আমাদের স্কুল সাহিত্য ক্লাব

ক্লাবের মূল লক্ষ্য বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য সম্পর্কে সবার মনে কৌতূহল তৈরি করা।

মিনহাজুল আবেদীন সিয়ামমিনহাজুল আবেদীন সিয়াম
Published : 4 May 2023, 07:07 AM
Updated : 4 May 2023, 07:07 AM

ঢাকার তেজগাঁও থানার ফার্মগেট এলাকার অন্যতম স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল। এখানকার কিছু শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠা করেছে সাহিত্য সংগঠন, নাম দিয়েছে ‘গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল সাহিত্য ক্লাব’।

২০২০ সালের ১৫ মার্চ ক্লাবটির যাত্রা শুরু হয়, ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সুমিত সাহা। তবে কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে এ উদ্যোগটি পূর্ণতা পায়নি। পরবর্তীতে ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে ক্লাবের কার্যক্রম পুরোপুরি চলছে।

আমাদের ক্লাবের মডারেশনের দায়িত্বে আছেন স্কুলের সিনিয়র শিক্ষক ছড়াকার রমজান মাহমুদ স্যার। ক্লাবটি পুরোদমে শুরু হওয়ার পর খুব অল্প সময়েই জাতীয় পর্যায়ে সফলতা পায়। বাংলা সাহিত্য নিয়ে আমাদের ক্লাব এককভাবে কাজ করেছে জাতীয় পর্যায়ে। ২০২২ সালের ২৪ ডিসেম্বর ‘প্রথম গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল জাতীয় সাহিত্য উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়। এর আগে একটি আন্তঃস্কুল সাহিত্য উৎসব ও একটি সাহিত্য আসরের আয়োজনেও সফল হয় ক্লাবটি।

প্রথম গবর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল জাতীয় সাহিত্য উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা, কথাসাহিত্যিক-সাংবাদিক আনিসুল হক, ছড়াকার সুজন বড়ুয়া ও আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তারসহ গুণীজনরা। এটি আমাদের জন্য ছিল আনন্দের ও সৌভাগ্যের।

প্রতিষ্ঠাতা সুমিত সাহা, ক্লাবের বর্তমান উপদেষ্টা ও সভাপতি কামরুল হাসান তামিম এবং ক্লাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিনিয়ত ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে আমিও সাহিত্য ক্লাবে যুক্ত হয়েছি প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে। আমরা চাই এ সাহিত্য ক্লাবের হাত ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আমাদের স্কুলের প্রতিটি শিক্ষার্থী সাহিত্যের সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করতে পারুক।

আমাদের ক্লাবের মূল লক্ষ্য হলো বাংলা ভাষা এবং বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন পর্যায় সম্পর্কে সবার মনে কৌতূহল তৈরি করা। বাংলা বানান ও উচ্চারণের সঠিক দিকগুলো সম্পর্কে সবাইকে জানানো। আজকের শিশু ও কিশোরদের বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবগত রাখা। আমাদের এই যান্ত্রিক জীবনে একজন কিশোর-কিশোরীকে প্রকৃতির স্নিগ্ধতা দেওয়া।

সাহিত্যকে বলা হয় সমাজের আয়না, যেখানে সমাজের প্রতিবিম্ব ফুটে ওঠে, সমাজের বিভিন্ন রূপ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অর্থাৎ চোখের সামনে ভেসে উঠবে তখনকার অথবা সেই সময়কার পরিস্থিতি, ন্যায়-অন্যায় প্রভৃতি। ফলে তার মন এবং চিন্তার গঠনে আত্মোপলব্ধি হবে।

যে মানুষ কখনো জঙ্গল দেখেনি, সে জঙ্গলের মাঝে রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আরণ্যক’ উপন্যাসটি পড়ার মাধ্যমে। এভাবে বিভিন্ন গল্প-উপন্যাস বা সাহিত্যের যেকোনো শাখার বই পড়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে নিয়মিত। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও সাহিত্যের বিভিন্ন বই ছাত্র-ছাত্রীদের উপকারে আসে।

সাহিত্যচর্চা করে একজন ছাত্র তার শব্দভাণ্ডার বাড়াতে দারুণ সফল হবে। ছাত্রজীবনে সাহিত্যচর্চার গুরুত্বপূর্ণ অপরিসীম। এখন পর্যন্ত আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণে শতভাগ সফলতা লাভ করতে না পারলেও, তা বাস্তবায়নের জন্য সব পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, নেবো।

মিনহাজুল আবেদীন সিয়াম: প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক, গভর্নমেন্ট সায়েন্স হাই স্কুল সাহিত্য ক্লাব