শরীরের দূষিত বস্তু প্রকৃতিক উপায়ে দূর করার জন্য সহজলভ্য ঘরোয়া উপাদান দিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন ‘ডিটক্স ওয়াটার’।
Published : 28 Nov 2015, 02:58 PM
পাকস্থলী ও অন্ত্রে বিভিন্ন বিষাক্ত ও ক্ষতিকর উপাদান জমে থাকে। যা আমাদের বিপাক প্রক্রিয়াতে ব্যাঘাত ঘটায়। এতে কর্মক্ষমতা কমে যায়, ওজন বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন রোগের ঝুঁকিও বাড়ে পায়। শরীর থেকে এই দূষিত পদার্থ বের করে দিতে বেশ কার্যকর ডিটক্স ওয়াটার।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে ‘ডিটক্স ওয়াটার’ তৈরির কিছু পদ্ধতি ও উপকারিতা প্রকাশ করা হয়।
কমলালেবু-পুদিনাপাতা: ভিটামিনের চমৎকার একটি উৎস কমলা। দেহকে ক্ষতি কর মৌলের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। কমলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ত্বক সুন্দর করে। কমলার সঙ্গে পুদিনা পাতার মিশ্রণ দারুণ একটি স্বাদ আসে আর এটি রুচি বৃদ্ধিতেও সহায়ক।
আপেল-দারুচিনি: এই পানীয় হজম শক্তি বাড়ায়। আপেলে আছে ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি এবং ফ্লাভানয়েড নামক উপাদান। যা হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। দারুচিনি রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি আর্থ্রাইটিস উপশম করে।
স্ট্রবেরি: এই ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। দেশেই চাষ হচ্ছে স্ট্রবেরি। ফলে তাজা স্ট্রবেরি পাওয়া যাবে হাতের নাগালে। ‘ডিটক্স ওয়াটার’ তৈরির জন্য পুষ্ট ও অক্ষত স্ট্রবেরি বেছে নিতে হবে। পানিতে মেশানোর আগে সামান্য ছেঁচে নিন। স্বাদ বাড়াতে কিছু তাজা পুদিনাপাতাও যুক্ত করা যেতে পারে।
আদা-লেবু: পেটের মেদ ঝরাতে এই উপাদানগুলো বেশ কার্যকর। গবেষণায় দেখা গেছে আদা মেশানো পানীয় পান করার ফলে পেট ভর্তিভাব অনুভূত হয়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা কমে। লেবু ওজন কমাতে সহায়ক। সেই সঙ্গে দেহের বর্জ্য নিষ্কাশনে ভূমিকা রাখে এবং প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক।
তরমুজ: সবচেয়ে বেশি পানি সমৃদ্ধ ফলগুলোর মধ্যে একটি। তরমুজে আছে সিটুলিন নামক এক প্রকার অ্যামিনো এসিড, যা বৃক্ক ও যকৃত থেকে অ্যামোনিয়া ছেঁকে নিতে সহায়তা করে। এছাড়াও তরমুজ প্রদাহ নাশক এবং পেশির ব্যথা ও ফোলা ভাব কমাতে সাহায্য করে।
চা বা কফির বিকল্প হিসেবে ‘ডিটক্স ওয়াটার’ পান করা যেতে পারে। সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে এর ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান শরীর সতেজ রাখার পাশাপাশি কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
উপরের উপকরণ ছাড়াও আরও অনেকভাবেই দেহের বিষাক্ত পদার্থ মুক্ত করার পানীয় তৈরি করা যায়।
এজন্য প্রয়োজন:
- লেবুজাতীয় ফল। যেমন- লেবু ও কমলালেবু।
- বেরিজাতীয় ফল। যেমন- ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি, চেরি।
- তরমুজ।
- আলাদা ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে আপেল, নাশপাতি, জাম, আঙুর, বরই ইত্যাদি ফল।
- পুদিনা, তুলসী, রোজমেরি, ল্যাভেন্ডার ইত্যাদি ভেষজগুল্ম।
- মসলার মধ্যে ব্যবহার করা যাবে আদা, এলাচ, দারুচিনি ইত্যাদি।
প্রস্তুত পদ্ধতি
‘ডিটক্সওয়াটার’ তৈরি করা বেশ সহজ। উপরে উল্লেখ্য উপাদানগুলো থেকে পছন্দ মতো ফল, গুল্ম, মসলা বা স্বাদ অনুযায়ী দুই থেকে তিনটি উপাদান মিশিয়ে পানীয় তৈরি করা যায়। যেমন- লেবুর সঙ্গে আদা। অথবা আপেলের সঙ্গে শসা। তবে তরমুজ আলাদা ভাবেই ব্যবহার করা যাবে।
একটি কাচের পাত্রে পছন্দের ফল রেখে একটু ছেঁচে নিন। এজন্য হামানদিস্তা বা পরিষ্কার কাঠি ব্যবহার করুন। কমলালেবু হলে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। ভেষজগুল্ম বা পাতা যোগ করতে চাইলে হালকা ভাবে থেঁতলে দিতে হবে। এরপর শুধু পরিমাণ মতো ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে নিলেই ‘ডিটক্স ওয়াটার’ তৈরি। সর্বোচ্চ দুই দিন পর্যন্ত ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে এই পানীয়।
এখানে ডিটক্স ওয়াটার তৈরিতে ব্যবহৃত কয়েকটি পরিচিত সমন্বয়ের পদ্ধতি উল্লেখ করা হল।
লেবু ও পুদিনা পাতা। কমলালেবু, আদা ও তুলসী পাতা। গাজর, লেবু ও আদা। আপেল ও পুদিনা পাতা। শসা, তরমুজ ও পুদিনা পাতা। স্ট্রবেরি, শসা ও এলাচ।