রোজায় স্বাস্থ্যসম্মত খাবার

সারাদিন রোজা রাখার পরে সুস্থ থাকার জন্য ইফতারে চাই স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার।

লাইফস্টাইল ডেস্ক তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 June 2016, 11:51 AM
Updated : 14 June 2016, 11:51 AM

স্বাস্থ্যকর ইফতারের মেনু নির্বাচন করা প্রসঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ফারাহ মাসুদা।

ইফতার শুরু করার সময় খুব বেশি তাড়াহুড়া করে খাওয়া উচিত নয়। একটু সময় নিয়ে ধীরে ধীরে খাওয়া উচিত। প্রথমে, দুতিনটি খেজুর খেয়ে পানি পান করা উচিত। এরপরে কিছু সময়, আনুমানিক ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ভারি খাবার খাওয়া প্রয়োজন।

কারণ মস্তিষ্কে খাদ্য সংবেদন পৌঁছাতে একটু সময় লাগে। নির্ধারিত সময়ের আগেই যদি খাওয়া শুরু করা হয় তবে অধিক ভোজনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় যা ওজন বাড়ায় জন্য দায়ী।

খেজুর মিষ্টি ফল। তাই দ্রুতই রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এছাড়াও এটি ডাইজেস্টিভ এনজাইম বিতরণকারী হিসেবে কাজ করে যা খাবার হজমে সাহায্য করে।

ইফতারিতে পানিজাতীয় খাবার যেমন ফলের রস, শরবত, সুপ ইত্যাদি খাওয়া উচিত। এর ফলে সারাদিনের পানির ঘাটতি কমে আসে। তাই বলে একবারে বেশি পানি পান করা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। ইফতারের পর থেকে খানিকক্ষণ পর পর অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত।

কোনোভাবেই কৃত্রিম রং মেশানো জুস বা কোমল পানীয় খাওয়া ঠিক নয়।

ইফতারিতে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে চাইলে অবশ্যই তেল সমৃদ্ধ ও ভাজাপোড়া-জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে বলে জানান ফারাহ মাসুদা। অতিরিক্ত মিষ্টি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো।

এছাড়া অতিরিক্ত চা বা কফি এবং কোমল পানীয় পান করা থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ অতিরিক্ত চা ও কফি শরীরের পানি শূন্যতার সৃষ্টি করে।

ফারাহ মাসুদা বলেন, “ইফতারে পেট ঠাণ্ডা থাকে এমন খাবার যেমন দুধচিড়া বা দই-চিড়া অথবা মুড়ি খাওয়া ভালো।

অনেকে ইফতারে তেহেরি, বিরিয়ানি ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন। তবে এই ধরনের খাবার কোনোভাবেই ইফতারিতে খাওয়া উচিত না। কারণ এইগুলো পেট গরম করে, ফলে নানা রকমের পেটের অসুখ দেখা যায়।

ইফতার ও সেহেরিতে আঁশজাতীয় ফল খেতে হবে। কারণ এই ধরনের ফল অনেক বেশি সময় ধরে পানি ধরে রাখতে পারে। ফলমূল ও সবজি শরীরকে ‘ডিটক্সিফাইন’ হতে সাহায্য করে। ফলে শরীর সুস্থ থাকে ।

শুধু ইফতারে নয় সেহেরিতেও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

ফারাহ মাসুদা বলেন, “রোজার মাসে খাবারের প্রতি বিশেষ সচেতন হওয়া প্রয়োজন। খাদ্যতালিকা যেন সুষম হয় সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

সেহেরিতে কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। পাশাপাশি প্রোটিন ও সামান্য ফ্যাট খেতে হবে। আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া ভালো। এরফলে এইসকল আঁশ পানির সঙ্গে বিক্রিয়া করে শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে।

সেহেরি ও ইফতারিতে এসবের পাশাপাশি ফলমূল ও প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

ছবি: রয়টার্স।