সোমবার বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব ২০১৫’র তৃতীয় দিনে একাধিক নারী শিল্পীর পরিবেশনায় মুগ্ধতার রেশ ছড়িয়ে পড়লো ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামজুড়ে। বিদুষী শুভা মুদগালের খেয়াল ও ঠুমরি, ড. এন রাজম ও তার উত্তর প্রজন্মের বেহালা পরিবেশনা এবং বিদুষী শ্রুতি সাদেলিকরের ঠুমরিতে আবিষ্ট হয়েছেন হাজারো শ্রোতা।
Published : 30 Nov 2015, 12:35 PM
বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসবের পর্দা উঠলো
উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত উৎসবের দ্বিতীয় দিন: স্বরস্বতী বীণা, ধ্রুপদ আর অজয় চক্রবর্তীর ঘোষণা
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ওয়ার্দা রিহাব ও তার দলের মনিপুরী নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে। বাংলাদেশের নৃত্যচর্চা পরিমণ্ডলে এ সময়ের জনপ্রিয় নারী শিল্পী ওয়ার্দার নেতৃত্বে ৩০ জনের বেশ বড়সড় দলটি একে একে লেচন, কথক চারা, বসন্ত, গোষ্ঠ ক্রীড়া, জয় জয় দেবা পরিবেশন করেন। দলটিকে যন্ত্র সহযোগিতা করেন নিলমণি সিংহ, সুরজিত সিংহ, রনি সিংহ, ধীরেন্দ্রকুমার সিংহ এবং সুনীল সিংহ।
তিন প্রজন্মের বেহালা বাজিয়ে ড. এন রাজমের পরিবার। দক্ষিণী এই নারী শিল্পী যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে গড়েছেন তার মেয়ে ড. সঙ্গীতা শঙ্কর এবং দুই নাতনি রাগিনী শঙ্কর ও নন্দিনী শঙ্করকে। বংশ পরম্পরায় সঙ্গীত শিক্ষার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিকভাবেও শিক্ষিত প্রথম দুজন। প্রথমবারের মতো উৎসবে এসে এই চতুষ্টয়ী শোনান রাগ বাগেশ্রী, খাম্বাজ রাগে ঠুমরি। বর্ণিল পরিবেশনায় মুগ্ধতার রেশ কাটতে না কাটতেই মালকোষ রাগে বেহালার গায়কি অঙ্গ ও তন্ত্রকারী অঙ্গের পাথর্ক্য তুলে ধরলেন এন রাজম। সবেশেষে আরও শোনালেন নজরুলসংগীত ‘ব্রজ গোপী খেলে হরি’। তাদের সঙ্গে তবলা সঙ্গত করেন পণ্ডিত মুকুন্দ রাজ দেও।
বিদুষী শ্রুতি সাদোলিকরও এবারই প্রথম এলেন উৎসবের শিল্পী হিসেবে। তিনি পরিবেশন করেন রাগ নন্দ, কৌশী কানারা। ঢিমা লয়ে আরো শোনান আরেক গুণী নারী বেগম আখতারের গাওয়া জনপ্রিয় তিলক কামোদ রাগের ঠুমরি ‘আব কি সাওয়ান ঘার আজা’। তাকে সঙ্গত দেন আনিশ প্রধান ও সুধীর নায়েক।
বাংলাদেশের অভিজ্ঞ সেতারিয়া ইউসুফ খান এদিন শোনান রাগ কিরওয়ানি। তাকে সঙ্গত দেন ইফতেখার আলম প্রধান ও তাহিয়া খান।
বংশ পরম্পরায় ডাগর ঘরানার ২০তম ধ্রুপদিয়া ওস্তাদ ওয়াসিফউদ্দিন ডাগর এবারই প্রথম উৎসবের মঞ্চে উঠলেন। তিনি রাগ বেহাগ, শঙ্করা রাগে ধ্রুপদ ও রাগ সোহিনী পরিবেশন করেন। গমক, কম্পন, মূর্ছান অলঙ্কারে সাজানো পরিবেশনায় ধ্রুপদের গাম্বীর্যতা ও শুদ্ধ ভাবের এক অনাড়ম্বর পরিবেশনা উপস্থাপন করলেন তিনি। তাকে সঙ্গত দেন মোহন শ্যাম শর্মা, গোপেশ গৌড় ও সন্তোষ কুমার।
ওয়াসিফউদ্দিনের চাচাতো ভাই বাহাউদ্দিন ডাগরও এই উৎসবের মঞ্চ অলঙ্কৃত করেছেন রুদ্রবীণা বাজিয়ে।
মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর পরিবেশনায় অংশ নেবেন কুচিপুরি নৃত্যশিল্পী দম্পতি গুরু রাজা ও রাধা রেড্ডি, বেহালা বাজিয়ে দুই ভাই গণেশ ও কুমারেশ রাজাগোপালান। আরও অংশ নেবেন পণ্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ন মজুমদার, পণ্ডিত উলহাস কশলকর, ওস্তাদ জাকির হোসেন ও পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা।
ছবি: জাহাঙ্গীর আলম