চট্টগ্রামে চালু হল স্টার সিনেপ্লেক্স

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ ও নায়িকা পরীমনি।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Dec 2022, 06:52 PM
Updated : 2 Dec 2022, 06:52 PM

চট্টগ্রামের বাসিন্দাদের সিনেমা হলে ফেরানোর, ভালো পরিবেশে বিনোদনের সুযোগ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে বন্দরনগরীতে শুরু হল স্টার সিনেপ্লেক্সের যাত্রা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর চকবাজার এলাকার বালি আর্কেড শপিং কমপ্লেক্সে স্টার সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধন হয়। সরকারের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ ও নায়িকা পরীমনি দম্পতি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমাদের শৈশবে চট্টগ্রামে সিনেমা হল ছিল। তখন আমার অভ্যেস ছিল সিনেমা দেখার। এ সিনেপ্লেক্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামবাসীর কাছে আবার সিনেমা দেখার সুযোগ এল।

“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে অনেক স্ক্রিন করার জন্য অনুদানও দিয়েছেন। তরুণরা যেন বিপথগামী না হয়, সুন্দর পরিবেশে এই সিনেপ্লেক্সটি করায় উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ।”

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, “আমাদের নিজের শহরে স্টার সিনেপ্লেক্সের শাখা উদ্বোধন করায় মাহবুব রহমান রুহেলকে ধন্যবাদ। বাংলা সিনেমা অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়েছে। আমরাও অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়েছি।

“আমাদের সিনেমা শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কলকাতায় হাওয়া ছবি দেখতে সকাল ৯টা থেকে এক কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন দিয়েছে। চট্টগ্রাম শহরে ৩০টা সিনেমা হল ছিল। গত ১ বছরে দেশে বন্ধ হওয়া দুইশ সিনেমা হল চালু হয়েছে। স্টার সিনেপ্লেক্সসহ নতুন সিনেপ্লেক্স হচ্ছে।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বন্ধ হল চালুর জন্য ১০০০ কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠন করেছেন। অনেক সিনেমা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্বের বহু দেশে প্রদর্শিত হয়েছে। শুধু সিনেমা হল নয় তিনি নতুন সিনেমাও বানিয়েছেন। আশা করি মাহবুব রহমান রুহেলের হাত ধরে দেশে আরো অনেক সিনেপ্লেক্স হবে।”

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব রহমান রুহেল বলেন, “আমরা সবচেয়ে বড় ধাক্কা পেয়েছি মহামারীর সময়ে। বসুন্ধারাটা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তারপরও আমি ধরে রেখেছি। বিশ্বাস ছিল যে মানুষ ফিরে আসবে, হলে ছবি দেখবে। এটা সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

“মুভি দেখা, একসাথে আনন্দ করা– মানুষের ডিএনএ’র মধ্যে আছে। যখনই মানুষ সমস্যায় থাকে, তখন ছবি দেখাকে প্রাধান্য দেয়। যতই আমাদের সমস্যা থাকুক, এন্টারটেইনমেন্ট সবসময় দরকার। মানুষ তাদের দুঃখ ভুলতে ছবি দেখে। ২০২৩ হয়ত টাফ সময় যেতে পারে। আশা করব বাংলাদেশের পরিচালকরা ভালো ভালো ছবি করবে।”

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্প ঘুরে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে রুহেল বলেন, “পরান ও হাওয়ার মত ছবি হয়েছে। আশা করি আরও ভালো ছবি হবে। মানুষ ভালো সিনেমা উপভোগ করতে পারবে। চট্টগ্রামের পর আমরা রাজশাহী, খুলনা ও কুমিল্লাতে সিনেপ্লেক্স করার কাজ এগিয়ে নিচ্ছি।”

নান্দনিক পরিবেশ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্বলিত সাউন্ড সিস্টেম, জায়ান্ট স্ক্রিনসহ বিশ্বমানের সিনেমা হলের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিয়েই সিনেপ্লেক্সগুলো নির্মিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরীমনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ সিনেমা দেখতে চায়। তবে কষ্ট করে নয়। বিনোদনটা মানুষ একটু আরামের সাথেই করতে চায়। তাই সিনেপ্লেক্সেই ছবি দেখুক। আশা করি এ যাত্রা সফল হবে। আমিও সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখতে পছন্দ করি।”

স্বামী রাজের সাথে এবারই প্রথম চট্টগ্রামে এসেছেন জানিয়ে পরীমনি বলেন, “এখানে কয়েকটা জায়গায় যাওয়ার প্ল্যান আছে। এখনো কোথাও যাওয়া হয়নি। যাব।”

মাহবুব রহমান রুহেলের কাছে প্রশ্ন ছিল, রাজ ও পরীমনিকে নিয়ে কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন কিনা। জবাবে রুহেল বলেন, “সেটা নির্ভর করবে স্টোরি এবং পরিচালকের উপর। যদি স্টোরি ডিমান্ড করে এবং পরিচালক চান তখন হতে পারে।”

শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ওয়াসিকা আয়েশা খান ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনি, জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও বালি আর্কেডের পরিচালক সোলায়মান আলম শেঠ, প্রধান নির্বাহী আফতাব আলম শেঠ উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

প্রথম দিনে সিনেপ্লেক্সের তিনটি হলে ‘ন ডরাই’, ‘মেইড ইন চিটাগাং’ এবং ‘ব্ল্যাক প্যানথার-২’ প্রদর্শিত হয়। তিনটি হলে ৮৬, ১৯৬ ও ১২৫টি আসন আছে।