সিঙ্গাপুরে বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যেষ অন্তত ১০ বাংলাদেশি মশাবাহিত রোগ জিকায় আক্রান্ত হওয়ার খবরের পর দেশটিতে বসবাতরত নাগরিকদের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ হাই কমিশন।
Published : 02 Sep 2016, 01:38 AM
বৃহস্পতিবার দেওয়া নির্দেশনায় জিকা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাসে ‘যথাযথ সতর্কমূলক’ পদক্ষেপ নিয়ে চলাচল করতে সব বাংলাদেশির প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের হাই কমিশনার মাহবুব উজ জামান।
এর আগে দিনের শুরুতে সিঙ্গাপুরে কর্মরত বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে ১০ বাংলাদেশি রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনের প্রকাশ করে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তবে কর্তৃপক্ষ ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের কারও নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি।
হাই কমিশনার মাহবুব উজ জামান জানান, আক্রান্তদের সবার ক্ষেত্রেই রোগের লক্ষণ দেখা গেছে মৃদু মাত্রায়। তারা হয় ইতোমধ্যেশ সেরে উঠেছেন, নয়তো সেরে উঠছেন।
হাই কমিশন বলছে, সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।
এছাড়া যেসব বাসা-বাড়িতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা থাকেন, হাই কমিশনের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তার অনেকগুলো পরিদর্শন করেছেন বলেও এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
গত বছর ব্রাজিল ও আশেপাশের দেশগুলোতে জিকার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জিকার কারণে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।
এর তিন মাসের মাথায় সিঙ্গাপুরে প্রথম জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী করা শনাক্ত হয়। ৪৮ বছর বয়সী ওই ব্যজক্তি ব্রাজিল ভ্রমণে গিয়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
গত শনিবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক মালয়েশীয় নারীর সিঙ্গাপুরে এসে জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশ করলে বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ পর্যন্ত তারা ১১৫ জনের শরীরে জিকা ভাইরাসের উপস্থিতি পেয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসা নির্মাণ শ্রমিক। আক্রান্ত সবাই সিঙ্গাপুরের একই অঞ্চলের বাসিন্দা বা একই এলাকায় কাজ করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল বলছে, সিঙ্গাপুরের জিকা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটায় শহরটিকে তারা গর্ভবতী নারীদের জন্যব ঝুঁকিপূর্ণ শহরের তালিকায় যুক্ত করেছে।
জিকার লক্ষণ
>> প্রতি পাঁচজন রোগীর মধ্যে একজনের মধ্যে হালকা জ্বর, চোখে লাল হওয়া বা কালশিটে দাগ পড়া, মাথা ব্যথা, হাড়ের গিঁটে ব্যথা ও চর্মরোগের লক্ষণ দেখা যায়।
>> বিরল ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তি গিলিয়ান-ব্যারি সিনড্রোমেও ভুগতে পারেন; এর ফলে সাময়িক পক্ষাঘাত কিংবা ‘নার্ভাস সিস্টেম ডিজঅর্ডারের’ মতো ঘটনা ঘটতে পারে।
>> গর্ভবতী মা মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হলে তার অনাগত শিশুর মাথা স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট হতে পারে, মস্তিষ্কের গঠন থাকতে পারে অপূর্ণ। এ রোগকে বলে মাইক্রোসেফালি।
>> এ ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বা ওষুধ নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বিশ্রাম ও বেশি করে তরল খাবার খেতে পরামর্শ দেয়া হয়।