মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে ‘সীমিত দৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র’ বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর তালিকা শূন্য দেখে ক্ষোভ করেছিলেন তিন অভিনয়শিল্পী।
Published : 16 May 2023, 05:57 PM
এ বছর মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারে ‘সীমিত দৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র’ বিভাগে সেরা অভিনেত্রীর তালিকায় কারও নাম না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে একই রকম পোস্ট ফেইসবুকে শেয়ার করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী, তাসনিয়া ফারিণ ও সাবিলা নূর।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে সেরা অভিনেত্রীদের মনোনয়নের বিষয়টি পুনর্বিচেনার অনুরোধ জানায় মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার কর্তৃপক্ষও। ওই আবেদনে জুরি বোর্ড সম্মত হয়ে এবার সেরা অভিনেত্রীর তালিকায় দুজন নারী অভিনয়শিল্পীর নাম প্রকাশ করেছে।
সোমবার মেরিল প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কার ২০২২ এ ‘সীমিত দৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র সেরা অভিনয়শিল্পী (নারী)’ বিভাগে দুজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন সাবিলা নূর (রিদিকা) ও নাজিয়া হক অর্ষা (গালিবের প্রেম ও বসন্তের কাব্য)।
সাবিলা নূরের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে ফেইসবুকে নানা রকম মন্তব্য ভাসছে। কেউ বলছেন, অনেকটা বোর্ড চ্যালেঞ্জ করে পাস করার মতো। আবার কেউ বলছেন, যোগ্য হিসেবেই মনোনয়ন পেয়েছেন এই অভিনেত্রী।
জুরি বোর্ডের নতুন সিদ্ধান্তে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মঙ্গলবার ফেইসবুকে সাবিলা নূর লিখেছেন, “মনোনয়ন পাওয়ায় অবশ্যই ভালো লাগছে, আরও ভাল লাগছে অভিনেত্রীদের একাত্মতার মূল্যায়ন হতে দেখে। আমরা আগেই বলেছিলাম নিজে মনোনয়ন বা পুরস্কার পাবার আশায় আমরা কেউই লিখিনি, আমাদের আবেদন ছিল সামষ্টিকভাবে অভিনেত্রীদের ভালো কাজের অনুপ্রেরণা যেন হারিয়ে না যায়।”
মেহজাবীন ও ফারিণের জন্যও ভালোবাসা প্রকাশ করে তিনি লেখেন, “তোমাদের শক্তি, কাজের প্রতি স্পৃহা ও নিষ্ঠা আমাকে অনুপ্রেরণা দেয়। ভবিষ্যতের নারী চরিত্রগুলোতে আমরা যেন আরও এগিয়ে যেতে পারি, সবার কাছে সেই দোয়াপ্রার্থী।”
মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের জুরি বোর্ড সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা জানিয়ে বলেছে, ২০২২ সালের সমালোচক পুরস্কারের সেরা অভিনয়শিল্পী (নারী) শাখায় কাউকে মনোনয়ন না দেওয়া নিয়ে যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে, এটা অভিনেত্রীদের প্রতি অবহেলা থেকে নয়।
“আমরা মনে করি, আমাদের গল্পে নারীপ্রধান চরিত্রের উপস্থিতি অনেক কম। সেখানে জুরি হিসেবে বরং আমরা আশাহত হয়েছি। তার মানে এই নয় যে অভিনেত্রীরা ভালো অভিনয় করছেন না। সমালোচক পুরস্কারের জন্য কাজগুলো নানা দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করা হয়। গল্প, নির্মাণ, অভিনয় এ রকম আরও অনেক উপাদান মিলে একটা কাজ প্রশংসনীয় হয়ে ওঠে। নিরীক্ষাধর্মী কাজ যেন মূল্যায়িত হয়, সেটিও একটা বিবেচ্য বিষয়। বিচারক হিসেবে আমরা সে রকম কাজের অভাব দেখতে পেয়েছি।”
জুরি বোর্ড আরও বলেছে, “নেপথ্যের আরেকটা ব্যাপার আমরা পরিষ্কার করতে চাই: জুরি কর্তৃক ২০২২ সালের পুরস্কার ও মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ জানায় যে, মনোনয়ন ও পুরস্কারপ্রাপ্ত একটি কাজ ২০২১ সালের। সে কারণেই সেই কাজটি আমাদের বাদ দিতে হয়। আমাদের মনে হয়েছে, এত এত কাজের ভিড়ে চিন্তাশীল কাজ যেন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই জুরিবোর্ডর সদস্যরা একটি বার্তা হিসেবে এই শাখাটি এবার বাদ রেখেছে, যেন অনেক জনপ্রিয় কাজের ভিড়ে ভালো কাজের প্রতিও আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়।
“আমাদের এ সিদ্ধান্তে আপনারা কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু যেভাবেই হোক আমরা বোধ হয় আমাদের অনুভূতি আপনাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। নিশ্চয়ই আগামীতে টেলিভিশন ও স্বল্পদৈর্ঘ্যের কাজে নিরীক্ষা অক্ষুণ্ন থাকবে। আপনাদের মন খারাপের ঘটনায় আমরা সত্যি আবেগতাড়িত হয়েছি। তাই আমরা বাকি যে দুজনকে নির্বাচিত করেছিলাম, তাদের নাম ঘোষণা করলাম।”