নীতেশ তিওয়ারির এই ছবি যে ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে, সেখানে তা বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছে ইহুদি মানবাধিকার সংস্থা।
Published : 27 Jul 2023, 08:32 PM
নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত ছবি ‘বাওয়াল’ মুক্তির আগে থেকেই ছিল বিতর্কে। ছবিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ঘটে যাওয়া হলোকস্টের সঙ্গে এক যুগলের সম্পর্কের টানাপড়েনের তুলনা টেনেছেন পরিচালক। আর এটি নিয়েই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল ‘বাওয়াল’।
বরুণ ধাওয়ান ও জাহ্নবী কাপুর অভিনীত ছবিটি গত ২১ জুলাই একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তির পর সেই বিতর্ক আরো উসকে উঠেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, এবার ছবিটি ওটিটি থেকে সরানোর দাবি তুলেছে সাইমন ওয়েসেনথাল সেন্টার নামে একটি ইহুদি মানবাধিকার সংস্থা।
‘বাওয়াল’ এর কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারের একটি দৃশ্যে জাহ্নবীকে বলতে শোনা যায়- “সব সম্পর্কই এক সময় আউশভিৎসের মতো পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায়”।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মান বাহিনীর বীভৎসতার এক নাম আউশভিৎস ক্যাম্প। ধা্রণা করা হয়, পোল্যান্ডে গড়ে তোলা এই ক্যাম্পে লাখ লাখ ইহুদিকে হয় গ্যাস চেম্বারে, নয়তো জীবন্ত পুড়িয়ে বা গুলি করে হত্যা করে হিটলারের বাহিনী।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ নিধন যজ্ঞের শিকার হয়েছিলেন এখানে৷
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে ১৯৪৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সোভিয়েত বাহিনী আউশভিৎস দখল করে বন্দীদের মুক্ত করে।
ছবির সমালোচনা করে ইহুদি মানবাধিকার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, “ছবির মুখ্য চরিত্রের মাধ্যমে এই সংলাপ পরিবেশন করে নীতেশ তিওয়ারি প্রায় ৬০ লাখ ইহুদির স্মৃতিকে অমর্যাদা করেছেন। শুধু তাই নয়, অ্যাডলফ হিটলারের গণহত্যা তথা হলোকাস্টের মর্মান্তিক পরিণতিকে লঘু করেছে এই ছবি।”
নীতেশ তিওয়ারির এই ছবি যে ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে, সেখানে তা বন্ধ করার আর্জি জানিয়েছে ইহুদি মানবাধিকার সংস্থা।
আনন্দবাজার বলছে, মুক্তির পর এতদিন ছবির প্রশংসাকেই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে প্রচার করছিলেন বরুণ ও জাহ্নবী। তবে সমাজমাধ্যমের পাতায় সমালোচনা আরও তীব্র হওয়ায় দিন কয়েক আগে এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন বরুণও।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বরুণ বলেন, “আমি অনেকের থেকেই শুনেছি, কিছু দর্শকের আমাদের ছবি দেখে গায়ে লেগেছে। আমি বুঝতে পারছি না কেন। অনেক ইংরেজি ছবিতেই তো এমন অনেক কিছু দেখানো হয়। হলিউড বলে ওদের যা ইচ্ছা তাই করার স্বাধীনতা রয়েছে। আর আমরা কোনও কিছু করলেই তাতে অসুবিধা!”
তিনি আরও বলেন, “আমি জানি এমন অনেককে যারা সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া একটি ভীষণ জনপ্রিয় ছবির একটি দৃশ্য দেখে বিরক্ত হয়েছেন। ওই দৃশ্যটা আমাদের দেশের সংস্কৃতির জন্য বেশ গুরুতর। তাতে কারও কোনও অসুবিধা নেই। তখন সবার সমালোচনার ভাষা হারিয়ে যায়!”
নাম উল্লেখ না করলেও বরুণ যে ক্রিস্টোফার নোলানের ‘ওপেনহাইমার’কেই কটাক্ষ করেছেন, তা স্পষ্ট।
‘ওপেনহাইমারের’ একটি যৌনদৃশ্যে গীতা পাঠ করা নিয়ে চটেছেন হিন্দুদের একটি অংশ। তারা ‘হলিউড বয়কটের’ ডাক দিয়েছে, পাশাপাশি দৃশ্যটি সিনেমা থেকে বাদ দেয়ারও দাবি তুলেছে।