ব্যাঙ্গালোরের ‘ফোর্টিস হসপিটাল রিচমন্ড রোড’য়ের নবজাতক ও শিশু-বিষয়ক জ্যেষ্ঠ চিকিৎসক ডা. শালিনি সিকো বলেন, “প্রথম মা হয়ে নবজাতকের যত্ন নেওয়া সহজ বিষয় নয়। এর জন্য প্রয়োজন যথেষ্ট সচেতনতা ও ধৈর্য্য।
ফেমিনা ডটইন’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি বেশ কয়েকটি বিষয় নজর রাখার পরামর্শ দেন।
পোশাক: গরমে শিশুর প্রয়োজন পাতলা ও ঢিলা ঢালা পোশাক। র্যাশ এড়াতে সুতি তন্তু বেছে নেওয়া উপকারী। শিশুকে মশা ও পোকামাকড়ের কামড় থেকে নিরাপদ রাখতে ফুল হাতা পাতলা পোশাক ও প্যান্ট পরানো যেতে পারে।
তবে শিশুকে সরাসরি ফুল হাতা পোশাক না পরিয়ে তাকে মশারির নিচে বা ঘরে মশা ঢুকতে না পারে তেমন ব্যবস্থা বেশি উপকারী।
সহনীয় তাপমাত্রা: গরমে এসিতে শিশুকে রাখা হয় তাহলে তাপমাত্রা যেন ২৬ ডিগ্রি’র মধ্যে রাখতে হবে। আর পাখার বাতাসে সরাসরি রাখা যাবে না। রাখতে হবে একটু দূরে। ঘরে যেন পর্যাপ্ত আলো বাতাস থাকে এবং পোকামাকড় আসতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
আর্দ্রতা: নবজাতকের জন্য আর্দ্রতার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা আবশ্যক। বুকের দুধ শিশুর তৃষ্ণা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। শিশু পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ করছে কি-না, সেটা বুঝতে শিশু কতবার মূত্র ত্যাগ করছে, সেখান থেকে ধারণা পাওয়া যায়। দিনে ছয় থেকে আট বার স্বাভাবিক।
শিশু যদি প্রক্রিয়াজাত দুধ বা পাম্প করা দুধ পান করে তাহলে তা রেফ্রিজারেইটরে সংরক্ষণ করতে হবে কোনোভাবেই তা দীর্ঘসময় (তিন ঘন্টার বেশি) ঘরের সাধারণ তাপমাত্রায় রাখা যাবে না।
ত্বকের যত্ন: প্রতিদিন শিশুকে তেল মালিশ করা উচিত। এতে তার স্নায়ুবিক বিকাশ ঘটে ও ঘুম ভালো হয়। তেল মালিশের পরে শিশুকে কুসুম গরম পানি দিয়ে গা ধুয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোসল বা স্পঞ্জ করানো যেতে পারে।
দেহের ভাঁজ যুক্ত স্থান যেমন- গলা, ঘাড়, বাহুমূল, হাঁটুর নিচের অংশ ইত্যাদি মুছে দিতে হবে। নয়ত ফাঙ্গাসের আক্রমণ ঘটতে পারে।
যতটা সম্ভব শিশুকে ডায়াপার না পরানোই ভালো। এতে গায়ে বাতাস লাগবে ও ঘাম কম হবে।
বাজারে কিনতে পাওয়া যায় এমন ওয়াইপ্স খুব বেশি ব্যবহারে র্যাশ দেখা দিতে পারে। তাই সাধারণ পানি বা পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নেওয়া ভালো।
ট্যালকম পাউডার শিশুর জন্য উপযোগী নয়। মুখের কাছাকাছি ব্যবহার করলে এই পাউডার থেকে শ্বাসযন্ত্রে সমস্যাসহ মুখের ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
সতর্কতা
পানিশূন্যতার কারণে শিশুর গরমকালে জ্বর হতে পারে। তাই ভয় না পেয়ে প্রথমে তাকে আর্দ্র করার চেষ্টা করতে হবে।
তাপমাত্রা কোনোভাবেই না কমলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
শিশুর গায়ের তাপমাত্রা বাড়লে, র্যাশ, জ্বলুনি বা ছয় ঘন্টার বেশি সময় খাবারে অনিহা দেখা দিলে শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন