রোজা রাখার সুফল

রোজা রাখা কিংবা উপবাস করাতে রয়েছে নানান স্বাস্থ্যগুণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2019, 11:11 AM
Updated : 30 May 2019, 11:11 AM

দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকা, যা বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কাছে ভিন্ন নামে পরিচিত। কেউ বলেন রোজা, কারও কাছে তা উপোস।

ধর্মীয় নিয়ম মেনে পানাহার থেকে বিরত থাকার ফজিলত তো আছেই, সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যগত নানান সুফলও রয়েছে।

অসংখ্য গবেষণা এই না খেয়ে থাকার স্বাস্থ্যগুণ পর্যালোচনা করেছে, প্রমাণ করেছে এর উপকারিতা। এমনকি ধর্মীয় নির্দেশ ছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার উদ্দেশ্যেও অনেকে এমনটা করছেন।

স্বাস্থ্যবিষয়ক এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানানো হল রোজা রাখা, উপোস থাকা কিংবা নির্দিষ্ট সময় না খেয়ে থাকার উপকারী দিকগুলো সম্পর্কে।

রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের জন্য আশির্বাদ এই রোজা। কারণ এতে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আসে। সামান্য সময় সব ধরনের খাবার খাওয়া ও পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকা রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়, ‘ইনসুলিন রেজিট্যান্স’ কমায়। রক্ত থেকে শরীরের বিভিন্ন কোষে শর্করা পৌঁছানোর প্রক্রিয়া আরও কার্যকর হয় এই প্রক্রিয়ায়।

সার্বিক সুস্বাস্থ্য: দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ একটি মারাত্বক শারীরিক সমস্যা যা ধীরে হলেও একজন মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি। হৃদরোগ, ক্যান্সার, বাত ইত্যাদি দূরারোগ্য ব্যধির দিকে ঠেলে দেয় এই সংক্রমণ। আর এই সংক্রমণকেই কিছু মাত্রায় দূরে রাখে রোজা বা নির্দিষ্ট সময় অভুক্ত থাকা।

হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো: বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর একটি বড় কারণ হৃদরোগ আর এই হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে রোজা রাখা। রক্তচাপ এবং ‘ট্রাইগ্লিসারাইড’য়ের মাত্রা কমানোর মাধ্যমে হৃদরোগ প্রতিরোধ ভূমিকা রাখে রোজা কিংবা উপোস থাকা।

ওজন নিয়ন্ত্রণ: ওজন কমাতে অনেকেই নির্দিষ্ট সময়ে না খেয়ে থাকার পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এতে বিপাক ক্রিয়ার গতি বাড়ে এবং ওজন কমার প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ওজন ঝরাতে ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণের চাইতেও কার্যকর উপায় রোজা রাখা।

বয়সের প্রভাব: শরীরের ওপর বয়সের প্রভাবকে বিলম্বিত করতে পারে রোজা রাখার অভ্যাস, বাড়াতে পারে আয়ুও।

অন্ত্রের সুস্বাস্থ্য: না খেয়ে থাকার কারণে পাকস্থলী ও অন্ত্র নিত্যদিনের খাবার হজম করার কাজ থেকে বিশ্রাম পায়। ‘গাট ফ্লোরা’ বা অন্ত্রের অনুজীবের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয় রোজা রাখার কারণে।

আসল বিষয় হল

রোজা, উপোস বা অভুক্ত থাকার যে স্বাস্থ্যগত গুণ রয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে পদ্ধতিটি অনুসরণে সাবধান থাকাও জরুরি।

প্রথমত এই পদ্ধতি সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। যাদের ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত তাদের রোজা রাখা থেকে বিরত থাকাই মঙ্গল। কারণ না খেয়ে থাকার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ আশঙ্কাজানক মাত্রায় বেড়ে কিংবা কমে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্য মারাত্বক।

তাই ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

একটানা ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকা যাবে না। আর রোজা রাখলে শরীরের পানির চাহিদা পূরণে বিশেষ নজর দিতে হবে। সঙ্গে চাই পর্যাপ্ত বিশ্রামও।

আরও পড়ুন