আশীষ খাঁর পূর্বপুরুষের ভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শিবপুর গ্রামে। তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্বও নিতে চেয়েছিলেন।
Published : 15 Nov 2024, 03:50 PM
অনন্তলোকে পাড়ি জমালেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আশীষ খাঁ।
৮৪ বছর বয়সে বাংলাদেশ সময় শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক মেহজাবীন রহমান।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার হেনরি মায়ো মেমোরিয়াল হাসপাতালে তিনি মারা যান।
ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর নাতি ও ওস্তাদ আলী আকবর খাঁর ছেলে আশীষ খাঁর মৃত্যুতে উপমহাদেশের সঙ্গীতে আরেকটি নক্ষত্রের পতন হলো।
আশীষ খাঁর জন্ম ভারতের মাইহারে ১৯৩৯ সালের ৫ ডিসেম্বর।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ও সরোদবাদক হিসেবে বিশ্বজুড়ে তার খ্যাতি রয়েছে।
তার অ্যালবাম 'গোল্ডেন স্ট্রিংস অফ দ্য সরোদ' এর জন্য ‘বিশ্বসেরা সঙ্গীত’ বিভাগে ২০০৬ সালে গ্র্যামি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন তিনি। এছাড়াও তিনি সংগীত নাটক একাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন।
একাধারে অভিনয়শিল্পী, সুরকার এবং পরিচালক হওয়ার পাশাপাশি, তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব আর্টস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সান্তাক্রুজের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিষয়ে শিক্ষকতা করতেন।
আশীষ খাঁর পূর্বপুরুষের ভিটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের শিবপুর গ্রামে।
মেহজাবীন রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে আমি জেঠু বলে ডাকতাম, তিনি আমার গুরু। ওস্তাদ আশীষ খাঁ জীবনের শেষ সুরটা বাজিয়ে চলে গেলেন।”
আশীষ খাঁ একাধিকবার বাংলাদেশের মঞ্চে সঙ্গীতের সুর ছড়িয়ে মুগ্ধ করেছেন।
তিনি বাংলাদেশের নাগরিকত্বও নিতে চেয়েছিলেন বলে জানান মেহজাবীন।
তিনি বলেন, “জেঠু তো আমেরিকায় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের শিক্ষক ছিলেন, সেখানেই বসবাস করতেন। শেষ জীবনে নিজের পূর্বপুরুষের ভূমি বাংলাদেশে আসার আগ্রহ জানিয়েছিলেন। বাংলাদেশে এসে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের একটা স্কুল করার স্বপ্ন ছিল উনার। পরে কোভিড শুরু হওয়ায় সেই পরিকল্পনা থেমে যায়।”
১৯৬৭ সালে তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে ইন্দো-আমেরিকান সংগীত গোষ্ঠী ‘শান্তি’ গঠন করেন ওস্তাদ আশীষ খাঁ। জন বারহাম, এরিক ক্ল্যাপটন, জর্জ হ্যারিসনের মতো প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞদের সঙ্গে শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশন করেছেন তিনি।
২০০৭ সালে তিনি ভারতের প্রথম শাস্ত্রীয় সংগীতজ্ঞ হিসেবে রয়্যাল এশিয়াটিক সোসাইটি অব গ্রেট ব্রিটেন অ্যান্ড আয়ারল্যান্ডের ফেলো নির্বাচিত হন।
মাত্র ১২ বছর বয়সে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে শো করেছেন তিনি। এছাড়া দাদা ও বাবার সঙ্গে কলকাতায় ‘তানসেন মিউজিক কনফারেন্স’ এ পারফর্ম করেছেন আশীষ।