্পিউটারে দীর্ঘক্ষণ বসেও থাকতে হচ্ছে। এ ব্যাপারগুলি থেকে মুক্তির একটি ভালো উপায় হতে পারে ইয়োগা।
১০. আনন্দ করুন
পড়ালেখা, ব্যায়াম, মোবাইল ব্যবহার যাই করুন না কেনো, সবকিছু আনন্দের সঙ্গে করার চেষ্টা করুন। এতে একঘেয়েমি লাগবে না। যে কোনো কাজ যত আনন্দ নিয়ে করতে পারবেন সেই কাজ ততই ভালো হবে। প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে দৌড়াতে চলে যেতে পারেন সকালে। গল্প করতে করতে কখন যে ব্যয়াম হয়ে যাবে গেল টেরই পাবেন না।
১১. বন্ধু বাছাই
আড্ডা দিয়ে অলস সময় পার করার মধ্যে অনেক আনন্দ। তবে আপনার বন্ধুরা যদি সবসময় এটা করেই সময় কাটায় তাহলে সেটা মোটেই ঠিক নয়। তাদের সঙ্গ আপনাকেও করে দিবে অলস। তাই এমন বন্ধু বাছাই করুন যারা সবসময় সক্রিয় থাকে।
ছবি: সাকিব উল ইসলাম