বঙ্গবন্ধুর বায়োপিকে শুভর প্রশংসা সহশিল্পীদের কণ্ঠে

‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেশে মুক্তি পাচ্ছে ১৩ অক্টোবর।

বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে আরিফিন শুভ যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তা মুগ্ধ করেছে সহশিল্পীদের। সেই কথাই তারা তুলে ধরলেন এক অনুষ্ঠানে।

দেশে আগামী ১৩ অক্টোবর ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার মুক্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকার একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল।

সেখানে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বললেন, “সিনেমাটিতে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শুভ, সিনেমাটিতে শুভ’র যে চেষ্টা, সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। অভিনেতার জন্য অনেক বড় চাপ যখন কোনো বায়োপিকে বিখ্যাত কোনো মানুষের চরিত্রে অভিনয় করা হয়। পুরো সিনেমাটি আমরা দেখব, আশা করি ভালো লাগবে।”

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর এ সিনেমা আগামী ২৭ অক্টোবর ভারতে মুক্তি পাবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ প্রযোজনায় সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শ্যাম বেনেগাল। এ সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ; কিশোর বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্য। বঙ্গবন্ধুর বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন চঞ্চল চৌধুরী।

২০২১ সালে সিনেমাটির শুটিং দিনের কথা স্মরণ করে চঞ্চল বলেন, “আজকে এই অনুষ্ঠানে আসার আগেও সেই সময়ের বিভিন্ন ছবি ঘেঁটে দেখছিলাম। মাঝে দুই বছর কাটল, আমরা অপেক্ষায় ছিলাম কবে সিনেমাটি আমরা দেখতে পাব? কারণ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই প্রথম এত বড় আকারে একটি কাজ, যেখানে বাংলাদেশ ও ভারত যুক্ত আছে।

“ভারতের বিখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল সিনেমাটি বানিয়েছেন। প্রথম ২০ দিন শুটিং করে আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম। পরে আবার গিয়ে শুটিং করেছি। একজন মানুষ একটা দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, সেই সত্যি ইতিহাস কিছু আমরা দেখতে পাব সিনেমাটিতে।”

সিনেমাটিতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু।

আরিফিন শুভর চেষ্টা তাকেও মুগ্ধ করেছে জানিয়ে বাবু বলেন, “আমি আপনাদের আশ্বস্ত করছি, শুভ সিনেমাটিতে অত্যন্ত ভালো অভিনয় করেছে। বায়োপিকে অভিনয় করা আসলেই ভীষণ কঠিন কাজ। শুভ সেই কঠিন কাজটিই করেছে তার সর্বাত্মক চেষ্টা দিয়ে।”

তবে সিনেমাটি নিয়ে কিছু মানুষের ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ সমালোচনা নিয়ে দুশ্চিন্তার কথাও জানালেন বাবু।

“আমি একটু আশঙ্কার মধ্যেও আছি, কারণ কিছু দর্শক তো আগে থেকেই তৈরি হয়ে আছে আমাদের একটু সমালোচনা করার জন্য। তারা নানানভাবেই সমালোচনাও করবে। আবার ছোট-বড়, মাঝারি খন্দকার মোশতাকও তো এখনো আছে। একটা কথা আছে, দশজন যদি ইনটেশনালি ভালো জিনিসকেও খারাপ বলে সেটি খারাপ হয়ে যায়। সবাইকে বলব, সিনেমাটি দেখতে আসুন।”

মোশতাক চরিত্রে অভিনয় করতে পারাকে সৌভাগ্য হিসেবে দেখছেন ‘মনপুরা’ অভিনেতা বাবু।

তার ভাষ্যে, “যখনই কেউ শোনে যে খন্দকার মোশতাক চরিত্রে অভিনয় করেছি, তখনই মানুষ হাসে। সবাই ভাবে এ রকম একটা ভিলেনের চরিত্র কেন তাকে দেওয়া হলো? যা হোক, সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শ্যাম বেনেগাল।

“তিনি উপমহাদেশে বায়োপিক সিনেমার জন্য মাস্টার নির্মাতা। আমাকে এমন একটি সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ করে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”

বঙ্গবন্ধুর কিশোর বয়সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন দিব্য।

এই অভিনেতা বললেন, “মুজিব সিনেমাটি আমার কাছে একটি স্বপ্নের নাম, একটি আবেগের নাম।”

সিনেমায় অল্প বয়সের রেণু চরিত্রে দেখা যাবে প্রার্থনা ফারদিন দিঘীকে।

এই অভিনেত্রী বললেন, “এটা আমার ‘বার্থ ডে’ মাস, এই সিনেমাটি আমার জন্মদিনের উপহার। এরকম একটি কাজের সাথে যুক্ত হওয়াটা তো স্বপ্নের চেয়েও বেশি।”

দোয়েলকন্যা এও বলেন, “আমি মনে করি, আমার সাথে মায়ের দোয়া আছে। এজন্য অনেক কিছুই পেয়েছি। আমি পুরোটা দিয়ে চেষ্টা করেছি, আমি খুব নার্ভাস ছিলাম।”

বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করা আরিফিন শুভ বলেন, “চঞ্চল ভাই বলছিলেন যে- বায়োপিকে অভিনয় করা যেকোনো শিল্পীর জন্য কঠিন। আর বাবু ভাই তো বললেন যে, ছোট-খাটো-মাঝারি খন্দকার মোশতাকরা তো এখনো আছেন। এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি, যেটা বাঙালির কাছে ভীষণ আবেগের একটি চরিত্র। এই আবেগের কারণে অনেক খন্দকার মোশতাকরা আবার অনেক কিছু বলে।”

এই সিনেমায় অন্য কোনো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেলেও করতেন জানিয়ে শুভ বলেন, “একটা কথা বলতে চাই, এই সিনেমায় যদি আমাকে পাসিং শটের জন্যও নেওয়া হত অথবা স্পট বয়ের কাজও দিত, সেটিও আমার জন্য শ্যাম বেনেগাল স্যারের সাথে কাজ করা এবং জাতির পিতাকে নিয়ে একটা সিনেমা হয়েছে- তার অংশ হওয়াটাও অনেক বড় বিষয়।

“আমি জানতাম, সিনেমাটি নিয়ে অনেক কথা হবে। আমি চেষ্টা করেছি। সবাইকে বলব, পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমাটি দেখেন।”