‘যশোর হত্যাকাণ্ডের বিচার না হওয়া রাষ্ট্রের সীমাহীন ব্যর্থতা’

“যশোর হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা নিষ্ক্রিয় তো হয়ইনি, বরং আরো বেশি সক্রিয় হয়েছে।”

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 March 2024, 03:24 PM
Updated : 6 March 2024, 03:24 PM

যশোরে উদীচীর সমাবেশে বোমা হামলার বিচার ২৫ বছরেও না হওয়ায় রাষ্ট্রের সীমাহীন ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে।

বুধবার সন্ধ্যায় যশোর হত্যাকাণ্ডের ২৫ বছর স্মরণে ঢাকায় উদীচী আয়োজিত প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

উদীচীর সাধারণ সম্পাদক বলেন, “২৫ বছর ধরে উদীচী বারবার দাবি জানিয়ে গেছে যশোর হত্যাকাণ্ডের বিচার করার জন্য। কিন্তু কোনোকিছুতেই কোনো লাভ হয়নি।

“রাষ্ট্র এই বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে বলেই ১৯৯৯ সালের পর একে একে কমিউনিস্ট পার্টি, ছায়ানট, সারাদেশের সিনেমা হল, আওয়ামী লীগের জনসভাসহ বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

অমিত রঞ্জন দে আরও বলেন, “একথা জোর গলায় বলা যায়, যদি সঠিক সময়ে উদীচীর উপর বোমা হামলার সুষ্ঠু বিচার সম্পন্ন করা যেত, তাহলে এদেশের মাটিতে আর কোনো বোমা হামলার ঘটনা ঘটত না।

“শুধু তাই নয়, যশোর হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা নিষ্ক্রিয় তো হয়ইনি, বরং আরো বেশি সক্রিয় হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের ষড়যন্ত্রের জাল আরও বেশি বিস্তৃত করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”

১৯৯৯ সালের ৬ মার্চ যশোরের টাউন হল মাঠে উদীচীর দ্বাদশ জাতীয় সম্মেলনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় প্রাণ হারান নূর ইসলাম, সন্ধ্যা রানী, রামকৃষ্ণ, তপন, বাবুল সূত্রধরসহ অন্তত ১০ জন শিল্পী-কর্মী ও সাধারণ মানুষ। আহত হন দেড় শতাধিক শিল্পী-কর্মী ও সংস্কৃতিমনা সাধারণ মানুষ।

যশোর হত্যাকাণ্ডের ২৫ বছর উপলক্ষে বুধবার উদীচী চত্বরে (জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীতে) আয়োজিত হয় প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশ।

সমাবেশ থেকে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের মাধ্যমে অন্ধকারের অপশক্তিকে প্রতিরোধ করার প্রত্যয় জানান বক্তারা।

সমাবেশের শুরুতেই যশোরে শহিদদের স্মরণে স্থাপিত অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা জানান উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদ, ঢাকা মহানগর সংসদ, গেন্ডারিয়া শাখা, মোহাম্মদপুর শাখা, উত্তরা শাখা, ধানমন্ডি শাখা, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

এরপর দুটি সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা। পরে শহিদদের স্মরণে আলোক প্রজ্জ্বলন করা হয়।

উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, যশোর জেলা সংসদের কার্যনির্বাহী সদস্য লুবনা আফরোজ পাপ্পু, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি এবং বোমা হামলার সময় উদীচীর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা মাহমুদ সেলিম, উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি শিবাণী ভট্টাচার্য্য, হাবিবুল আলম, প্রবীর সরদার, জামসেদ আনোয়ার তপন, ইকরামুল কবির ইল্টু এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ।

সঞ্চালনা করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান।