ভাইয়ের হাতে পাকিস্তানি মডেল এবং সোশাল মিডিয়া তারকা কান্দিল বেলুচ হত্যার ঘটনায় হতবাক দেশটির বিনোদন জগত। মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে প্রথম সারির অনেক তারকাই ঘটনাটিতে তাদের গভীর শোক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
Published : 16 Jul 2016, 04:48 PM
‘সেভিং ফেইস’ এবং ‘অ্যা গার্ল ইন দ্য রিভারঃ দ্য প্রাইস অব ফরগিভনেস’ নামের অস্কারজয়ী প্রামাণ্যচিত্রের নির্মাতা শারমিন ওবাইদ চিনয় এপ্রসঙ্গে বলেন, এক টুইটার বার্তায় বলেন, “কান্দিল বেলুচকে হত্যা করা হয়েছে ‘পরিবারের সম্মান রক্ষার্থে’। অনার কিলিং বিরোধী আইনের অভাবে আর কতো নারীর প্রাণ হারাবো আমরা?”
এই হত্যাকাণ্ডকে ‘বর্বরতা’ আখ্যা দিয়ে প্রখ্যাত সাংবাদিক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা হাসান জাইদি বলেন, “ভাইয়ের হাতে খুন হলো কান্দিল বেলুচ! নৈতিকতাবাদীদের ধ্যান ধারণায় আঘাত দিয়ে সে যাই করে থাকুক না কেন, এই ধরনের হত্যা এক ধরনের বর্বরতা ছাড়া আর কিছুই নয়।”
পাকিস্তানের বিখ্যাত টিভি শো ‘লেডিজ পার্ক’ আর ‘শার্ট’ এর জন্য পরিচিত অভিনেত্রী নাদিয়া হুসেইন বলেন, “এটাই কি প্রত্যাশিত ছিল না? শান্তিতে ঘুমাও।”
সাবেক মডেল এবং ফ্যাশন কোরিওগ্রাফার ফ্রিয়েহা আলতাফ কান্দিলকে অভিহিত করেন ‘মিষ্টি’ এবং ‘জীবন্ত’ হিসেবে, “এইতো গত রাত্রেও আমি মেয়েটির সাথে কথা বলেছি। কতো মিষ্টি, উচ্ছল আর জীবন্ত ছিলো সে। এসব কী হয়ে গেলো আচমকা!”
পাকিস্তানের জনপ্রিয় সুফি রক ব্যান্ড জুনুন এর গায়ক ফিফি হারুন-এর টুইট, হত্যার সংবাদ শুনে আমি স্তব্ধ আর হতাশ হয়ে গেছি।”
‘বার্ন্ট শ্যাডোজ’ আর ‘কার্টোগ্রাফি’ উপন্যাসের জন্য বিখ্যাত পাকিস্তানি ঔপন্যাসিক কামিলা শামসি এই দিনটিকে অভিহিত করেন পাকিস্তানের জন্য আরেকটি অন্ধকার দিন হিসেবে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে খোলামেলা ছবি ও সাহসী বক্তব্য পোস্ট করার জন্য আলোচিত ছিলেন কান্দিল। ভারতের এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, একজন মুফতির সঙ্গে সেলফি তোলায়ও সম্প্রতি শিরোনাম হয়েছিলেন ২৬ বছর বয়সী এই নারী; যে ছবির জন্য একটি ধর্মীয় কমিটির সদস্যপদ হারান ওই মুফতি।
সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে পাকিস্তানের সামাজিক ব্যাবস্থাকে সমালোচনা করতেও দেখা গেছে কান্দিলকে, যার আসল নাম ফৌজিয়া আজিম। দেশটির পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থাকে ‘জঘন্য’ হিসেবে আখ্যায়িত করে এতে ‘ভাল কিছু’ নেই বলেও মন্তব্য করেছিলেন তার সর্বশেষ টিভি সাক্ষাৎকারে।
‘পাকিস্তানের কিম কার্দাশিয়ান’ হিসেবে পরিচিত কান্দিলের ভিডিও দেখা হয়েছে ৮ কোটি বারেরও বেশি, এবং ফেইসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে রয়েছে অসংখ্য অনুসারী।