বই: দ্য থ্রি অ্যাস্ট্রোনটস, লেখক: উমবের্তো একো (ইতালি, ১৯৩২-২০১৬), অলঙ্করণ: ইউজেনিও কার্মি, প্রকাশক: হারকোর্ট ব্রেইস জোভানোভিচ, নিউ ইয়র্ক, প্রথম প্রকাশ: ১৯৭১
Published : 05 Nov 2022, 10:18 AM
উমবার্তো একো ও ইউজেনিও কার্মির প্রথম ছবি বই ‘দ্য বম্ব অ্যান্ড দ্য জেনারেল’। স্নায়ুযুদ্ধের রেসে দৌড়াত দৌড়াতে দুজন মিলে বইটির কাজ করেন। একজন লিখলেন, অন্যজন আঁকলেন। তাদের দুজনের দ্বিতীয় ‘দ্য থ্রি অ্যাস্ট্রোনটস’ বইয়ে তারা দৌড়েছেন স্পেস রেসে। এই বইটি যখন প্রকাশ পায় তখন সবে ৫ বছর হয়েছে ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মহাকাশ ভ্রমণকারী হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। প্রথম বইয়ের মতো দ্বিতীয় বইয়েও একো ও কার্মি শান্তিবাদের পক্ষেই কথা বলেছেন। উপকথার ভাষায় রচিত ও দারুণ চিত্রিত এ বইটি। একটুখানি শুনবে গল্পটা?
পৃথিবী নামের যে গ্রহটি মহাশূন্যে ঝুলছে সেই পৃথিবীর মানুষেরা মঙ্গলগ্রহ সম্পর্কে জানতে চায়। কী আছে ওই গ্রহে, সেখানে কি বসবাস করা যাবে?
তাইতো এই গ্রহ নিয়ে তারা গবেষণা করে। মঙ্গলের উদ্দেশ্যে যখন প্রথম তারা রকেট পাঠায়, তা ভূপৃষ্ঠেই পতিত হয়। তারপর তারা আরেকটি রকেট পাঠায় যা মহাশূন্যে হারিয়ে যায়। তারপর?
তারপরও মানুষ হাল ছাড়েনি, এবার আরও একটি রকেট পাঠালো, সেই রকেটে ছিল একটি কুকুর। কিন্তু কুকুর তো আর মানুষের ভাষায় কথা বলতে পারে না, ফলে সেই কুকুরটি একটিমাত্রই বার্তা পাঠিয়েছিল। তা হলো- ঘেউ ঘেউ।
তবুও হাল ছাড়লো না অনুসন্ধানীরা। শেষমেষ তারা মানুষ পাঠায় মঙ্গল নামের ওই গ্রহে।
যখন রাত নেমে এলো তখন অচেনা এই গ্রহে তিনজনেরই একটু ভয় ভয় করতে লাগলো। প্রচণ্ড একাকীত্বে ভুগতে লাগলেন প্রত্যেকেই। তিনজনই নিজ নিজ ভাষায় মাকে ডাকলেন।
সুন্দর এক সকালে পৃথিবীর তিনটি ভিন্ন দেশ থেকে তিনটি রকেট রওনা হলো মঙ্গলগ্রহের উদ্দেশ্যে। তার মধ্যে একজন আমেরিকান, একজন রাশিয়ান ও একজন চাইনিজ। এ রকেটগুলোর ভেতর যে তিনজন অনুসন্ধানী ছিলেন তাদের প্রত্যেকে মনে মনে ভাবছিলেন, ‘আমিই এই প্রথম মঙ্গলগ্রহে পা রাখতে যাচ্ছি।’
তারা তিনজনই দারুণ সাহসী আর বুদ্ধিমান ছিলেন। প্রায় একই সময়ে মঙ্গলে অবতরণ করলেন তারা। অচেনা, অজানা এ এলিয়েন গ্রহ চষে বেড়াতে এসে তারা একে অপরের দিকে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছিলেন। একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখছিলেন।
কিন্তু যখন রাত নেমে এলো তখন অচেনা এই গ্রহে তিনজনেরই একটু ভয় ভয় করতে লাগলো। প্রচণ্ড একাকীত্বে ভুগতে লাগলেন প্রত্যেকেই। তিনজনই নিজ নিজ ভাষায় মাকে ডাকলেন। প্রত্যেকেরই ভাষা আলাদা, কিন্তু সবাই বুঝলেন যে তারা সবাই মাকে ডেকেছেন। তখনই প্রত্যেকে উপলব্ধি করলেন যে- তারা একই সময়ই একই বিষয় অনুভব করছেন। তারপর তারা একে অপরের সঙ্গে কথা বললেন, জানলেন ও গান গাইলেন।
সকাল হতেই এক মঙ্গলবাসীর দেখা পেলেন তারা। দেখতে এতই ভয়ংকর ছিল সে যে তিনজনই একত্রিত হয়ে পারমাণবিক অস্ত্র চালাতে লাগলেন তার দিকে। মঙ্গলবাসী ভাবলো, মানুষ এত ভয়ানক প্রাণী! কিন্তু তার কিছু না হলেও একটি পাখি তার বাসা থেকে টুপ করে মাটিতে পড়ে গেল। মঙ্গলবাসী সেই পাখিটিতে তুলে সেবা করতে লাগলো।
তখন তিনজন মহাকাশচারীরই মন খারাপ হয়ে গেল। তারা বুঝলো যে তাদের এবং এলিয়েনদের অনুভূতি একই। এলিয়েনের সঙ্গে হাত মেলালেন তারা। তখন তারা ঠিক করলেন এখানে আর অনর্থ করবেন না, নিজ গ্রহে ফিরে যাবেন।
এ ঘটনা পৃথিবী ও অন্যান্য গ্রহের যারা দেখলেন, তারা বুঝলেন- প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে আলাদা। তবে বোঝাপড়ার জায়গায় আসাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা [email protected] সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!