পৃথিবীর সবচেয়ে বড় শ্বাসমূলীয় বন সুন্দরবনের পাশে ছোট্ট একটি দ্বীপ দুবলার চর। বঙ্গোপসাগরের বুকে কুঙ্গা এবং মরা পশুর নদীর মোহনায় জেগে ওঠা এ চরে দীর্ঘ কাল ধরে চলে আসছে রাস মেলা।
Published : 23 Oct 2015, 01:24 PM
হিন্দু ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীরা এ সময়ে পুণ্যস্নানের জন্য এ চরে আসেন দলে দলে।
দুবলার চরের এবারের রাসমেলা ২৫ নভেম্বর। রাসমেলা উপভোগের সঙ্গে এ সময়ে তাই বেড়িয়ে আসতে পারেন সুন্দরবনের অসামান্য সুন্দর কয়েকটি জায়গা থেকে।
দুবলার চরের রাসমেলার ইতিহাস বেশ পুরানো। এ নিয়ে নানান কাহিনিও প্রচলিত আছে।
অন্য একটি মতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অবতার শ্রীকৃষ্ণ শত বছর আগের কোনো এক পূর্ণিমা তিথিতে পাপমোচন এবং পুণ্যলাভে গঙ্গাস্নানের স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে শুরু হয় রাস মেলার। আবার কারও কারও মতে, শারদীয় দুর্গোৎসবের পর পূর্ণিমার রাতে বৃন্দাবনবাসী গোপীদের সঙ্গে রাসনৃত্যে মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। এ উপলক্ষ্যেই দুবলার চরে পালিত হয়ে আসছে রাস উৎসব।
বিভিন্ন রকম হস্ত শিল্প সামগ্রীর সমাগমও ঘটে এ মেলায়। হিন্দুদের নানান পূঁজা-অর্চনার ফাঁকে সন্ধ্যায় ওড়ানো হয় ফানুস। মেলার মূল প্রার্থনা হয় ভোরে প্রথম জোয়ারে পুণ্য স্নানের মধ্য দিয়ে।
এদিন সূর্য ওঠার আগেই দুবলার চরের আলোরকোল সমুদ্র সৈকতে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসেন পুণ্যার্থীরা। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রেও জোয়ার শুরু হয়। জোয়ারের পানি পুণ্যার্থীদের ছুঁলেই স্নানে নামেন তারা।
রাসমেলা ছাড়াও দুবলার চরে দেখতে পাবেন জেলেদের শুঁটকি তৈরি। পুরো দুবলার চরজুড়েই এসময়ে শুঁটকি তৈরি করেন জেলেরা।
রাসমেলায় গেলে এ সময়ে সুন্দরবনের অসাধারণ তিনটি জায়গাও ভ্রমণ করার সুযোগ হবে। সেগুলো হল-- কোকিলমনি, তিনকোণা দ্বীপ এবং নীলকমল।
গভীর জঙ্গলের মাছে কোকিলমনির ছোট ছোট খালগুলোতে ছোট নৌকায় ঘুরে বেড়ানো বেশ উপভোগ্য। তিনকোণা দ্বীপ বন্যপ্রাণী দেখার আদর্শ জায়গা।
কীভাবে যাবেন
নিজস্ব উদ্যোগে সুন্দরবনের গহীনে ভ্রমণ কঠিন। তাই রাসমেলা ছাড়াও সুন্দরবনে ভ্রমণে যেতে সাহায্য নিতে হবে অভিজ্ঞ কোনো ভ্রমণ সংস্থার।
এবারের রাস উৎসব উপলক্ষ্যে সুন্দরবনে বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করেছে বেসরকারী ভ্রমণ সংস্থা বেঙ্গল ট্যুরস। রাস মেলা ছাড়াও এই আয়োজনে সুন্দরবনের আকর্ষণীয় জায়গা কোকিলমনি ও নীলকমলের জঙ্গলে বেড়ানোর সুযোগ থাকছে।