অভিনেতা আবুল হায়াত তার বাবার কাছে শিখেছিলেন, জীবনের কাছে কম চাইলে, পাওয়া যাবে বেশি; আর বেশি বেশি চাইলে হতাশ হতে হবে।
“আমি সেভাবেই জীবন পার করে চলেছি। এজন্য জীবনের কাছে আমার খুব বেশি চাওয়ার নেই। আমি যা চেয়েছি, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। মানুষ আমাকে ভালোবেসেছে। মানুষের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার কোনো তুলনা নাই।”
জন্মদিনে গ্লিটজের কাছে এভাবেই নিজের জীবন দর্শন বলছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত এই অভিনেতা। বুধবার জীবনের ৭৮ বছর পুর্ণ করলেন তিনি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ছিল অভিনেত্রী লাকী ইনামের জন্মদিন। সেদিন তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেইসবুকে পুরনো একটি ছবি শেয়ার করেন নাগরিক নাট্যাঙ্গনের কর্মী কামরুজ্জামান রনি। সেই ছবিতে দেখা যায় আবুল হায়াত ও লাকী ইনামকে।
সেই ছবিটি দেখার পর আবুল হায়াত বললেন, ১৯৮৬ সালে আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘আগল ভাঙার পালা’ নামে একটি মঞ্চনাটকের দৃশ্য সেটি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে লন্ডনে গিয়েছিলেন তারা। সেখানে রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন নাটকের অংশ নিয়ে ‘আগল ভাঙার পালা’ নামে এক ঘণ্টার ওই নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল।
ছবিতে রক্তকরবী নাটকের ‘নন্দিনী’ চরিত্রে অভিনয় করেন লাকী ইনাম, আবুল হায়াত করেছিলেন ‘অধ্যাপক’ চরিত্র।
আবুল হায়াত বলেন, “পরে ঢাকায় আর কোনো প্রদর্শনী করেছিলাম কিনা, এখন আর মনে নেই। তবে লন্ডনে আমরা একটি শো করেছিলাম। নাটকটির খুব বেশি মঞ্চায়ন হয়নি।”
বর্ষিয়ান এই অভিনেতা জানালেন, জন্মদিন উপলক্ষে মাঝরাতে বাসায় কেক কাটা হয়েছে। তার নাতনীর জন্মদিনও যে একই দিনে।
“নাতনী মানে, নাতাশার মেয়ে তৃষা। দুজন একসঙ্গে কেট কেটেছি। দুপুরে একটা টেলিভিশন থেকে ডেকেছে। সেখানে কথা বলব। আর রাতে বাসায় পরিবারের সদস্যরা আসবে, তাদের নিয়ে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করব, আড্ডা দেব। আমার মেয়ে বিপাশা হায়াত তো আমেরিকায়, ওকে মিস করছি। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে রাতে আনন্দ করব।”
১৯৪৪ সালে জন্ম নেওয়া আবুল হায়াত বাংলাদেশের মঞ্চ আর টেলিভিশনের সোনালী সময়ের অভিনেতাদের একজন। প্রথম নাটক ছিল ১৯৬৯ সালের ইডিপাস, সব মিলিয়ে পাঁচশর বেশি নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন।
হুমায়ূন আহমেদের তুমুল জনপ্রিয় বহু নাটকেও দেখা গেছে আবুল হায়াতকে। অভিনয় করেছেন অর্ধশত সিনেমায়। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনয় শিল্পী কয়েকটি বইও লিখেছেন।