হলুদ কি আসলেই উপকারী?

মসলা হলুদ নিয়ে যা প্রচলিত সেগুলো অতটা কার্যকর নাও হতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2018, 10:56 AM
Updated : 6 Oct 2018, 10:56 AM

ভারতীয় উপমহাদেশে প্রাচীনকাল থেকেই হলুদকে বিস্ময়কর মসলা হিসেবে গণ্য করা হয়। দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করার উপকারিতা সম্পর্কে প্রায় সকলেই জানেন।

বহু বছর ধরেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, ক্ষত সারাতে এবং শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বাড়াতে উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয় হলুদ। এর ক্ষয়পূরণের ক্ষমতা আসে ‘কারকিউমিন’ থেকে, যা হলুদের প্রধান সক্রিয় উপাদান।

এখন পশ্চিমা বিশ্বেও হলুদ’কে ‘সুপারফুড’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তবে বিষয়টা কতখানি সঠিক?

‘আমেরিকান কেমিকল সোসাইটি’র তত্ত্বাবধানে ‘জার্নাল অফ মেডিসিনাল কেমিস্ট্রি’তে প্রকাশিত গবেষণায় জানানো হয়, পর্যাপ্ত পরিমাণে যে কোনো ভাবেই হলুদ খাওয়া হোক না কেনো তা ‘আলৎঝাইমার’স’ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কমায় হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি। আর মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

সার্বিক সুস্থাস্থ্যের জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রতিদিন ৫শ’ মি.লি. গ্রাম হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেন, যা বিভিন্ন জটিল রোগ থেকেও দূরে রাখতে সাহায্য করবে।

বিপরীত ফলাফলও আছে

এই গবেষণায় প্রমাণ করার চেষ্টা করা হয়, মসলা কিংবা ওষুধ হিসেবে যেভাবেই খাওয়া হোক না হলুদ ক্ষয়পূরণে সক্ষম।

তবে এই মসলা হজম করতে শরীরকে বেগ পেতে হয়। তাই ততটা বেশি কার্যকর না।

হলুদের ‘কারকিউমিন’ অন্ত্র এবং হজম প্রণালীতে না পৌঁছালে কোনো উপকারেই আসে না। 

‘কারকিউমিন’ রক্তে প্রবেশ করলে সহজেই মিশে যেতে পারে না। ফলে উপকারের মাত্রা হয় শূন্য কিংবা খুব সামান্য।

প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন করা রোগীদের সম্পৃক্ত করে পরীক্ষা চালান গবেষকরা। হলুদ ব্যবহার করে তাদের জটিল কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালানো হয়। তবে কোনো উপকার পাওয়া যায়নি।

আরেকটি সমস্যা হল হলুদের এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মিষ্টি পানীয়তে হলুদের প্রদাহনাশক উপাদান যোগ করে তা বাজারে বিক্রি করা হয়।

গবেষকদের মতে, এই মিশ্রণ ও পানীয় উপকরী নয়। বরং হতে পারে বিষাক্ত, এমনকি প্রাণনাশক।

আবার হলুদকে খাদ্যাভ্যাস থেকে বাদ দেওয়ার ব্যাপারেও সাবধান করেছেন গবেষকরা। কারণ, যদিও ‘কারকিউমিন’ শরীরে শোষিত হওয়া কঠিন তবে এর রয়েছে নানান গুণ।

গোল-মরিচের সঙ্গে হলুদ ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা, যা হলুদের গুণাগুণ বাড়ায়। গোল-মরিচে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান শরীরের পুষ্টি উপাদান শোষণে সহায়তা করে। আর হলুদ শরীরের কোনো উপকারে যদি নাই আসে, তাতেও সমস্যা নেই কারণ তা কোনো ক্ষতি করবে না।

আসল বিষয় হল

এই উপমহাদেশের মানুষরা হলুদ সম্পর্কে যে ধারণা নিয়ে চলছে, সেটাকে অগ্রাহ্য করছে না এই গবেষণা। তবে অসম্ভবকে সম্ভব করার আশা করাও ঠিক হবে না। শুধু মাত্র স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও সঠিক সমন্বয়ে উপকার পাওয়া সম্ভব।

আরও পড়ুন