“চলচ্চিত্র অঙ্গনের সকল সমিতি এখন ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে,” বলেন হাছান মাহমুদ।
Published : 19 Feb 2023, 08:06 PM
চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের মোর্চা সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ শর্তসাপেক্ষে হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “দীর্ঘ কয়েক বছরের প্রচেষ্টায় কিছু শর্তসাপেক্ষে নির্দিষ্ট সংখ্যক ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির ব্যাপারে চলচ্চিত্র অঙ্গনের সবাই একমত হয়েছেন, এ জন্য তাদেরকে অভিনন্দন।
“আমিও নির্দিষ্ট পরিমাণ আমদানির পক্ষে, অবাধ আমদানিতে আমাদের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অতীতেও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে আমার কাছে ভারতীয় হিন্দি ছবি আমদানির দাবি উপস্থাপন করা হয়েছিল, পরে শিল্পী সমিতি আপত্তি জানিয়েছিল।”
হাছান মাহমুদ বলেন, “আমি বারবার বলে এসেছি, সব সংগঠন একমত হয়ে বললে তখন আমরা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারব। এখন সেটি সম্ভব। প্রস্তাব অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব, বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরেও আনতে হবে।”
রোববার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সম্মিলিত চলচ্চিত্রের পরিষদের নেতাদের কাছ থেকে ‘নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিদেশি (উপমহাদেশীয় ভাষার) চলচ্চিত্র আমদানি ও মুক্তি প্রসঙ্গে’ শীর্ষক পত্র গ্রহণকালে এসব কথা বলেন হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, "প্রকৃতপক্ষে আমাদের দেশে আগের তুলনায় সিনেমা বেশি হচ্ছে এবং অনেক সিনেমা বক্স অফিস হিট করছে। কিন্তু এখনও প্রতি সপ্তাহে ভালোভাবে চালানোর মতো সিনেমা সবসময় হচ্ছে না, এটি বাস্তবতা।
“সেই বাস্তবতার নিরিখে আপনারা সুচিন্তিতভাবে, ভেবেচিন্তে মতামত দিয়েছেন যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ ভারতীয় হিন্দি ছবি যদি আমদানি হয়- তাহলে অনেকেই আবার হলমুখী হবে এবং তখন আমাদের বাংলা ছবিও দেখতে যাবে।"
সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদের পত্রে সরাসরি হিন্দি চলচ্চিত্রের কথা উল্লেখ না করে পরীক্ষামূলকভাবে দুই বছরের জন্য উপমহাদেশীয় বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র আমদানির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে প্রথম বছরে ১০টি ও পরের বছরে ৮টি চলচ্চিত্র আমদানির এবং বছরে ৫২ সপ্তাহের মধ্যে ২০ সপ্তাহ প্রদর্শনের শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
এসব সিনেমা দুই ঈদ ও দুর্গাপূজার সপ্তাহে যাতে প্রদর্শন করা না হয়, সে কথাও বলেছে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ।
জোটের শর্তে এও বলা হয়েছে, এ ধরনের প্রতিটি সিনেমার জন্য আমদানিকারক সংস্থাকে আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদকে দিতে হবে, সেই সঙ্গে নিতে হবে ছাড়পত্র। এই অর্থ পরিষদ সদস্যদের চিকিৎসা ও কল্যাণে ব্যয় হবে।
বর্তমানকালের ‘যৌথ প্রযোজনা নীতিমালা’ রহিত করে এ সংশ্লিষ্ট আগের নীতিমালা চালুর দাবিও জানিয়েছে সম্মিলিত চলচ্চিত্র পরিষদ। সেই সঙ্গে দেশীয় চলচ্চিত্রে শিল্পী সংকট কাটাতে ‘নতুন মুখের সন্ধানে’ প্রকল্প চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
চলচ্চিত্র শিল্প ‘ঘুরে দাঁড়াচ্ছে’ মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “ইতোমধ্যে অনেক নতুন নতুন হল, বিশেষ করে সিনেপ্লেক্স চালু হয়েছে। কিছু পুরনো বা বন্ধ হওয়া হলও আবার চালু হয়েছে। আপনাদের প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে অনেকগুলো হল আবার চালু হবে। তখন আমাদের শিল্পীদের অভিনীত সিনেমা দেখানোরও সুযোগ আরও বাড়বে।
"চলচ্চিত্র অঙ্গনের সকল সমিতি এখন ভারতীয় হিন্দি সিনেমা আমদানির বিষয়ে একমত হয়েছে, সুতরাং এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অসুবিধা নেই।"