ছেলের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতেই নাকি অভিনেত্রীর এমন উদ্যোগ।
Published : 06 Apr 2023, 07:34 PM
এক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রে সারোগেসির মাধ্যমে এক মেয়ের মা হওয়ার কথা বলে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন স্প্যানিশ সিটকম তারকা আনা ওবরেগন; এবার তিনি জানালেন- এই সন্তানের বাবা আসলে তার প্রয়াত ছেলে।
বিবিসি জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে ছেলের ‘বলে যাওয়া’ শেষ ইচ্ছে পূরণ করতেই অভিনেত্রী এমন সিদ্ধান্ত নেন; যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত এক নারী সারোগেসির মাধ্যমে এই সন্তানের জন্ম দেন।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে হোলা ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ছেলের শেষ ইচ্ছের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন ওবরেগন। তিনি বলেছেন, শিশুটি তার মেয়ে নয়, আসলে তার নাতনি। অর্থাৎ তার প্রয়াত ছেলে আলেস লেকুইওর মেয়ে।
২৭ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যান আলেস। মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগে ছেলের সঙ্গে কথোপকথনের কথা তুলে ধরেন আনা ওবরেগন বলেন, “নিজের একটি সন্তানকে পৃথিবীতে আনাই ছিল আলেসের শেষ ইচ্ছা।”
২০২০ সালে আলেসের মৃত্যুর আগে নিউ ইয়র্কে তার শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়। তা থেকেই ফ্লোরিডায় বসবাসকারী কিউবান বংশোদ্ভূত একজন নারীর মাধ্যমে আনা সান্দ্রা নামের মেয়ে শিশুটির জন্ম হয়।
কয়েকদিন আগে ওবরেগন সারোগেসির মাধ্যমে সন্তান নেওয়ার ঘোষণা দিলে স্পেনজুড়ে আলোচনা- সমালোচনা শুরু হয়।
একজন নারীর গর্ভে অন্য দম্পতির সন্তান ধারণের পদ্ধতিকে 'সারোগেসি' বলে। ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিতে নারীদেহ থেকে ডিম্বাণু ও পুরুষ দেহের শুক্রাণু দেহের বাইরে টেস্টটিউবে নিষিক্ত করে তা সারোগেট মায়ের গর্ভাশয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়।
স্পেনে সারোগেসি অবৈধ; তবে অন্য দেশে সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া শিশু দত্তক নিতে কোনো বাধা নেই।
এ হিসেবে ফ্লোরিডায় জন্ম নেওয়া শিশুটিকে মাদ্রিদে নিয়ে যাওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রে স্পেনের কনস্যুলেটের মাধ্যমে নথিভুক্ত করাতে হবে।
এ বিষয়ে সমালোচনা হচ্ছে অনেক, যাকে ‘অযৌক্তিক’ হিসেবে দেখছেন তারকা অভিনেত্রী আনা ওবরেগন।
তিনি যখন সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের মা হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন, তখন বিষয়টি জাতীয় বিতর্কের জন্ম দেয়। স্পেনের বামপন্থী সরকারের মন্ত্রী আইরিন মন্তেরো ‘একে নারীদের উপর নিপীড়ন’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
সামাজিক দর্শন বিশেষজ্ঞ গঞ্জালো ভেলাস্কো একে অবৈধ হিসেবে না দেখলেও, নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন।
রেডিওতে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “মৃত ছেলের শেষ ইচ্ছা নিজের উপর নিয়ে বিতর্ক টেনে এনেছেন আনা ওবরেগন। কোনো সন্তান তাদের মা-বাবার সম্পত্তি নয়, মৃত সন্তান তো নয়ই। সন্তানের এই চাওয়া না চাওয়ার কথা কোনো বাবা-মা ব্যাখ্যা করতে পারেন না।”
এদিকে আলেস লেকুইওর বাবা, অর্থাৎ ওবরেগনের সাবেক স্বামী আলেসান্দ্রো লিকুইও এ বিষয়ে কোনো মতামত দিতে রাজি হননি।