যে কোনো মূল্যে জয়লাভ, দীর্ঘমেয়াদে অকার্যকর

কর্মক্ষেত্রে যেভাবেই হোক জয় আমার চাই-ই চাই। এমন মনোভাব সহকর্মীদের মধ্য থেকে মিলেমিশে কাজ করার মানসিকতা নষ্ট করে দিতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কআইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2019, 10:19 AM
Updated : 24 Sept 2019, 10:19 AM

স্যান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কর্মক্ষেত্রে এমন মনোভাব সাময়িকভাবে সাফল্য এনে দিতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে তা হতে পারে ধ্বংসাত্বক।

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক কিংবা পরিচালকরা হয়ত মনে করতে পারেন যেভাইবেই হোক সাফল্য ছিনিয়ে আনার দিকে মনোযোগী হওয়া পরিচালনার একটি ভালো কৌশল, তবে তাতে মাশুলও গুনতে হতে পারে।

‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ নামক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

স্যান ডিয়েগো স্টেট ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. গাবি ইসা বলেন, “যে সকল কর্মী নিজের স্বার্থকেই সবসময় বড় করে দেখে, তারা যে কোনো মুল্যেই মুনাফা হাসিল করতে হবে এমন পরিবেশে সফল হয়, এমনকি তার জন্য যদি নিজের সহকর্মীর সঙ্গে প্রতারণা করতে হয় তাতেও বাধা নেই। অর্থাৎ তারা সেচ্ছায় নৈতিক-অনৈতিকের পার্থক্য উপেক্ষা করে নিজের দাপট বজায় রাখতে চায়। তারা মনে করে সহকর্মীর সাফল্য তার নিজের জন্য হুমকি। তাই অপরের ব্যর্থতাই তাদের কাম্য। অপরের ব্যর্থতাই তাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।”

এই ধারণাকে পরীক্ষা করতে ইসা, ‘ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন-ইএইউ ক্লেয়ার’ এবং ‘টিএ পাই’ ম্যানেজমেন্টে ইন্সটিটিউট’য়ের গবেষকরা ভারতে কর্মরত ৫শ’ জন ইংরেজি বলতে পারে এমন পুরোদস্তুর কর্মী ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেছে নেন। সেই সঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ১৯৬ জন কর্মী।

কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ, চাকরি নিয়ে সন্তুষ্টি ইত্যাদি সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মনোভাব জানার চেষ্টা করেন গবেষকরা।

ফলাফলে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপকেরা যখন কাজের ফলাফল নিয়ে বেশি আগ্রহী হয় তখন স্বার্থান্বেসী কর্মীরা কড়াকড়ি নিয়মের মনোভাব গড়ে তোলেন।

আরও দেখা যায়, এই চতুর কর্মীরা এমন পরিস্থিতিতে সহকর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার আগ্রহ হারান। পক্ষান্তরে প্রতিষ্ঠানের নিয়ম, রীতি ইত্যাদি থেকে দূরে সরে যান।

ইসা বলেন, “যেসব কর্মী শুধু কাজ উদ্ধারের প্রতি মনোযোগী তাদের মাঝে অন্যদের ব্যর্থ হতে দেখার আগ্রহ থাকে এবং সহকর্মীরা সফল হবে এমন কাজে তারা যোগ দিতে অনিচ্ছুক। তাই যখনই কাজের সাফল্যই একমাত্র লক্ষ্য, কর্মীরা নিজের স্বার্থ উদ্ধারেই বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে, এমনকি তাতে যদি অনৈতিক কাজ করতে হয় তাতেও বাধা নেই।”

“এনরন এবং ‘মর্টগেইজ’ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর উদাহরণ বিশ্লেষণ করলে জানা যাবে এধরনের মনোভাবে দীর্ঘমেয়াদে ধ্বংসাত্বক ফলাফল কেমন হতে পারে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন