পারিবারিক টানাপোড়েন থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি

বাবা-মা, ভাই-বোনদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ থাকলে স্বাস্থ্যও খারাপ হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 10:31 AM
Updated : 11 Nov 2019, 10:31 AM

আর এই তথ্য মিলেছে ‘ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাক্স’য়ের একটি গবেষণায়।

গবেষণার প্রধান লেখক, ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসের সহকারী অধ্যাপক সারাহ বি. উডস বলেন, “পারিবারিক মহলের পরিবেশ পরিবারের সবার স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। পাশাপাশি মধ্যবয়সের বিশ বছরের পরিক্রমায় স্ট্রোক মাথাব্যথা ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যা ভালোর দিকে যাবে নাকি আরও গুরুতর হবে সেটাও প্রভাবিত হয়। পুরানো গবেষণায় বলা হয়েছিল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। তবে আমাদের গবেষণায় তেমনটা দেখা যায়নি।”

‘জার্নাল অফ ফ্যামিলি সাইকোলজি’তে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়।

‘মিউলাইফ ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের করা জরিপের অন্তর্ভুক্ত ২,৮০২ জন মানুষের তথ্যাদি পর্যালোচনা করা হয় এই গবেষণায়, যা ১৯৯৫ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের নমুনা।

মোট তিন সময়কালের তথ্য নেন গবেষকরা। ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৬। ২০০৪ থেকে ২০০৬। এবং ২০১৩ থেকে ২০১৪।

প্রথমবার তথ্য সংগ্রহের সময় অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ৪৫ বছর। পারিবারিক টানাপোড়ন ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পারিক সহোযোগিতামূলক সম্পর্ক এবং জীবনসঙ্গীর সঙ্গে আন্তরঙ্গ সম্পর্ক ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের নানান প্রশ্ন করা হয় গবেষণার অংশ হিসেবে।

স্ট্রোক, মাথাব্যথা, পেটের গোলমাল ইত্যাদি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা কার কতটুকু আছে তা পরিমাপের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের স্বাস্থ্যের অবস্থা নির্ধারণ করা হয়। প্রতিবার তথ্য সংগ্রহের আগে পূর্ববর্তী ১২ মাসের মধ্যে এই সমস্যাগুলোতে কারা ভুগেছেন তা জেনে নেন গবেষকরা।

দেখা গেছে পারিবারিক সম্পর্কের টানাপোড়ন যাদের বেশি, দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত হওয়ার মাত্রাও তাদের বেশি। এমনকি ১০ বছর পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার তথ্য সংগ্রহের সময় দেখা যায় তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে।

গবেষণার সহকারী লেখক, ‘ইউনিভার্সিটি অফ আইওয়া’র সহকারী অধ্যাপক জেকব বি. প্রিস্ট বলেন, “আমরা দেখেছি, দ্বিতীয়বার তথ্য সংগ্রহের সময়, ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে যারা পরিবারের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন, ১০ বছর পরে তাদের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো হতে দেখা গেছে। তবে স্বামী কিংবা স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটানোর সঙ্গে স্বাস্থ্যগত উন্নতির কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।”

উডস বলেন, “স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে কাটানো অন্তরঙ্গ সময়ের কোনো প্রভাব না দেখে আমরা বড়ই আশ্চর্য হই। এর সম্ভাব্য কারণ হয়ত এই্ সম্পর্কের সময়কাল ও ভঙ্গুরতা। বৈবাহিক সম্পর্ক আর পরিবারের অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে সম্পর্কের সময়কালের মধ্যে ব্যবধান বিস্তর, শক্তিশালীও বেশি।”

উডস আরও বলেন, “যারা এরমধ্যেই দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যা ভুগছেন, পারিবারিক সম্পর্ক খারাপ হলে তাদের শরীরের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। আর পরিবার যদি তাদের সহমর্মীতা দেখান, সুসম্পর্ক বজায় রাখেন তবে তাদের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে যাবে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন