হ্যারিসন ফোর্ড বলেন, “এটাই আমার শেষ সিনেমা, যা নিয়ে সর্বদা উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলাম। এই চরিত্রটির একটি আবেগময় সমাপ্তি ঘটাতে চেয়েছিলাম।”
Published : 28 Jun 2023, 02:30 PM
মাথায় চিরাচরিত বাঁকানো টুপি পরে ঘোড়ার পিঠে পড়ে চষে বেড়ানো ইন্ডিয়ানা জোন্স সিরিজের কিংবদন্তি প্রত্নতত্ত্ববিদ গতবছরই তার চরিত্রের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কিন্তু চার দশক ধরে রহস্য-রোমাঞ্চে ঠাসা সিরিজের যে চরিত্র সবার মনে গেঁথে আছে, সেই হ্যারিসন ফোর্ড আসলেই ‘শেষ’ বলছেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান অনেকেই। যে কারণে ধারবাহিক এই সিরিজে ফোর্ডের অভিযাত্রার শেষ হচ্ছে কিনা, এখনও এমন প্রশ্নের মুখে পড়েন তিনি।
তবে সাম্প্রতিক এক জিজ্ঞাসায় বিবিসিকে সেই দ্ব্যর্থহীন জবাব দিয়েছেন হ্যারিসন ফোর্ড।
তিনি বলেন, “এটাই আমার শেষ সিনেমা। আমি এই ফাইনাল সিনেমা নিয়ে সর্বদা উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলাম।”
সর্বশেষ ২০০৮ সালে সিরিজের চতুর্থ সিনেমা ‘ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য কিংডম অব দ্য ক্রিস্টাল স্কাল’-এ দেখা যায় ফোর্ডকে। দীর্ঘ বিরতিতে ধারণা করা হয়েছিল বয়সের কারণে ফোর্ড হয়তো ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’ হয়ে আর ফিরবেন না। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে ইঙ্গিত মেলে ফোর্ড ফিরছেন।
সিরিজের পঞ্চম সিনেমা ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য ডায়াল অব ডেসটিনি’র টিজার প্রকাশ হলে দেখা যায় চিরতরুণ এই নায়ক মাথায় হ্যাট চাপিয়ে ফিরেছেন চিরায়ত লুকে আবারও সেই সাহসী প্রত্নতত্ত্ববিদের ভূমিকায়। আর এর মধ্য দিয়েই ইতি টানার কথা জানিয়ে আসছেন ফোর্ড।
গত মে মাসে ৭৬তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে এই সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছিল। একদিন পর ৩০ জুন মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।
৮০ বছর বয়সী হ্যারিসন ফোর্ড জানান, ভালোবাসার এই চরিত্রটির একটি ‘আবেগময় সমাপ্তি’ দিতে চান।
“৪০ বছর ধরে আমরা এই সিনেমাগুলো তৈরি করছি। চরিত্রের ওপর বয়সের প্রভাব আমরা অস্বীকার করতে পারি না এবং একটি জটিল গল্পের মধ্যে দিয়ে আমি সেই শেষ দেখতে চেয়েছিলাম।”
অন্যদিকে একই চরিত্রে বিভিন্ন গল্পে আর হাজির হতেও চান না হ্যারিসন ফোর্ড। বিবিসিকে তিনি বলেন, “একই জিনিস বারবার করতে এতটা আগ্রহী আমি ছিলাম না, এই চরিত্রটির একটি আবেগময় সমাপ্তি ঘটাতে চেয়েছিলাম।
“আমি দর্শকদের জন্য খুবই কৃতজ্ঞ যে আমরা সেটি পেয়েছি। শুধু নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম যে দর্শকরা চূড়ান্ত পুনরাবৃত্তিতে সন্তুষ্ট হবে।”
দর্শকের কাছে শেষ সিনেমাটি কেমন হবে সেটি নিশ্চিত নাহলেও কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পেয়েছে।
একইসময়ে বিবিসি তার পর্যালোচনায় জানিয়েছে, ফোর্ডের অতীতের দুঃসাহসিক কাজগুলো কতটা প্রাণবন্ত ছিল তার একটি হতাশাজনক রিমাইন্ডার হল এই সিনেমা।
আবার ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দ্য ডায়াল অব ডেসটিনি’ সিনেমাই সিরিজের প্রথম, যেটি স্টিভেন স্পিলবার্গ পরিচালনার কাজটি করেননি। তবে একজন নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন তিনি।
‘ইন্ডিয়ানা জোনস’ ব্যাপক সাড়া ফেলে মূলত দুটো কারণে। প্রথমত এই ছবির নির্মাতা ছিলেন চলচ্চিত্রকার স্টিভেন স্পিলবার্গ আর দ্বিতীয় কারণ হল অভিনেতা হ্যারিসন ফোর্ড।
এবারে স্টিভেন স্পিলবার্গ প্রযোজনায় থাকলেও নির্দেশনার দায়িত্ব তুলে দেন ‘লোগান’ ও ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’খ্যাত পরিচালক ম্যানগোল্ডের কাঁধে।
ফোর্ডের সঙ্গে স্পিলবার্গ প্রথম এই ফ্র্যাঞ্চাইজিটিতে জুটি বেঁধেছিলেন চার দশক আগে। ‘ইন্ডিয়ানা জোনস’ সিরিজের প্রথম ছবি ‘রেইডার্স অব দ্য লাস্ট আর্ক’ মুক্তি পায় ১৯৮১ সালে।
এরপর ১৯৮৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দি টেম্পল অফ ডুম’। ওই সিনেমায় ভারতীয় অভিনেতা অমরেশ পুরীও অভিনয় করেছিলেন।
১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া তৃতীয় পর্বে ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স অ্যান্ড দি লাস্ট ক্রুসেড’ এ হ্যারিসন ফোর্ডের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন প্রয়াত শন কনরি।
এরপর ২০০৮ সালে দর্শকরা দেখেন সিরিজের চতুর্থ সিনেমা ‘ইন্ডিয়ানা জোনস অ্যান্ড দ্য কিংডম অব দ্য ক্রিস্টাল স্কাল’।
আরও পড়ুন-
‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’র টিজার দেখিয়ে হ্যারিসন ফোর্ড বললেন, এটাই শেষ
কান উৎসবে হ্যারিসন ফোর্ডকে বিশেষ সম্মাননা
আবার 'ইন্ডিয়ানা জোনস', থাকছেন ফোর্ড
আসছে ইন্ডিয়ানা জোন্স ছবির পঞ্চম পর্ব