নেগিশি ত্রিশের দশকের গান ‘মুজো নো ইউম’ বাজিয়ে প্রথমবারের মত তার উদ্ভাবিত কারাওকে মেশিন পরীক্ষা করেন।
Published : 19 Mar 2024, 11:40 AM
বিশ্বের প্রথম কারাওকে মেশিনের উদ্ভাবক শতবর্ষী জাপানি উদ্যোক্তা শিগেইচি নেগিশি মারা গেছেন।
জাপানের কারাওকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিরো কাতাওকার বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে গত সপ্তাহে নেগিশির মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ১০০ বছর।
১৯২৩ সালে জন্ম নেওয়া নেগিশি একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তরুণ বয়সে। সেই প্রতিষ্ঠান থেকে সত্তরের দশকের শুরুতে কারাওকে মেশিন তৈরি হয়, যদিও নাম ছিল ভিন্ন।
নেগিশি ছিলেন একজন সংগীতপ্রেমী। একজন প্রকৌশলীকে সঙ্গে নিয়ে একটি মাইক্রোফোন, স্পিকার এবং টেপ ডক দিয়ে করাওকে মেশিন তৈরি করেন তিনি। এই মেশিনে গান ও মিউজিক চালানোর পাশাপাশি মাইক্রোফোনে কথা বলা যেত।
জাপানে সত্তরের দশকের আগে বা পরে শহরের বার বা রেস্তোরাঁগুলোতে শিল্পীদের লাইভ পারফরমেন্সের প্রচলন ছিল না। সে সময় নেগিশির কারাওকে মেশিন একটি বিপ্লব ডেকে আনে।
লেখক ম্যাট অ্যাল্ট তার ‘পিওর ইনভেনশন: হাউ জাপান মেইড দ্য মর্ডান ওয়ার্ল্ড’ বইতে লিখেছেন, নেগিশি ত্রিশের দশকের গান ‘মুজো নো ইউম’ বাজিয়ে প্রথমবারের মত তার উদ্ভাবিত কারাওকে মেশিন পরীক্ষা করেন।
I took this video of karaoke inventor Shigeichi Negishi in 2018, when @Matt_Alt interviewed him for the book "Pure Invention: How Japan Made the Modern World." I remember how happy Mr. Negishi was showing off his Sparko box. This video still makes me smile. ???? pic.twitter.com/AflgWkLm1L
— Hiroko Yoda (@Ninetail_foxQ) March 16, 2024
তিনি লেখক অ্যাল্টকে বলেছিলেন, “যখন গানের পাশাপাশি স্পিকারে আমার নিজের কণ্ঠস্বরও শুনতে পেলাম, তখন বুঝে গেলাম, আমি নতুন কিছু আবিষ্কার করেছি।“
নেগিশি তার কারাওকে মেশিন বাজারে ছাড়েন ‘স্পার্কো বক্স’ নামে । শুরুতে হাজার চারেক মেশিন তিনি বাজারে ছেড়েছিলেন।
পরে নেগিশির কিছু প্রতিদ্বন্দ্বীও এসে পড়ে বাজারে। সত্তরের দশকে স্পার্কো বক্সের বিপণন বন্ধ করে দেন নেগিশি। তিনি তার আবিষ্কারের পেটেন্ট আর কোনো কোম্পানিকে দেননি।
তবে আধুনিক কারাওকে মেশিন উদ্ভাবনের কৃতিত্ব দেওয়া হয় ডাইসুকে ইনোই নামের একজন জাপানি ব্যবসায়ীকে। তিনি ১৯৭১ সালে কারাওকে মেশিন বাজারে আনেন।
পরে ১৯৮০ সালের দিকে জাপানে ইলেকট্রনিক্স নির্মাতারা নিজস্ব উদ্ভাবনের নতুন সংস্করণের কারাওকে মেশিন বাজারে নিয়ে আসেন, যা পরে কেবল জাপানে নয়, পুরো এশিয়া এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়ে।
জাপানে এখন চার হাজারের বেশি কারওকে বক্স ভেন্যু রয়েছে। ১ লাখ ত্রিশ হাজারের বেশি বারে কারওকে মেশিন ব্যবহার করা হয়। অল জাপান কারাওকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, দেশটিতে কারাওকে এখন ৩৮৭.৯ বিলিয়ন ইয়েনের বাজার।