বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বাইরে রোগী এভাবে বাড়তে থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ বাড়বে।
Published : 23 Aug 2023, 11:06 AM
ডেঙ্গু সারাদেশে ছড়িয়েছে আগেই, এখন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ঢাকার বাইরেই বেশি দেখা যাচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, চলতি অগাস্টে যত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তার ৬০ শতাংশই ঢাকার বাইরের।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বাইরে রোগী বাড়তে থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় চাপ বাড়বে। এজন্য সারাদেশেই মশা নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে।
দেশে এইডিস মশাবাহিত এই রোগের ভয়াহতা এবছরই সবচেয়ে বেশি। হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে লাখ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যাও পাঁচশ ছুঁই ছুঁই পর্যায়ে গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১ অগাস্ট থেকে ২২ অগাস্ট মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫২ হাজার ৫২৭ জন রোগী।
তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে ৩১ হাজার ৫৫৭ জন, যা মোট ভর্তি রোগীর ৬০ দশমিক ০৮ শতাংশ। এ সময় ২০ হাজার ৯৭০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে ঢাকায়, যা ৩৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এবছর এপর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ৩৫৯ জন রোগী। এরমধ্যে ঢাকায় ৫০ হাজার ১৭০ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৪ হাজার ১৮৯ জন।
জুন পর্যন্ত ঢাকার তুলনায় অন্য জেলাগুলোতে রোগী সংখ্যা কম থাকলেও জুলাই থেকে তা দ্রুত বাড়তে থাকে।
৩০ জুন পর্যন্ত তথ্যে দেখা যায়, সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ ঢাকা মহানগরের এবং ২৩ দশমিক ৮০ শতাংশ বাইরের বিভিন্ন জেলায়।
জুলাই মাসে ঢাকায় রোগী ছিলেন ৫৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ৪৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ ছিলেন ঢাকার বাইরের জেলায়।
১০ জুলাই ঢাকার বাইরে ভর্তি রোগীর সংখ্যা প্রথম ১ হাজার ছাড়ায়।
২০ জুলাই সারাদেশে ১৭৫৫ জন রোগী ভর্তি হয়, যাদের বেশিরভাগ ঢাকার বাইরের। সেদিন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ৯১০ ঢাকার বাইরে এবং ৮৪৫ জন রোগী ছিল ঢাকার। এরপর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ছাড়া বাকি সময় ঢাকার চেয়ে ঢাকার বাইরে রোগী বেশি ভর্তি হচ্ছেন।
১৪ অগাস্ট মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যায় ঢাকাকে ছাড়িয়ে যায় বাইরের জেলাগুলো। সেদিন পর্যন্ত সারাদেশে ৮৭ হাজার ৮৯১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন, যার মধ্যে ঢাকায় ৪৩ হাজার ৬৬৫ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪৩ দশ হাজার ২২৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকার বাইরেও এখন এইডিস মশার উপস্থিতি বেড়েছে। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যাও সেখানে বাড়ছে।
“সেসব জায়গায় অনুকূল পরিবেশে মশাও বাড়ছে। মশা না কামড়ালে ডেঙ্গু হবে না, এজন্য মশা মারতে হবে। মশা কমলে রোগীও কমবে, তারপরও যারা আক্রান্ত হবে তাদের যত্ন নেওয়া সহজ হবে। এখন তো দম ফেলার সুযোগ নেই হাসপাতালগুলোয়।”
জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঢাকার বাইরের রোগী বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোয় চাপ তৈরি হচ্ছে। এজন্য মশা নিয়ন্ত্রণের উপর জোর দিতে হবে।
ঢাকার বাইরে জেলা, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল, বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই তিনি বলেন, “কিন্তু রোগী বেশি হয়ে গেলে সেখানেও চাপ তৈরি হবে। রোগীরা ঢাকায় ছুটবে। এজন্য মশা নিয়ন্ত্রণ জরুরি।”