এড শিরানের গান চোর হ্যাকারের দেড় বছরের জেল

কুইকাওস্কির কাছ থেকে মোট সাতটি ডিভাইস এবং একটি হার্ড ড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছিল যাতে ৮৯ জন শিল্পীর মোট এক হাজার ২৬৩টি অপ্রকাশিত গানের অডিও ফাইল ছিল।

প্রযুক্তি ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2022, 11:56 AM
Updated : 23 Oct 2022, 11:56 AM

গ্র্যামি জয়ী পপ তারকা এড শিরানের দুটি অপ্রকাশিত গ্যান চুরি করে ক্রিপ্টো ‍মুদ্রার বদলে ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করেছিল এক হ্যাকার; ১৮ মাসের কারাদণ্ড জুটেছে তার কপালে।

বিবিসি জানিয়েছে, এড শিরানের ডিজিটাল অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে দুটি অপ্রকাশিত গান চুরি করে নিয়েছিল যুক্তরাজ্যের ইপ্সউইচের বাসিন্দা ২৩ বছর বয়সী এড্রিয়ান কুইকাওস্কি। এ ছাড়াও, র‌্যাপার ‘লির উজি ভার্ট’-এর ১২টি গানও ছিল তার চোরাই জিনিসের তালিকায়।

পুলিশের ১৯টি অভিযোগের সবগুলো নিয়েই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ওই হ্যাকার; এর মধ্যে ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ আইন লঙ্ঘন এবং অসদুপায়ে অর্জিত সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ।

লন্ডনের পুলিশ বিভাগ বলছে, পপ তারকাদের অপ্রকাশিত গান বেচে ক্রিপ্টো মুদ্রায় এক লাখ ৩১ হাজার পাউন্ড কামাই করেছিল কুইকাওস্কি।

কুইকাওস্কির অ্যাপল ম্যাক কম্পিউটার সার্চ করে ৫৬৫টি অডিও ফাইল পাওয়া গিয়েছিল বলে জানিয়েছে বিবিসি; এড শিরানের অপ্রাশিত গান দুটিও ছিল তার মধ্যে।

২০০০ সালের পরে কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সরাসরি সমর্থন আর বড় পরিসরের প্রচারণা ক্যাম্পেইন ছাড়াই গানের জগতে এসে আলোড়ন তোলা হাতে গোনা অল্প কয়েকজন শিল্পীদের একজন এড শিরান। ৩১ বছর বয়সী পপ তারকার সাফল্যের শুরু স্টুডিওতে ধারন করা ‘ইউ নিড মি, আই ডোন্ট নিড ইউ’ গানটির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার মাধ্যমে। ভক্তদের একটা বড় অংশ শিরানের সঙ্গে পরিচিত হয়েছেন ইউটিউবসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে।

ভক্তদের সমর্থনে ভর করে পরবর্তীতে পপ সংগীতের মূল ধারাতেও শক্ত অবস্থান গড়ে নিয়েছেন শিরান। বিশ্বব্যাপী তরুণ এ শিল্পীর অ্যালবামের কপি বিক্রি ১৫ কোটির বেশি। ২০১৯ সালে দশকের সেরা শিল্পীর স্বীকৃতিও পেয়েছেন তিনি।

ছদ্মনাম ‘স্পারডার্ক’

বিবিসি জানিয়েছে, অপ্রকাশিত গান ডার্ক ওয়েবে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ২০১৯ সালে প্রথমে তদন্তে নেমেছিল যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। বেশ কয়েকজন সংগীতশিল্পীর ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান সরাসরি নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নির কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল যে, অনলাইনে ‘স্পারডার্ক’ ছদ্মবেশধারী এক ব্যক্তি একাধিক শিল্পীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে কনটেন্ট হাতিয়ে নিয়েছে এবং অনলাইনে বিক্রি করছে।

ওই তদন্তেই স্পারডার্কের ক্রিপ্টো মুদ্রা অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যবহৃত ইমেইল ঠিকানার সঙ্গে কুইকাওস্কির সংশ্লিষ্টতা আবিষ্কৃত হয়। শিল্পীদের ব্যবহৃত একটি ডিভাইস হ্যাক করা হয়েছিল যে আইপি অ্যাডেস থেকে তার সঙ্গে কুইকাওস্কির বাড়ির ঠিকানার যোগসূত্রও মিলেছিল তদন্তে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরেই তদন্ত কার্যক্রম লন্ডনের পুলিশ বিভাগের হাতে হস্তান্তর করা হয়, গ্রেপ্তার হন কুইকাওস্কি।

লন্ডন পুলিশ জানিয়েছে, কুইকাওস্কির কাছ থেকে মোট সাতটি ডিভাইস এবং একটি হার্ড ড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছিল যাতে ৮৯ জন শিল্পীর মোট এক হাজার ২৬৩টি অপ্রকাশিত গানের অডিও ফাইল ছিল।

হ্যাকিং প্রক্রিয়ার সারসংক্ষেপ লেখা একটি নথিও হার্ডড্রাইভ থেকে উদ্ধার করেছিল পুলিশ। এ ছাড়াও, গানগুলো ডার্কওয়েবে বেচে হ্যাকার যে বিটকয়েন কামাই করেছিল, তাও জব্দ করেছে লন্ডনের পুলিশ বিভাগ।

অগাস্ট মাসে গান বেচে বিটকয়েন পাওয়ার বিষয়েও ইপ্সউইচ ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে স্বীকারোক্তি দেন তিনি।