পাকিস্তান হেরে গেলে কার্স্টেনকে দায়ী করবে পিসিবি, মনে করেন রাশিদ লাতিফ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের অন্তত ছয় মাস আগে পিসিবির নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল, বলছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।

গ্যারি কার্স্টেন (বাঁয়ে) ও রাশিদ লাতিফ

গ্যারি কার্স্টেনকে পাকিস্তান দলের প্রধান কোচ হিসেবে নিয়োগের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাশিদ লাতিফ। দেশটির সাবেক এই কিপার-ব্যাটসম্যানের আশঙ্কা, আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তান খারাপ করলে কার্স্টেনের ওপর দায় চাপাতে পারে বোর্ড।

গত জানুয়ারিতে গ্র্যান্ট ব্র্যাডবার্ন সরে দাঁড়ানোর পর থেকে নতুন কোচ খুঁজছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। অবশেষে গত ২৮ এপ্রিল টেস্টের জন্য জেসন গিলেস্পি ও সাদা বলের দুই সংস্করণের জন্য কার্স্টেনকে নিয়োগ দেয় তারা।

দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন কার্স্টেন কোচিংয়েও দারুণ সফল। তার কোচিংয়ে ২০১০ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠে ভারত, জিতে নেয় ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ।

টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য জাতীয় দলের কোচিংয়ে খুব একটা সাফল্য তার নেই। ২০০৯ ও ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন ভারতের কোচ, ২০১২ আসরে দক্ষিণ আফ্রিকার। কোনোবারই তার দল সেমি-ফাইনালে উঠতে পারেনি। তবে ২০২২ সালে আইপিএল অভিষেকেই শিরোপাজয়ী গুজরাট টাইটান্সের ব্যাটিং কোচ ছিলেন তিনি।

কোচ কার্স্টেনের সামর্থ্য নিয়ে কোনো সংশয় নেই রাশিদ লাতিফের। বার্তা সংস্থা আইএএনএস-এর সঙ্গে আলাপে বিশ্ব ক্রিকেটের খ্যাতিমানএই কোচকে পিসিবির নিয়োগ দেওয়ার সময় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

“গ্যারি কার্স্টেন ভারতের এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের সফল একজন কোচ। কিন্তু সময়টা (তার নিয়োগ) ভুল, পাকিস্তানে সবসময় যে সমস্যা দেখা দেয়, তা হলো কোনো কিছুর সময়... আগামী মাসে আমরা বিশ্বকাপে যাচ্ছি। বিশ্বকাপের আগে আমরা সাতটি ম্যাচ খেলব। সময় খুব কম। দল হেরে গেলে কার্স্টেন বা (অধিনায়ক) বাবর আজমকে দায়ী করবে বোর্ড। এটাই আমাদের সংস্কৃতি। আমি বাবর বা কার্স্টেনকে দোষ দেব না।”

গত ছয় মাসে পাকিস্তান ক্রিকেটে নেতৃত্বের পালাবদলও হয়েছে কয়েক দফা। ভারতে অনুষ্ঠিত গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দলের ব্যর্থতার পরই নভেম্বরে সব সংস্করণের অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বাবর আজম। পরে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়া হয় শান মাসুদকে, টি-টোয়েন্টির দায়িত্ব পান শাহিন শাহ আফ্রিদি। ওয়ানডে ম্যাচ তখন ছিল না বলে কাউকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

আফ্রিদির নেতৃত্বে নিউ জিল্যান্ড সফরে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৪-১ ব্যবধানে হারে পাকিস্তান। ওই এক সিরিজেই শেষ হয়ে যায় এই পেসারের নেতৃত্বের অধ্যায়। গত মার্চে সাদা বলের ক্রিকেটের জন্য নেতৃত্বে ফেরানো হয় বাবরকে।

দল গঠন এবং নেতৃত্বে স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে পিসিবিকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ওপর জোর দিতে বললেন সাবেক অধিনায়ক লাতিফ।

“যদি আমি জানি যে, ইনি হলেন আমার প্রধান কোচ, এই আমার অধিনায়ক এবং এটা আমার নির্বাচক কমিটি… যেমনটা অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ডে দেখা যায়, তারা জানে যে, তাদের ১২-১৩ জন নির্দিষ্ট খেলোয়াড় আছে এবং ইনি আমাদের প্রধান কোচ। এসব বিষয় (যেকোনো টুর্নামেন্টের) ৬ থেকে ৮ মাস, এমনকি এক বছর আগে জানা উচিত।”

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে আগামী জুনে হবে ২০ দলের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ৬ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে অভিযান শুরু করবে পাকিস্তান। ‘এ’ গ্রুপে তাদের অন্য তিন প্রতিপক্ষ ভারত, কানাডা ও আয়ারল্যান্ড।

বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চারটি টি-টোয়েন্টি খেলবে পাকিস্তান।