‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার সেন্সর ছাড়পত্র না পাওয়ার হতাশ নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী আবারও তার ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়েছেন ফেইসবুকে।
তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, বাংলাদেশে জন্ম নেওয়ার ‘অপরাধেই’ কি তার সিনেমাটি সাড়ে তিন বছর আটকে রাখা হয়েছে?
শুক্রবার ওই ফেইসবুক পোস্টে ফারুকী লিখেছেন, “আপনারা দেখছেন আমি কতোটা নিয়ন্ত্রণ করছি আমার আবেগ। এমনকি অ্যাবসোলিউট বুলশিটের উত্তরও না দিয়া কনফ্লিক্ট এড়াইয়া গেছি। কিন্তু আজকে সকালে একটা খবর পড়ে, যদিও খবরটা আগে থেকেই জানতাম, আমার রাগ, ক্ষোভ, অভিমান আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারলাম না।”
কী সেই খবর? ২০১৬ সালে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা নিয়ে নির্মিত ভারতীয় চলচ্চিত্র ‘ফারাজ’ শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছে।
ফারুকী লিখেছেন, “আমার ভারতীয় ফেলো ফিল্মমেকার হানসাল মেহতার জন্য আমি আনন্দিত যে সে তার ছবিটা শেষ করে মুক্তি দিতে পারছে। হয়তো দ্রুতই আপনারাও সেটা দেখতে পারবেন। একই সঙ্গে আমি একজন বাংলাদেশি ফিল্মমেকার হিসাবে অনুতপ্ত, ক্ষুব্ধ, বিরক্ত।”
গুলশান হামলার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ-ভারত-জার্মান এই তিন দেশের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত হয়েছে ‘শনিবার বিকেল’। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, পরমব্রত, তিশা, ইরেশ যাকের এবং ফিলিস্তিনি অভিনেতা ইয়াদ হুরানি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটি প্রদর্শিত হলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড এখনও ছাড়পত্র না দেওয়ায় দেশে এটি মুক্তি পায়নি।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন দেশের চলচ্চিত্র ও নাটকের কলাকুশলীরা। সিনেমাটির জন্য আদালতে যাওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন নির্মাতা সরয়ার ফারুকী।
টেলিভিশন নাট্য পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড ‘শনিবার বিকেল’কে সেন্সর ছাড়পত্র না দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান সেন্সর আইনের পরিবর্তে সেন্সর গ্রেডেশন পদ্ধতি চালুর দাবি জানিয়েছে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ফেইসবুকে লিখেছেন, তার ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমার কোথাও হোলি আর্টিজানের কোনো উল্লেখ করা হয়নি।
“আমার ছবিতে হোলি আর্টিজানের কোনো রিয়াল ক্যারেক্টার পোর্ট্রে করা হয় নাই, তারপরও স্রেফ এই দেশের হতভাগা ফিল্মমেকার হওয়ার অপরাধে আমার ছবিটাকে সাড়ে তিন বছর আটকে রাখা হইলো। আমি কাকে অভিসম্পাত দিবো? কাকে? কাকে? নিজের জন্মকে তো আর অভিসম্পাত দেয়া যায় না।”