‘কপিরাইট’ মামলায় জিতে গেলেন এড শিরান

মামলা জিতে শিরান বলেন, “আমি পুরোপুরি হতাশ যে এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ আদালত পর্যন্ত এসেছে।“

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2023, 07:37 AM
Updated : 5 May 2023, 07:37 AM

‘থিংকিং আউট লাউড’ গানটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে কপিরাইট মামলায় জয় পেয়েছেন ব্রিটিশ সংগীতশিল্পী এড শিরান।

বিবিসি জানিয়েছে, নিউ ইয়র্কের ম্যানহটন ফেডারেল আদালত বৃহস্পতিবার এই রায় দেয়। শিরান এ মামলা হারলে গান ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

রায়ে আদালত বলছে, শিরান তার ওই ‘হিট’ গানটি রচনায় শিল্পী মারভিন গে’র ‘লেটস গেট ইন অন’ গানটি নকল করেননি, বরং স্বাধীনভাবে গানটি তৈরি করেছেন।

রায় ঘোষণার পর শিরান আদলত কক্ষে উঠে দাঁড়িয়ে দলের সদস্যদের আলিঙ্গন করেন।

আদালতের বাইরে এসে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “খুব খুশি আমি। মনে হচ্ছে আমাকে অবসরে যেতে হচ্ছে না। কিন্তু আমি একই সঙ্গে পুরোপুরি হতাশ যে এই ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ আদালত পর্যন্ত এসেছে।“

নিজেকে কখনোই ‘পিগি ব্যাংক’ হতে দেবেন না মন্তব্য করে শিরান বলেন, “জুরির সিদ্ধান্ত যদি ভিন্ন হত, তাহলে গীতিকারদের সৃজনশীল স্বাধীনতাকে বিদায় জানাতে হত।”

মারভিন গের ‘লেটস গেট ইন অন’ গানটি প্রকাশ হয় ১৯৭৩ সালে। ওই গানটি ‘নকলের’ অভিযোগ এনে শিরানের বিরুদ্ধে মামলা করেন গানের সহ গীতিকার এড টাউনসেন্ডের মেয়ে ক্যাথরিন টাউনসেন্ড।

রায়ের পর আদালতের বাইরে এসে সাংবাদিকদের এড়াতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ক্যাথরিন। সে সময় তিনি শুধু বলেন, “ঈশ্বর সব সময় ভালো।“

গত ২৮ এপ্রিল শিরান ম্যানহটনের ফেডারেল আদালতে মামলার শুনানিতে নিজের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যে ২০১৪ সালে রচিত ‘থিংকিং আউট লাউড’ গানের পেক্ষাপট তুলে ধরেন। এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন। শুনানিতে গিটার বাজিয়ে জুরিদের গানটি গেয়েও শোনান এই শিল্পী।

ওইদিন নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে এ শিল্পীর ভাষ্য ছিল, “দোষী সাব্যস্ত হলে থেমে যাব।“

শিরান এও বলেছিলেন, “গীতিকার এড টাউনসেন্ডের উত্তরাধিকাররা ‘থিংকিং আউট লাউড’ থেকে লাভের ভাগ চাইছেন।“

এড টাউনসেন্ডের উত্তরাধিকারদের দাবি ছিল, শিরান, ওয়ার্নার মিউজিক গ্রুপ এবং সনি মিউজিক পাবলিশিং, গানের কপিরাইট লঙ্ঘন করেছে। এজন্য টাউনসেন্ডের উত্তরাধিকাররা তাদের কাছে টাকা পান।

শুনানিতে শিরান বলেছিলেন, তিনি তার বন্ধু এবং সহযোগী এমি ওয়াডগে মিলে গানের সুর করার কাজ শুরু করেন। গানের লিরিক তৈরিতেও ওয়াডগের সহযোগিতা ছিল।

গানটি বুননের গল্প তুলে ধরে শিরান আদালতকে বলেছিলেন, ওয়াডগের সঙ্গে যখন গানের কথা লেখা হচ্ছিল, তখন সাধারণভাবে বাক্যটি ছিল এমন ‘আমি এখন গান গাইছি’, কিন্তু সেটি যখন গানের রূপ পায়, হয়ে ওঠে, ‘থিংকিং আউট লাউড’।

শিরানের আইনজীবী ইলেন ফারকাস জুরিদের বলেছিলেন, ‘থিংকিং আউট লাউড’ এবং ‘লেটস গেট ইন অন’ গান দুটির ছন্দে যে মিল আছে, সেরকম মিল সবযুগেই গীতিকারদের কাজের মধ্যে দেখা যায়।

অন্যদিকে এড টাউনসেন্ডের উত্তরাধিকারীদের আইনজীবী কেইশা রাইস আদালতে বলেন, তার মক্কেলরা সংগীতের মৌলিক উপাদানগুলোর মিল থাকার বিষয়টি দাবি করছেন না। তাদের অভিযোগ, শিরান বিখ্যাত হতে মারভিন গে’র গানের উপরে নির্ভর করেছেন।

দুটো গান একই রকম কি না–সে সিদ্ধান্ত নিতে তিনি বিচারকদের ‘সাধারণ জ্ঞান’ কাজে লাগানোর আহ্বান রেখেছিলেন।

মামলার বাদীর আইনজীবীরা শিরানের একটি লাইভ পারফর্মেন্সের ভিডিও আদালতে দেখিয়েছিলের। শিরান যে ‘লেটস গেট ইন অন’র গানটিকেই ‘থিংকিং আউট লাউড’ এ রূপান্তর করেছেন, ওই ভিডিওর মাধ্যমে তা বোঝানোর চেষ্টা করেন আইনজীবীরা।

শিরানের বিরুদ্ধে গান নকলের অভিযোগ এর আগেও উঠেছে। ২০১৭ সালে 'শেপ অব ইউ' গানটির জন্য শিরানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। গত বছর লন্ডন হাই কোর্টে সেই কপিরাইট মামলায় রায় আসে শিরানের পক্ষে।

পুরনো খবর 

Also Read: আদালতে গিটার বাজিয়ে গান শোনালেন এড শিরান

Also Read: এড শিরানের বাঁচার ইচ্ছা মরে গিয়েছিল যে কারণে

Also Read: এড শিরানের গান চোর হ্যাকারের দেড় বছরের জেল