তাই এই রোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ’ বা এইচএফএমডি।
রোগটা কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’য়ের তথ্যানুসারে, ‘এন্টেরোভাইরাস’ পরিবারের সদস্য ভাইরাসের কারণে এই রোগ হয়।
মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তিন থেকে ছয় দিনের মধ্যে রোগের প্রকোপ চোখে পড়ে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে জ্বর, গলা ব্যথা, অরুচি এবং সাধারণ অসুস্থতা।
“এর দুয়েক দিনের মধ্যেই মুখে ও গলায় যন্ত্রণাকর দানা উঠতে দেখা যায়,” প্রিভেনশন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এভাবেই বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিন’য়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম শ্যাফনার।
তিনি আরও বলেন, “এই দানাগুলো ফুসকুড়ির আকার নেয়। আর হাতের উল্টা পিঠ, তালু ও পায়ের পাতা ও পশ্চাতেও দেখা দেয়। তাই এই রোগের নাম ‘হ্যান্ড, ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ।”
তিনি আরও জানান, রোগটা ছোঁয়াচে। ছোটদের মাঝে এই রোগ দেখা যায় বেশি। আর স্কুল ও ডে কেয়ার থেকেই রোগটা ছড়ায়।
সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে এই রোগ এমনিতেই সেরে যায়।
লক্ষণ
সাধারণ কোনো লক্ষণ আগেভাগে দেখা না গেলেও মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে কিছু উপসর্গের কথা।
যেগুলোর মধ্যে রয়েছে- জ্বর। গলা ব্যথা। অসুস্থ বোধ। জিহ্বা, মাড়ি ও গালে দানা ওঠা। তালু, পায়ের পাতায় ফুসকুড়ির মতো দানা ওঠা ও ব্যথা করা। অরুচি।
বড়দেরও কী হয়?
ছোটদের রোগ হলেও বড়দেরও এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।
নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘ইউনিভার্সিটি অ্যাট বাফেলো’র অধ্যাপক ও সংক্রামক রোগ বিভাগের প্রধান ডা. থমাস রুসো বলেন, “প্রাথমিকভাবে এটা শিশুদের রোগ হলেও, বড়দের মধ্যে যাদের আগে এই রোগ হয়নি তারা আক্রান্ত হতে পারেন।”
সাধারণভাবে যারা ছোটদের সান্নিধ্যে থাকেন তাদের মধ্যেই এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
ডা. রুসোর ভাষায়, “হতে পারে তারা স্কুল বা ডে কেয়ারে চাকরি করেন বা এমন প্রতিষ্ঠানে আছেন যেখানে শিশুদের দেখভাল করা হয়। কারণ এই রোগ ছড়ায় মুখের লালা, হাঁচি কাশি ও মলের মাধ্যমে।”
তাই তিনি সঠিক ও ভালোভাবে হাত ধোয়ার পরামর্শ দেন।
চিকিৎসা
ডা. রুসো বলেন, “এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। রোগের লক্ষণ বুঝে সেবা করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে জ্বর কমানো, ফুসকুড়ি ও ব্যথার ওষুধ দেওয়া।”
ডা. শ্যাফনার বলেন, “পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল গ্রহণ করতে হবে।”
সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই এইচএফএমডি সেরে যায়। তবে ১০ দিনের মধ্যে না সারলে আর রোগের মাত্রা বাড়তে থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। আর ছয় মাসের কম শিশুর এই রোগ দেখা দিলে দেরি করা যাবে না। প্রথম থেকেই চিকিৎসের শরণাপন্ন হতে হবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন