স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে প্রায় সবারই ধারণা আছে। তবে মাথার মধ্যে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রতিচ্ছবি গড়ে তুলতে সময় লাগে। কারণ অভ্যস্ততার একটা বিষয় রয়েছে।
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের নিয়মিত খাবারের মধ্যে রয়েছে ভাত, মাছ, সবজি, মাংস, ডাল। তবে রাস্তাঘাটে, পথে চলতে কিংবা রেস্তোরাঁতে প্রায় সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়।
এর থেকে বের হয়ে আসতে প্রথমেই পাতের খাবারের ধরন পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়বে।
স্বাস্থ্যকর খাবারের পাত্র কেমন হতে পারে সেই ধারণাই দেওয়া হল ‘হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
স্বাস্থ্যকর থালা
- ঘরে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া মোটেই কঠিন কাজ না, বরং সোজা। যেমন-
- একটি থালার অর্ধেক জুড়ে থাকবে নানান রংয়ের সবজি ও ফল। এক্ষেত্রে আলু বা ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ সবজি হিসেবে ধরা যাবে না।
- থালার বাকি অর্ধেক অংশের অর্ধেক অর্থাৎ এক চতুর্থাংশ পরিমাণে থাকবে পূর্ণ শষ্য, যেমন- ওটস, বার্লি বা লাল চালের ভাত।
- আর বাকি এক চতুর্থাংশে থাকবে স্বাস্থ্যকর প্রোটিন, যেমন- মাছ, মটর, বাদাম, বীজ, মুরগির মাংস এবং ডিম। এক্ষেত্রে উচ্চ চর্বি যুক্ত এবং লাল মাংস (রেড মিট) এড়াতে হবে।
- রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে স্বাস্থ্যকর তেল। যেমন- ক্যানোলা বা অলিভ অয়েল। সালাদ খাওয়ার অভ্যাস ভালো। তবে এর সাথে কমাতে হবে ঘি কিংবা মাখন খাওয়া।
- ক্যালরি কম এমন পানীয় বেছে নিতে হবে। সাধারণ পানি, চিনি ছাড়া কফি বা চা নিরাপদ। এড়াতে হবে চিনিযুক্ত পানীয়। আর দুধ পান করা যেতে পারে দিনে খুব বেশি হলে দুবার।
স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা তৈরি করা
ঘরের ফ্রিজারে যদি স্বাস্থ্যকর কাঁচা বাজার না থাকে তবে স্বাস্থ্যকর রান্নাও হবে না। এজন্য সাপ্তাহিক বাজার থেকে শুরু করে দৈনিক কেনাকাটায় স্বাস্থ্যকর খাবার কেনার পরিকল্পনা করে রাখতে হবে।
যেমন-
- প্রাথমিকভাবে হলেও সাপ্তাহিক বাজারের পরিকল্পনা আগে থেকে করা যেতে পারে। সহজে রান্না করা যায় এমন বাজার করতে পারলে ভালো। ছুটির দিনগুলোতে স্বাস্থ্যকর তবে মজার খাবার তৈরির জন্য আলাদা পরিকল্পনা করা যেতে পারে। এতে একঘেয়েমি আসবে না।
- বাজারের ফর্দে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ও টাটকা খাবারের নাম থাকতে হবে।
- খালি পেটে ও মানসিক চাপে থাকার সময় সাপ্তাহিক বাজারের পরিকল্পনা করা এড়াতে হবে। ভরা পেটে শান্ত মাথায় বিচক্ষণতার সাথে খাবার নির্বাচন করা যায়।
- বাজার পরিকল্পনায় অবশ্যই পূর্ণ শষ্য, সবজি, ডিম, বীজ- এসব খাবার রাখতে হবে।
- যতটুকু প্রয়োজন ততটুকুই কেনার অভ্যাস গড়তে হবে। বেশি খাবার কেনা মানেই বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা। আর অপচয় রোধে দ্রুত নষ্ট হয় এমন খাবার কেনা যেতে পারে। যাতে দিনের পর দিন খাবার ফেলে না রাখা হয়।
- মোড়কজাত খাবার কেনার সময় অবশ্যই লেবেল পড়তে হবে। যেসবে অতিরিক্তি লবণ, চিনি এবং স্যাচুরেইটেড ফ্যাট আছে সেগুলো এড়াতে হবে।
- স্বাস্থ্যকর রান্নার অভ্যাস গড়তে- সবজি স্যঁতে বা অল্প তেলে হালকা ভেজে খাওয়া, রোস্ট, বেইক বা সেদ্ধ খাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এড়াতে হবে অতিরিক্ত তেলে রান্না করা খাবার।
- স্বাস্থ্যকর রান্নার জন্য আগের দিন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। যেমন- বরফ করা মাছ গলানোর জন্য রেফ্রিজারেইটরের সাধারণ অংশে আগের রাতে রেখে দেওয়া যায়। ডাল বা বীজ আগেভাগে ভিজিয়ে রাখলে রান্না সহজ হয়। এমনকি সবজি ধুয়ে কেটে ফ্রিজে রেখে দেওয়া যেতে পারে। যাতে প্রয়োজনে বের করে সহজেই রান্নায় ব্যবহার করা যায়।
আরও পড়ুন
খাদ্যাভ্যাস নিয়ে নিজেকেই তিনটা প্রশ্ন করুন
খাবার যেভাবে মনের ওপর প্রভাব ফেলে
যেসব প্রক্রিয়াজাত খাবার ভালো