আঁচিল দূর করার উপায়

হাতের কাছে থাকা উপাদান দিয়েই দূর করা যায় আঁচিল।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 May 2022, 06:13 AM
Updated : 2 May 2022, 06:13 AM

আঁচিল কোনো ক্ষতি করে না, তবে তা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু। শরীরের এমন কোথাও যদি আঁচিল হয় যা সবসময় মানুষ দেখতে পায় তবে তা খুবই বিব্রতকর।

আর কিছু আঁচিল প্রচণ্ড ব্যথা করে এবং পুরোপুরি ভালো হতে চায় না।

তবে বিষয় হল ঘরোয়া চিকিৎসাতেই এই সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব। 

আঁচিল সম্পর্কে যা জানা উচিত

‘ইউএসএ আরএক্স’য়ের ডা. নাহিদ এ. আলি ‘ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান, আঁচিলের সংক্রমণ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বেশি। তোয়ালে, গামছা, রেজার থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এর জীবাণু।

ত্বকে বিভিন্ন ধরনের গোটা হিসেবে দেখা দেয় ‘আঁচিল’। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি বড় কোনো বিপদ বয়ে আনে না।

‘হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)’ কোনো ক্ষতস্থানে প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করলে সেখানে ‘আঁচিল’ দেখা দেয়। শিশুদের এটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হলে বড়দেরও এটি হতে পারে।

ঘরোয়া পদ্ধতি তা সারিয়ে তোলা গেলেও সময় লাগে অনেক, তাই ধৈর্য্য রাখতে হবে।

ঢিলেঢালা পোশাক পরা আর শরীর শুষ্ক রাখলে আঁচিল হওয়া আশঙ্কা কম থাকে।

শুকনা মরিচের সস: ডা. আলি বলেন, “শুকনা মরিচ ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে বহু বছর ধরে। আর আঁচিল দূর করতে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত।”

পানির সঙ্গে শুকনা মরিচ বাটা মিশিয়ে ‘পেস্ট’ তৈরি করতে হবে। এটি আঁচিলের ওপর দিনে দুই বেলা প্রয়োগ করতে হবে দুই সপ্তাহ ধরে। এতে আঁচিল রং বদলাবে এবং ছোট হতে থাকবে।

ডিম: দাঁত ব্রাশে ডিমের সাদা অংশ ও কুসুম মাখিয়ে আলতোভাবে আঁচিলের ওপর ঘষতে হবে। তবে এটা দিনে দুবার করে দুই সপ্তাহ চালিয়ে যেতে হবে।

ডিম আঁচিলের ওপর একটা সুরক্ষাকবচ তৈরি করবে। দুই সপ্তাহ সেখানে সাবান লাগানো যাবে না। দুই সপ্তাহ পর সাবান দিয়ে আঁচিলের অংশটি ভালোভাবে ধুতে হবে।

পেঁয়াজ: এটা একটি প্রাকৃতিক ‘অ্যান্টিসেপ্টিক’ যা ত্বকে মাখলে ব্যাক্টেরিয়া ধ্বংস হয় এবং প্রদাহ কমে।

আঁচিলের ওপর পেঁয়াজ মাখিয়ে তা ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। দিনে দুবার পেঁয়াজ ও ব্যান্ডেজ বদলে নিতে হবে। এভাবে চলবে দুই সপ্তাহ।

ভালো না হলে আরও দুই সপ্তাহ চালানো যেতে পারে।

গরম পানি: একটি পাত্রে পানি ফুটতে দিন। ফুটন্ত পানিতে আঁচিলের অংশটুকু ততক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন যতক্ষণ ব্যথা না করে। সঙ্গে সঙ্গেই গরম পানি থেকে তুলে আঁচিলের ওপর ঠাণ্ডা কিছু প্রয়োগ করুন। দিনে তিনবার করে এই পদ্ধতি চলবে দুই সপ্তাহ। 

বেইকিং সোডা: এক কাপ পানিতে আধা চা-চামচ বেইকিং সোডা মেশাতে হবে। তুলার বল এই মিশ্রণে ডুবিয়ে তা আঁচিলের ওপর বসিয়ে দিতে হবে। ১৫ মিনিট রাখতে হবে।

তুলার বলের বদলে গজ, টিস্যু ইত্যাদিও ব্যবহার করা যায়। চলবে দিন দুবার করে দুই সপ্তাহ।

ক্রায়োথেরাপি ফ্রিজিং: ওয়াশিংটনের ‘ইনভিগোর মেডিকাল’য়ের ডা. লিয়্যান পোস্টন বলেন, “আঁচিল দূর করার আদর্শ ডাক্তারি পদ্ধতি হল ‘ক্রায়োথেরাপি ফ্রিজিং’। এতে আঁচিলের ওপর ‘লিকুইড নাইট্রোজেন’ প্রয়োগ করে হিমায়িত করা হয়। আঁচিলের ত্বকের ভেতরের দিকে অনেক গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এজন্য এই পদ্ধতি ঘন ঘন অনুসরণ করতে হয়। এক সময় ত্বকে ‘ব্লিস্টার’ তৈরি হবে এবং আঁচিলের মরা কোষ ঝরে পড়বে।”

ডাক্ট টেপ: ডা. পোস্টন বলেন, “শিশুদের ক্ষেত্রে ‘ক্রায়োথেরাপি’ ভালোভাবে কাজ করে না। আর একবার এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার পর দ্বিতীয়বার শিশুরা তা করাতে চায় না। সেক্ষেত্রে কাজে আসবে ডাক্ট টেপ।”

আঁচিলের ওপর ডাক্ট টেপ লাগিয়ে রাখতে হবে তিন থেকে পাঁচ দিন এক টানা। ফলে টেপের নিচের ত্বক নরম ও কুঁচকে যাবে। তখন ‘এমেরি বোর্ড’ অথবা ‘পুমাইস স্টোন’ দিয়ে আঁচিল কেটে ফেলা হয়।

পরে আবার সেখানে ডাক্ট টেপ লাগাতে হবে যতদিন না আঁচিল পুরোপুরি সেরে যাচ্ছে। এই পদ্ধতি দীর্ঘ, তবে ব্যাথামুক্ত।

আরও পড়ুন