খাদ্যাভ্যাস হতে পারে পেশিক্ষয়ের কারণ

গবেষণায় দেখা গেছে, সুষ্ঠু খাদ্যাভ্যাস বয়সের ছাপ ধীর করতে ভূমিকা রাখে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2021, 12:00 PM
Updated : 14 Dec 2021, 12:00 PM

‘সায়েন্টিফিক রিপোর্ট’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, নিয়মিতভাবে পুষ্টির চাহিদা এড়িয়ে যাওয়া শুধুমাত্র হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক এবং অন্ত্রের মতো অসংখ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংসই করে না বরং বয়স বাড়ার সঙ্গে পেশি ক্ষয় হতেও অবদান রাখে।

বয়সের সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবেই পেশির ঘনত্ব কমে। আর পুষ্টির ঘাটতি এর মাত্রা বাড়ায় ও নানান স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করে।

সিঙ্গাপুরে ৬৫ বছর বয়সের বেশি ১,২১১ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর করা গবেষণার বরাত দিয়ে ‘ইট দিস নট দ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পেশির ভর কমাতে অবদান রাখে এমন বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে, আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অন্তর্নিহিত দীর্ঘস্থায়ী রোগ এবং অপর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি জেনারেল হসপিটাল, ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুলের গবেষকদের করা এই পর্যবেক্ষণের ফলাফলে বলা হয়, এটা অনেকটা ‘বার্ধক্যজনিত অ্যানোরেক্সিয়া’ বা ক্ষুধা হ্রাস যা খাদ্য গ্রহণ হ্রাস করার অংশ বিশেষ। এমনটা ঘটলে, বয়স্ক লোকেরা তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি নাও পেতে পারে। এর ফলে দ্রুত পেশির ভর কমতে থাকে।

নিয়মিত শরীরচর্চা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া পেশির ঘনত্ব বজায় রাখে ও কার্যদক্ষতা বাড়ায়।

‘জার্নাল অফ বোন অ্যান্ড মিনারেল রিসার্চ’য়ের একটি গবেষণা অনুসারে, পেশির ভর হ্রাস দ্রুত মৃত্যুর সঙ্গে সম্পর্কিত।

ব্রাজিলের ‘ইউনিভার্সিটি ডি সাও পাওলো’র গবেষকরা চার বছর ধরে ৬৫ বছর বয়সি ৮৩৯ জন নারীর ওপর পর্যবেক্ষণ চালায়। সময়ের সঙ্গে তাদের হাড়ের ঘনত্ব রেকর্ড করা হয়।

তাদের ‘অ্যাপেন্ডিকুলার মাসেল ম্যাস’ পর্যবেক্ষণ করা হয়। যার অর্থ বাহু, পা এমনকি ত্বকের নিচের চর্বিও পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয়।

ফলাফলে দেখা গেছে, কম ‘অ্যাপেন্ডিকুলার’ ভরযুক্ত মহিলাদের বাহু ও পায়ের পেশির ভরের তুলনায় তাড়াতাড়ি মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৬৩ গুণ বেশি।

কম অ্যাপেন্ডিকুলার ভরযুক্ত পুরুষদের প্রাথমিক মৃত্যুর ঝুঁকি ১১ গুণ বেশি ছিল।

নিতম্ব ও কাঁধের সুস্থতা ওপর পেশির ভর ইতিবাচক ভূমিকা রাখে বলে জানিয়েছেন, ব্রাজিলের সাও পাওলো মেডিকেল স্কুলের প্রধান গবেষক রোজা মারিয়া রড্রিক্স পেরেইরা।

স্থিতিশীলতা হারালে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ে এবং হাঁড়ের খনিজের কম ঘনত্ব হাঁড়ে ফাটাভাবের সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, “ব্যায়াম করা, ধূমপান না করা এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মতো জীবনযাত্রার অভ্যাসের মাধ্যমেও এর পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। এই পরামর্শটি শুধুমাত্র মধ্যবয়স্ক বা তার বেশি বয়সিদের জন্য নয়, যত তাড়াতাড়ি তা শুরু করা হবে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তত বেশি পেশির ভর সংরক্ষণ করতে ক্ষম হবে।”

আরও পড়ুন