শিশুর একজিমা প্রতিরোধে ময়েশ্চারাইজার যথেষ্ট নয়

শুষ্ক ত্বকে চর্মরোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকলেও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে একজিমা প্রতিরোধ সম্ভব নয়।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Feb 2020, 10:57 AM
Updated : 23 Feb 2020, 10:57 AM

‘একজিমা’ একটি অতি সাধারণ ত্বকের সমস্যা। যুক্তরাজ্যের এক জরিপে দেখা গেছে প্রতি পাঁচজন নবজাতকের মধ্যে একজন এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়। শিশু জন্ম নেওয়ার পর থেকেই এর সুত্রপাত হয়। আর সাধারণত শুষ্ক ত্বক নিয়ে জন্ম নেওয়াই হল প্রথম ইঙ্গিত যে শিশু পরে ‘একজিমা’য় আক্রান্ত হতে পারে।

এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের বহুল প্রচলিত উপায় হল ‘ময়েশ্চারাইজার’। তবে ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন ত্বকে ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহার করা শিশুর ত্বককে ‘একজিমা’র আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য যথেষ্ট নয়।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ নটিংহাম’য়ের গবেষক হাওয়েল উইলিয়ামস এই বিষয়ে গবেষণা চালান।

তিনি বলেন, “তীব্র ‘একজিমা’র চিকিৎসায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসেছে ব্যাপক উন্নয়ন। তবে ত্বকের এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়া থেকে সুরক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও দূর্বলতা রয়ে গেছে।”

গবেষণার অন্যান্য গবেষকরা জানান, “ধারণা করা হয় ত্বকের সুরক্ষা ব্যবস্থায় সমস্যা থাকার কারণেই হয়ত আক্রমণের সুযোগ পায় ‘একজিমা’। ত্বকের ওপর আবরণ তৈরি করে তার মাঝে তরল আটকে রাখার মাধ্যমে ত্বকের সুরক্ষা কবচ জোরদার করে ‘ময়েশ্চারাইজার’। আর এজন্যই স্বাস্থ্যসেবকরা ‘একজিমা’ থেকে বাঁচতে নিয়মিত ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহারের পরামর্শ দেন।”

হাওয়েল উইলিয়ামস’য়ের এই গবেষণার নাম ছিল ‘ব্যারিয়ার এনহ্যান্সমেন্ট ফল একজিমা প্রিভেনশন (বিইইপি)’। এর মূল উদ্দেশ্য হল ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহারের এই পরামর্শ আসলে কতটুকু কার্যকর,  সেটাই যাচাই করা।

এই গবেষণায় মোট ১৩৯৪ জন নবজাতককে পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকরা। যাদের সবার পরিবারে ‘একজিমা’, হাঁপানি, ‘হেফিভার’ ইত্যাদি রোগ বিদ্যমান। নবজাতকদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একদল শিশুকে এক বছর পর্যন্ত প্রতিদিন ‘ময়েশ্চারাইজার’ মাখানো হয়। আর অপরদলকে ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহার করতে বারণ করা হয়। তবে সবার পরিবারকেই সাধারণ ত্বকের যত্নের ব্যাপারে পরামর্শ দেন গবেষকরা।

গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয় ‘দ্য ল্যান্সেট’ শীর্ষক জার্নালে।

এতে বলা হয়, ‘নিয়মিত ‘ময়েশ্চারাইজার’ ব্যবহারের মাধ্যমে ‘একজিমা’ প্রতিরোধের কোনো প্রমাণ মেলেনি এই এক বছরে। বরং ত্বকের বিভিন্ন প্রদাহের আশঙ্কা সামান্য পরিমাণ বাড়তে দেখা যায়। প্রতিদিন ‘ময়েশ্চারাইজার’য়ের ব্যবহার খাবারে অ্যালার্জি দেখা দেওয়ার আশঙ্কা বাড়িয়েছে।’

উইলিয়ামস বলেন, “যেসকল ভুক্তভোগী তাদের সন্তানদের সুরক্ষার জন্য ‘ময়েশ্চারাইজার’ বেছে নিয়েছেন তাদের জন্য এই ফলাফল অত্যন্ত আতঙ্ক ও হতাশাজনক। তবে এই পরামর্শের ক্ষতিকর দিক আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি, এখন খুঁজে বের করতে হবে নিরাপদ বিকল্প উপায়। তবে ‘ময়েশ্চারাইজার’ একজিমা প্রতিরোধ করতে না পারলেও যারা ইতোমধ্যেই এই সমস্যায় আক্রান্ত তাদের জন্য কিন্তু ‘ময়েশ্চারাইজার’ অত্যন্ত উপকারী। আর এর যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক প্রমাণ রয়েছে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন