প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার তিন দিনের মাথায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর।
Published : 14 Dec 2023, 11:34 AM
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তে প্রার্থিতা বাতিল এবং আপিলে জিতে ফের প্রার্থিতা ফিরে পাওয়াসহ নানা ঘটনার পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দিলেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম।
তিনি ‘ভোটের টিকেট পেয়েছেন বগুড়া- ৪ ( কাহালু ও নন্দীগ্রাম) আসন থেকে। সব বাধা ডিঙিয়ে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার প্রত্যয় জানিয়েছেন বারবার। কিন্তু প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর তিন দিনের মাথায় মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন।
‘বাংলাদেশ কংগ্রেস’ মনোনীত এই প্রার্থী বলছেন, আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে চলেছেন তিনি এবং সেদিনই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলবেন।
হিরো আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী ১৭ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেব।“
এ সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো ধরনের ভয়ভীতি বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কেন প্রত্যাহার করব তা ওইদিনই গণমাধ্যমে জানাব। আপাতত ধরে নিন নির্বাচন থেকে সরে যাচ্ছি।“
বুধবার রাতে ফেইসবুকেও একটি পোস্ট দিয়ে নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত জানান হিরো আলাম।
এবার মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাইয়ের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা দেখেন, হিরো আলম যথাযথভাবে মনোনয়নপত্র পূরণ করেননি।
দলীয় প্রার্থী হলেও এই ইউটিউবার মনোনয়নপত্র পূরণ করেন স্বতন্ত্র হিসেবে। রাজনৈতিক দলের ঘরে লেখেন ‘প্রযোজ্য নহে’। দলীয় মনোনয়নের মূল কপি তিনি জমা দেননি, দিয়েছেন ফটোকপি।
আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হলে ভোটার তালিকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনের তথ্য জমা দিতে হয়, সেটাও দেননি হিরো আলম। হলফনামার সঙ্গে সম্পদের আয়-ব্যয় বিবরণী তিনি জমা দেননি। এ ছাড়া তার হলফনামা নোটারি করা থাকলেও সেখানে স্বাক্ষর করেননি।
মনোনয়নপত্র যথাযথভাবে পূরণ না করার কারণে গত ৩ ডিসেম্বর হিরো আলমের মনোনয়ন বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গত ৬ ডিসেম্বর আপিল করে ‘আশাবাদী’ হিরো আলম বলেছিলেন, তার ধারণা শুনানিতে ইসি তার পক্ষেই রায় দেবে।
এরপর রোববার ইসির আপিল শুনানিতে হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে ইসিকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার প্রত্যয়ের কথা শোনান হিরো আলম। ভোট সুষ্ঠু হলে জয়ের আশাও প্রকাশ করেন।
হিরো আলম বলেছিলেন, “আমার শুধু সই ছিল না। আমি জোর গলায় বলেছিলাম ইসি থেকে প্রার্থিতা ফিরে পাব। শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছি। ইসিকে ধন্যবাদ। ডাব মার্কা প্রতীকে ভোট করব। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকব। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিজয়ী হব আশা করি। আগে কোনো দলে যোগ দিইনি। এবারই বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী হলাম।”
হিরো আলম ২০১৮ সালের সাধারণ নির্বাচন এবং এ বছরের শুরুতে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নেন। সবশেষ তিনি অংশ নেন ঢাকা-১৭ আসনের উপ নির্বাচনে।
প্রতিবারই এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জটিলতার কারণ দেখিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। প্রথম দুইবার উচ্চ আদালতের নির্দেশে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পান। আর ঢাকার উপ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেই তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যান। কিন্তু জয় মেলেনি কোনোবারই।