কিছু খাবার যেমন বাদ দিতে হয় তেমনি অনেক খাবার আছে যা ভালো ঘুমের সহায়ক।
Published : 11 Sep 2022, 11:32 AM
খালি পেটে থাকলে যেমন ঘুম হবে না, আবার ঘুমের আগে আগে খেলেও দেখা দিতে পারে বিপত্তি।
তবে প্রতিটি মানুষের দরকার রাতে পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের চাহিদা না মিটলে সারাদিন কাজ করা যাবে না, মন মানসিকতাও ভালো থাকবে না। এই রাতের ঘুমকে বিভিন্ন বিষয় প্রভাবিত করে। যার মধ্যে অন্যতম হল খাদ্যাভ্যাস।
কারও অভ্যাস রাতে ঘুমানো আগে দুয়েক গ্লাস পানি পান করা। কিন্তু ওই পানিই রাতে আপনাকে জাগিয়ে তোলে শৌচাগারে যাওয়ার জন্য।
কেউ হয়ত ভাবছেন, রাতে ঘুমানোর আগে কিছুই খাবেন না, কারণ এতে ঘুমের সমস্যা হবে, ওজন বেড়ে যাবে। তবে বিছানায় যাওয়ার পরপরই পেটের শুরু হল গুড়ুম গুড়ুম ডাক। আর খিদার চোটে ঘুম গেল ছুটে।
তাহলে উপায় কী?
যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনের পুষ্টিবিদ মায়া ফেলার ‘ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন কিছু অভ্যাসের কথা তুলে ধরেন যেগুলো রাতে ঘুমানো আগে ক্ষতিকর বলে মনে করা হয়। আসলে তেমন গুরুতর কিছুই নয়।
ঘুমানোর আগে মদ্যপান: একরাতে প্রচুর বা মোটামুটি মদ্যপান করে ঘুমানোর পর দেখলেন আপনি সারারাত ঘুমিয়েছেন। এমন একটানা ঘুম আপনার অনেকদিন হয় না। বা এত জলদি ঘুমাতেও পারেন না। ভাবলেন প্রতিদিন রাতে তাহলে হালকা মদ্যপান করলে ঘুমটা ভালো হবে।
ফেলার বলছেন, “ঘুম হয়ত জলদি চলে আসবে। কিন্তু শরীরে অ্যালকোহল থাকলে ঘুম কখনই গভীর হবে না, ফলে লম্বা সময় ঘুমালেও ঘাটতি পূরণ হবে না। অ্যালকোহল ‘আরইএম স্লিপ’য়ের মাত্রা কমায়। ঘুমের এই পর্যায়ে মানুষ স্বপ্ন দেখে, মস্তিষ্কের ক্ষয় পূরণ হয়।”
আর তার যদি অভাব হয় তবে লম্বা সময় ঘুমানো পরও ঘুমের অভাবজনিত নানান রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। আবার মদ্যপানের কারণে ঘুমের মধ্যেই রক্তে শর্করার মাত্রা ওঠানামা করে মারাত্মক হারে। আর সে কারণেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।
‘মেলাটোনিন সাপ্লিমেন্ট’ দ্রুত সমাধান দেয়: অনিদ্রা যাদের আছে তারা ‘মেলাটোনিন সাপ্লিমেন্ট’য়ের কথা অবশ্যই ভেবে দেখেছেন।
এই মেলাটোনিন ‘স্লিপ হরমন’ হিসেবে পরিচিত।
ফেলার বলেন, ‘সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে ‘মেলাটোনিন’ ভালো কাজ দিতে পারে। ঘুমানোর স্বাভাবিক সময়ের দুই ঘণ্টা আগে এই ‘সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। যদি আরও পরে ‘সাপ্লিমেন্ট’ নেওয়া হয় তবে সে অনুযায়ী ডোজ ঠিক করে নিতে হবে। আর ডোজ যদি ঠিক না হয় তবে অসময়ে শরীর বেসামাল লাগবে, শরীর দুর্বল লাগবে।”
তাই এই ‘সাপ্লিমেন্ট’ নেওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
ফেলার আরও বলেন, “শরীর যাতে জৈবিকভাবে ‘মেলাটোনিন’ নিঃসরণ করে সে ব্যবস্থার দিকেও নজর রাখা উচিত। যেমন- ঘুমানোর সময়ের এক থেকে দুই ঘণ্টা আগেই আলোর সংস্পর্শে আসা কমাতে হবে। উজ্জ্বল আলোতে থাকলে ‘মেলাটোনিন’ নিঃসরণ কম হয়।
রাতে ঘুমানো আগে না খাওয়া: ফেলার বলেন, “এই অভ্যাসের উপকারী ও অপকারী দুটো দিকই আছে। মানুষভেদে এই অভ্যাসের পরিণতিও তাই ভিন্ন।”
যেমন- ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ বা ‘জিইআরডি’ আছে যাদের, তারা রাতে ঘুমানোর ঠিক আগে কিছু খেলে পাকস্থলী থেকে খাবার উল্টোপথে আসার সম্ভাবনা বেশি থাকে। খাওয়ার ঠিক পরপরই শুয়ে পড়লেও যে কারও এই সমস্যা হতে পারে।
আবার যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে কমে কিংবা বেড়ে যেতে পারে তাদের জন্য রাতে ঘুমানোর ঠিক আগে খাওয়া উপকারী।
তবে সেই খাবারটা যে কোনো খাবার হলে চলবে না। ধীরে ধীরে শরীরে ‘কার্বোহাইড্রেইট’ নিঃসরণ করবে এমন খাবার হতে হবে, সঙ্গে প্রোটিন থাকতে হবে।
ফেলার আরও বলেন, “যে খাবারে ‘মেলাটোনিন’ আছে সেগুলো রাতে খেলে ঘুম আরামদায়ক হবে। যেমন- দুধ, ‘টার্ট চেরি জুস’, মাশরুম, বীজ, মাছ, বাদাম, ইত্যাদি।”