ব্যাকপ্যাক পরিষ্কারের পন্থা

ওয়াশিং মেশিন কিংবা হাতে ব্যাগ ধুতে হলে জানতে হবে কিছু কৌশল।

ছবি: রয়টার্স।

ভ্রমণে কিংবা শিশুর স্কুলের ব্যাগ ময়লা হবেই। আর পরিষ্কারও করতে হয় জেনে বুঝে।

স্কুলের বাচ্চা থেকে অফিসগামী নারী পুরুষ সবার সারাদিনের প্রয়োজনীয় সকল রসদ যেন থাকে ব্যাগে। ফলে কলমের কালি, বাটি খুলে গিয়ে ছড়িয়ে যাওয়া খাবার কিংবা বোতল খুলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া পানীয়, প্রসাধনী, ধুলাবালি ইত্যাদি অনেককিছু ব্যাগের ভেতরটাকে নোংরা করে তুলবে।

আর নিয়মিত ব্যবহারে ব্যাগের ভেতর ও বাইরে তো ময়লা হবেই। কদিন পরপরই ব্যাগ পরিষ্কার করার উপায় নেই। আবার একবার পরিষ্কার করলে শুকাতেও সময় লাগে। তাই যখন ধোয়া হবে তখন ভালোভাবেই ধুতে হবে।

শিশুদের পণ্য ও ব্যাগ তৈরিতে কাপড় সরবরাহকারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘ল্যান্ড’স এন্ড’য়ের কালি শ্যাগার, রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “ব্যাগে যখনই ঘামে ভেজা কাপড় বা যে কোনো নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস বহন করবেন চেষ্টা করতে হবে যত দ্রুত তা বের করে ফেলা যায়। বের করে নিয়ে বাসন ধোয়ার তরল সাবানে ভেজানো কাপড় দিয়ে ব্যাগের ভেতরটা মুছে নিতে হবে। ব্যাগের ভেতরে ছত্রাক জমা প্রতিরোধ করতে ভেতরটা যাতে সবসময় শুকনা থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।”

তিনি আরও পরামর্শ দেন, পুরিপুরি পানিতে ভিজিয়ে ধোয়া শুরু করার আগে ব্যাগের ‘কেয়ার লেবেল’ দেখে নিতে হবে তা ধোয়ার নির্দেশনাগুলো। যদি পুরোপুরি ভেজাতে বারণ থাকে তবে সাবান পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে ব্যাগ ভালোভাবে মুছে নিতে হবে।

কিছু যদি লেখা না থাকে তবে আগে ব্যাগের একটি অংশ ধুয়ে দেখতে হবে অবস্থা কী দাঁড়ায়। যদি ব্যাগের কোনো সমস্যা না হয় তবে পুরোটা ভালোভাবে ধোয়ার পালা শুরু করা যেতে পারে।

প্রথম কাজ- ব্যাগের সকল পকেট থেকে সবকিছু বের করা

সেলাইয়ের ভাঁজে, পকেটের খাঁজে যা কিছু আটকে আছে তা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। যে ব্রাশ ব্যবহার করা হবে তার ‘ব্রিসলস’ যাতে নরম হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ব্যাগের ভেতরে ধাতব কিছু থাকলে সেটা বের করে বা খুলে রাখতে হবে ধোয়া আগে। সব পকেটের চেইন খুলে রাখতে হবে। চেইনের আশপাশে কোনো সুতা বের হয়ে থাকলে তা কেটে ফেলতে হবে যাতে তা চেইনে আটকে না যায়।

ওয়াশিং মেশিনে ধোয়া

ব্যাগের কোথাও কোনো দাগ লেগে থাকলে তা আগেই ‘স্টেইন রিমুভার’ আর ব্রাশ দিয়ে ঘষে তুলে ফেলতে হবে। দাগের ওপর প্রায় আধা ঘণ্টা ‘স্টেইন রিমুভার’ মাখিয়ে রাখা উচিত। ব্যাগটাকে উল্টে নিয়ে কিংবা বালিশের কভারের মধ্যে ঢুকিয়ে নিতে হবে। এতে ওয়াশিং মেশিনে ব্যাগের চেইন বা অন্য কোনো অংশ আটকে যাওয়ার সুযোগ থাকবে না।

মেশিনে মৃদুমাত্রার ‘ডিটারজেন্ট’ দিতে হবে অল্প পরিমাণে। ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। বেছে নিতে হবে ‘জেন্টেল সাইকেল’।

মেশিনের মধ্যে ঘোরার সময় ব্যাগটা দলা পাকিয়ে গেলে মেশিন বন্ধ করে ব্যাগটি ভেতরে আবার ছড়িয়ে দিতে হবে যাতে ভালোভাবে পরিষ্কার হয়।

ব্যাগ মেশিনে না শুকানোই ভালো। বাইরের কড়া রোদে শুকাতে হবে। ব্যাগ মুচড়ে চেপে পানি বের করা যাবে না। এতে ভেতরের ‘প্যাডিং’ নষ্ট হবে, সেলাই কিংবা কাপড় ছিড়তে পারে।

পুরো ব্যাগটাকে উল্টো করে সবগুলো পকেট খোলা রেখে রোদে শুকাতে হবে ঝুলিয়ে রেখে।

হাতে পরিষ্কার করা

এজন্য দরকার হবে ‘স্টেইন রিমুভার’, পুরানো নরম ব্রাশ, কাপড় কিংবা স্পঞ্জ আর তোয়ালে।

‘স্টেইন রিমুভার’য়ের ব্যবহারটা আগের মতোই। একটি বড় গামলা ভরে কুসুম গরম পানি নিতে হবে, যার মধ্যে পুরো ব্যাগটাকে ভেজানো যায়। পানিতে ডিটারজেন্ট গুলিয়ে নিয়ে তাতে ব্যাগটি ভিজিয়ে রাখতে হবে।

কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখার পর ব্রাশ ও স্পঞ্জ দিয়ে ব্যাগের বিভিন্ন অংশ ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। ভেতরের দিকটা পরিষ্কার করার সময় ব্যাগটি উল্টে নিতে হবে।

এবার গামলার পানি কয়েকবার বদলে নিয়ে ব্যাগটিকে ভালোভাবে ধুতে হবে। পরে তোয়ালের ওপর ব্যাগটি রেখে ‘রোল’ বানাতে হবে। এতে বাড়তি পানি তোয়ালে টেনে নেবে। আর শুকানোর পদ্ধতিটাও আগের মতোই।

স্বচ্ছ ব্যাগ পরিষ্কার করার উপায়

স্বচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যাগগুলো ফ্যাশন’য়ের পাশাপাশি প্রয়োজনীয়ও হয়ে উঠেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তবে সমস্যা হল- এর ভেতরে কী আছে সেটা যেমন দেখা যায় তেমন দেখা যায় ময়লা ও দাগগুলো।

প্রথমেই ব্রাশ দিয়ে ঘষে ভেতরটা পরিষ্কার করতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে তারপর মুছে নিতে হবে। সাবান পানিতে ভেজানো কাপড় দিয়ে প্রথমে চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। তাতে যদি দাগ না যায় তবে ‘নন-অ্যাসিটোন নেইল পলিশ রিমুভার’ ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরও পড়ুন

ভ্রমণের ব্যাগ গোছানোর কার্যকর উপায়

ব্যাগ ও জ্যাকেট মেরামত করতে

ব্যবহৃত টি ব্যাগের বিকল্প ব্যবহার