খাওয়ার কারণেই নয়, না খাওয়া থেকেও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।
Published : 22 Sep 2022, 12:33 PM
স্বাদ যন্ত্রের লাগাম টানতে না পারলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়বেই।
হৃদরোগ এড়াতে সাধারণত দৈনিক খাদ্যাভ্যাসের দিকে নজর দিতে বলা হয়। তবে মুখরোচক নাস্তাও যে বিপদ বয়ে আনতে পারে সেদিকে সাধারণত কারও নজর থাকে না।
মিষ্টি নাস্তা: যারা বেশি মিষ্টি খেতে পছন্দ করেন তাদের ক্ষেত্রে নাস্তায় কেক, পেস্ট্রি, নানান ধরনের মিষ্টান্ন খুবই আকর্ষণীয়। তবে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার থেকে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
মার্কিন লেখক ও পুষ্টিবিদ লিসা ইয়ং বলছেন, “অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার যেটা কোমল পানীয় কিংবা চকলেট যাই হোক না কেনো, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।”
নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির এই পুষ্টিবিদ ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও জানান, নাস্তা হিসেবে মিষ্টি বেশি অথচ আঁশ ও প্রোটিন কম- এই ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যায়। বার বার এই অবস্থা ঘটতে থাকলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া(রক্তে উচ্চ শর্করা) হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এই পরিস্থিতি হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
লবণযুক্ত নাস্তা: যদি হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে চাইলে চিনির মতোই লবণ খাওয়ার দিকেও নজর দিতে হবে।
ইয়ং বলেন, “লবণযুক্ত নাস্তা বেশি খেলে বা প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস থাকলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে, যা হৃদপিণ্ডের জন্য মোটেই সুখকর নয়। যেমন- আলুর চিপস, প্রতিদিন খেতে থাকলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বেই। অনেকে আবার ভাজাপোড়া খাবারেও আলাদা লবণ ছিটিয়ে নেন। সেটা আরও বিপজ্জনক।”
অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি খাওয়া: চর্বিযুক্ত, আলাদা করে লবণ বা চিনি দেওয়া, পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেইট ও বেশি তেলভাজা খাবারগুলোকেই সাধারণত প্রক্রিয়াজাত হিসেবে ধরা হয়।
ইয়ং বলেন, “এই ধরনের খাবার খুব সহজেই ওজন বাড়ায়। আর অতিরিক্ত ওজন যে হৃদরোগের কারণ এ কথা এখন সবাই জানেন।”
‘জার্নাল অফ দি আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজি’তে প্রকাশিত নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি’র পরিচালিত গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, প্রতিবার অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার ফলে বাড়তে থাকে হৃদরোগের ঝুঁকি।”
নাস্তা না খাওয়া: খাবার শরীরে পুষ্টি যোগায়। বাজে খাবার দেহে বাজে প্রভাব ফেলে। আর না খেয়ে থাকলেও ঘটে বিপদ।
যুক্তরাষ্ট্রের পুষ্টিবিদ ও ‘দি পয়েন্ট নিউট্রিশন’য়ের প্রতিষ্ঠাতা র্যাচেল ফাইন বলেন, “সারাদিন চাহিদার তুলনায় কম খাবার খেলেও দেহে বাজে প্রভাব পড়ে।”
দুবেলার প্রধান খাবারে মাঝে ভালো কোনো নাস্তা না করা বা সকালে ঠিক মতো না খাওয়া ফলে খিদা অনুভূত হবেই। আর ফলে পরে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা যেমন বাড়ে তেমনি মুখরোচক খাবারে দিকে ঝোঁক থাকে।
তাই নাস্তায় রাখতে হবে এমন খাবার যা, মন ভরাবে পাশাপাশি পেটও রাখবে ‘ইঁদুর দৌড়’ মুক্ত।
বেইকড খাবার: মাঝে মধ্যে কেক প্রেস্ট্রি বা এই ধরনের ‘বেইকড’ খাবার খাওয়া খারাপ কিছু না। তবে বেশিরভাগ সময় এসব খাবার খেলে বিপদ আছে।
ব্যালেন্স ওয়ান সাপ্লিমেন্ট’য়ের পুষ্টিবিদ ট্রিস্টা বেস্ট বলেন, “ট্রান্স ও স্যাচুরেইটেড ফ্যাট কোলেস্টেরল, রক্তচাপ ও ট্রাইগ্লিসারাইডস’য়ের সঙ্গে সম্পর্কিত। এগুলো ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়াতে থাকে।”
তাছাড়া প্রোটিন ও আঁশ ছাড়া এই ধরনের খাবার বেশি খেলেও পেট ভরা ভাব আসে না। ফলে সারাক্ষণ একটা ‘খাই খাইভাব’ থেকেই যায়। যে কারণে খাওয়াও বেশি হয়। তাই এসব খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।
আরও পড়ুন:
সুস্থ থাকতে ছয়টি ফ্রেঞ্চ ফ্রাই