শুভ জন্মদিন বিপ্লবী
Published : 05 May 2025, 05:44 PM
বাঙালি নারীকে তিনি দেখিয়েছিলেন যে, নারীরাও দেশের জন্য লড়াই করতে পারে। তিনি শিখিয়েছিলেন, কীভাবে বিপ্লবের জন্য এক জীবন দিয়ে সংগ্রাম করা যায় এবং শোষকের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে লড়াই করা যায়। তিনি বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের প্রথম নারী শহীদ।
প্রীতিলতা ১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের ধলঘাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জগদ্বন্ধু ওয়াদ্দেদার ছিলেন মিউনিসিপ্যাল অফিসের হেড কেরানী, এবং মা প্রতিভাদেবী ছিলেন গৃহিনী। প্রীতিলতাকে তার মা আদর করে ডাকতেন রাণী বলে।
প্রীতিলতা ছিলেন তিন ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে একজন। তার শৈশব কেটেছে নানা বাড়িতে, আর তিনি মায়ের নানা কাজে সহায়তা করতেন। লাজুক স্বভাবের ছিলেন প্রীতিলতা।
তার স্বপ্ন ছিল লিঙ্গ বৈষম্যহীন সমাজ ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন মুক্ত দেশের। এর লক্ষ্যেই এগিয়ে গেছেন তিনি।
১৯৩২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে, মাস্টার দা সূর্য সেনের নেতৃত্বে প্রীতিলতা ইংরেজদের পাহাড়তলী ইউরোপিয়ান ক্লাব আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন।
এই আক্রমণের দায়িত্ব ছিল আরেক বিপ্লবী নারী কল্পনা দত্তের হাতে। কিন্তু তিনি পুলিশ হাতে ধরা পড়ে যান। এরপর আক্রমণের দায়িত্ব এসে পড়ে প্রীতিলতার ওপর।
তখন তার বয়স ছিল মাত্র একুশ বছর। প্রীতিলতা দমে যাননি। সাহসী এই কন্যা ছদ্মবেশে ক্লাব আক্রমণ করেন।
যদিও আক্রমণ সফল হয়, কিন্তু তিনি ক্লাব থেকে বের হয়ে আসতে পারেননি। ক্লাবের কয়েকজন ইংরেজ অফিসারের হাতে রিভলবার ছিল। ফেরার পথে প্রীতিলতার বাম পায়ে গুলি লাগে। তিনি ধরা পড়ার আগেই পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন।
অত্যাচারী ঔপনিবেশিক শোষকদের হাতে ধরা পড়লে যাতে তারা কোনো রকম তথ্য না পায় এবং এ ধরনের নির্লজ্জ শাসকদের হাতে নিজেকে আত্মসমর্পণ করার থেকে মৃত্যুকে বরণ করাকেই অধিক শ্রেয় মনে করেছেন তিনি।
প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার তার জীবন দিয়ে আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে মাতৃভূমির জন্য সবকিছু ত্যাগ করা যায়।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: ঢাকা।